AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Old age home: এতদিন ভুলেছিল মা-বাবাকে, SIR শুরু হতেই মনে পড়ল নাড়ির টান, ফর্ম হাতে পেতেই বৃদ্ধাশ্রমে ভিড় ছেলে মেয়েদের

পাঁচ বছর ধরে এই আশ্রমে কর্মরত রুমা দেবনাথও একই চিত্র দেখছেন। তিনি বলেন, "আগে অনেকেই নিজের বাবা-মায়ের খোঁজ নিতেন না। কিন্তু এখন অনেকে এসে জানতে চাইছেন, মা-বাবা কেমন আছেন, কিছু লাগবে কি না।"

Old age home: এতদিন ভুলেছিল মা-বাবাকে, SIR শুরু হতেই মনে পড়ল নাড়ির টান, ফর্ম হাতে পেতেই বৃদ্ধাশ্রমে ভিড় ছেলে মেয়েদের
বৃদ্ধাশ্রমে বাড়ছে আনাগোনাImage Credit: Tv9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Nov 13, 2025 | 10:57 AM
Share

নদিয়া: একসময় যাঁকে বুকে-পিঠে করে মানুষ করেছিলেন, তাঁরাই বড় হয়ে বাড়ি থেকে বিদায় করেছিল মা-বাবাকে। কেউ ইচ্ছা করে দূরে ঠেলে দিয়েছেন, কেউ আবার হয়ত বাধ্য হয়েই মা-বাবাকে পাঠিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু একেই বোধহয় বলে ভাগ্য! এসআইআর নিয়ে যখন কাটা-ছেড়ার অন্ত নেই, রাজনৈতিক দলগুলি যখন ভাবছে কীভাবে ভোটের ফায়দা লুটবে, সেই সময় হয়ত বৃদ্ধ মা বাবাদের ঘুরছে ভাগ্য়ের চাকা। কারণ, SIR চালু হতেই বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে মা-বাবাদের খোঁজ নেওয়া বাড়ছে। তবে, ভালবাসার কারণে সবটা নয়, নিজেদের প্রয়োজনেই খোঁজ নিচ্ছে মা-বাবার।

জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে দেখা গিয়েছে এক নতুন দৃশ্য। বহু বছর যাঁদের খবর কেউ নেয়নি,সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হঠাৎ ফোন করছে সন্তানরা। কেউ আসছে দেখা করতে,কেউ বা আসছেন কাগজ পত্র নিতে। তেমনই রানাঘাট পুরাতন চাপড়ায় জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রম। সেখানকার সম্পাদক গৌরহরি সরকার জানালেন, মা-বাবাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যাঁরা নিজেদের দায় সেরেছিলেন, এখন তাঁদেরই আনাগোনা বেড়েছে। এত বছরে যাঁদের মুখ টুকুও দেখা যায়নি এই বৃদ্ধাশ্রমে, তাঁরাই এখন আসছেন। তিনি বলেন, “আমাদের আশ্রমে প্রায় চুয়াল্লিশজন মা-বাবা রয়েছেন। নদিয়া,বর্ধমান এমনকী কলকাতা থেকেও অনেকে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু SIR চালু হওয়ার পর থেকেই হঠাৎ করেই সন্তানদের আগ্রহ বেড়েছে। আগে যাদের দেখা মিলত না, এখন তারাই প্রায় প্রতিদিন ফোন করছেন।”

পাঁচ বছর ধরে এই আশ্রমে কর্মরত রুমা দেবনাথও একই চিত্র দেখছেন। তিনি বলেন, “আগে অনেকেই নিজের বাবা-মায়ের খোঁজ নিতেন না। কিন্তু এখন অনেকে এসে জানতে চাইছেন, মা-বাবা কেমন আছেন, কিছু লাগবে কি না।”

তবে এই যত্নের আড়ালে যে স্বার্থের গন্ধ লুকিয়ে আছে, তা কেউই অস্বীকার করছেন না। আর তা বুঝতেও কারও বাকি নেই। ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম রাখা এখন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে, কারণ সেই নামেই জড়িয়ে রয়েছে সন্তানদের ভবিষ্যৎ বা রাজনৈতিক স্বার্থ।

আর যাঁদের নিয়ে এই প্রতিবেদন, সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা মা-বাবা? তাঁরা কী বলছেন? বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের মনে মিশ্র অনুভূতি। কেউ আনন্দে চোখের জল ফেলছেন সন্তানদের ফিরে পেয়ে, কেউ আবার চুপচাপ তাকিয়ে রয়েছেন দূরে। তবুও তাদের মুখে একটাই কথা, ‘ছেলেমেয়েরা যেন ভাল থাকে…।’ কাটোয়ায় সুভাষ সাহা বললেন, “ছেলের বিয়ে পর বৌ-এর সঙ্গে ভাল বনিবনা হচ্ছিল না। তাই চলে এসেছিলাম। মাঝে মধ্যে ছেলে-মেয়েরা খোঁজ নেয়।” রাজপুর-সোনারপুরের বাসিন্দা সুশান্ত হালদার আবার বললেন, “বাড়িতে জায়গা থাকার পরও দাদা-বৌদি মারা যাওয়ার পর ভাইপো রাখল না। যেন বোঝা হয়ে গেলাম আমি। এখন যোগাযোগ রাখে না। পাশের বাড়ির লোকজন যোগাযোগ করেন। কিন্তু নিজের লোক করে না।”

আর এখন এই দৃশ্য যেন সমাজকে নতুন করে প্রশ্ন ছুড়ছে, তবে কি ভালবাসা কি শুধুই প্রয়োজনে জাগে? নাকি SIR-এর মতো এক নীতিই আমাদের মনুষ্যত্বকে ফিরিয়ে আনবে?