AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Barasat: সংখ্যাটা ৫০০! বিয়ের পরই পালায় বউ! বারাসতেই এই এলাকা! কেন জানেন?

Barasat: পুলিসের একটি বিশেষ সূত্রে খবর, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অসংখ্য নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়েছে এই পুলিস জেলার বিভিন্ন থানায়। গত পাঁচমাসে মোট ৫৩৬ জন যুবতী নিখোঁজ হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৫০০ জনই গৃহবধূ! নিখোঁজের তালিকার বাকিরা অবিবাহিতা। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন প্রশাসনও।

Barasat: সংখ্যাটা ৫০০!  বিয়ের পরই পালায় বউ! বারাসতেই এই এলাকা! কেন জানেন?
কী বলছেন বারাসতের বাসিন্দারা? Image Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2025 | 4:45 PM
Share

উত্তর ২৪ পরগনা: পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ মাসে এই গ্রাম থেকে পাঁচশো জন গৃহবধূ ঘর থেকে পালিয়েছেন। কারণ তাঁরা প্রত্যেকেই জড়িয়েছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। প্রেমের টানে স্বামী, সংসার টেনে ঘর ছেড়েছেন তাঁরা। বাসা বেঁধেছেন মনের মানুষের সঙ্গে। আর স্বামীরা? তাঁরা স্ত্রীর খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন থানায় থানায়। মিসিং ডায়েরি হচ্ছে, খোঁজ চলছে-সবই হচ্ছে, কিন্তু ঘরে আর ফেরেননি স্ত্রী!  ‘নিখোঁজ ঘরণীরা’ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় পুলিস জোরও খাটাতে পারছে না। উত্তর ২৪ পরগনার কেবল বারাসত পুলিশ জেলাতেই এরকম কেসের সংখ্যা রীতিমতো চোখ কপালে তোলার মতো। পাঁচ মাসে ঘর ছেড়েছেন পাঁচশো গৃহবধূ।

জানা যাচ্ছে, ওঁদের কারোর স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন ভিন রাজ্যে, কারোর স্বামী আবার ভোরে বের হন, ফেরেন মধ্য রাতে। সারাদিন ফাঁকা বাড়িতে স্ত্রী। হাতে মুঠো ফোন। সহজেই সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে পরপুরুষের সঙ্গে। ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। খুব সহজেই জড়িয়ে পড়ছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। কিন্তু কেবলই কি প্রেমের টান নাকি অন্য কোনও কারণেই ঘর ছাড়ছেন?

মনোবিদরা অবশ্য বলছেন, স্ত্রীর অন্য সম্পর্কে জড়ানোর পিছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ। কোথাও বনিবনা হচ্ছে না, নিত্য ঘরে অশান্তি, তাতে সামাজিক মাধ্যমে অন্য কোনও পুরুষ চারটি মধুর বাক্য শোনালে, রঙিন স্বপ্ন দেখালে, সহজেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন গ্রামের অত্যন্ত সাধারণ মহিলারা। কেউ আবার বাড়িতেই নিত্য শিকার হন গার্হস্থ্য হিংসার। সেখান থেকে পালানোর পথ খোঁজেন তাঁরা।

পুলিসের একটি বিশেষ সূত্রে খবর, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অসংখ্য নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়েছে এই পুলিস জেলার বিভিন্ন থানায়। গত পাঁচমাসে মোট ৫৩৬ জন যুবতী নিখোঁজ হয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৫০০ জনই গৃহবধূ! নিখোঁজের তালিকার বাকিরা অবিবাহিতা। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন প্রশাসনও।

এই পালানোর পিছনে দেখতে হবে ডোমিস্টিক ভায়োলেন্সের কোনও কেস রয়েছে কিনা। এমন কোনও সমস্যা ছিল কিনা, গৃহবধূ বাধ্য হয়ে পালালেন কিনা। স্বামী কিংবা পরিবারের লোকজন এমন অত্যাচার করেছেন, যে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। আর প্রেম ভালবাসা করে চলে গেলে, এটা তো আগেও হয়েছে। পাঁচ মাসে পাঁচশোটা- সংখ্যাটা খারাপ। কোথাও একটা দাম্পত্যে ফাঁক তৈরি হচ্ছে।

এপ্রসঙ্গে আইনজীবী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সমাজ একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলেছে। যাঁদের মানসিকতায় অস্থিরতার প্রকাশ ঘটছে, তাঁরা যেন সুস্থভাবে জীবনযাপন করেন।”

বারাসতের চেয়ারম্যান অশনী মুখোপাধ্যায় বলেন, “সামাজিক পরিকাঠামো নষ্ট হচ্ছে। যাঁদের পরিবারের হচ্ছে, তাঁদের সামাজিক সম্মানও নষ্ট হচ্ছে।”

এলাকার এক বাসিন্দা মালবিকা রায় বলেন, “কোনও একটা সমস্যা তো নিশ্চয়ই থাকবে, সেটা সামাজিক ইস্যুও হতে পারে। কারণ কোনও মহিলাই চায় না, সংসার শুরু করবে, তারপর সব ছেড়ে পালিয়ে যাবে। বাড়িতেও সমস্যা থাকতে পারে।”

এলাকার আরও এক বাসিন্দা অজয় বলেন, “আমরা উন্নতির দিকে এগোচ্ছে। বিদেশ কালচারও ঢুকে পড়ছে। সকলের স্বাধীনতা রয়েছে। কেউ তো কারোর কাছে বাঁধা থাকছে না। হাতে মোবাইল, সহজেই পরিচয় হচ্ছে, না পোশালে বেরিয়ে যাচ্ছে। এটা যার যার মানসিকতার ব্যাপার।”

যদিও থানা-পুলিস হওয়ার পর অনেক নিখোঁজ বধূ ও যুবতী বাড়ি ফিরেছেন। সংখ্যাটা সবমিলিয়ে প্রায় ২০০। আবার অনেকের খোঁজ মিলেছে, কিন্তু তাঁরা আর সংসারে ফিরতে চাননি।