বারাকপুর: লুঠে বাধা পেয়েই খুন। প্রাথমিক তদন্তে যেটা অনুমান করছিলেন তদন্তকারীরা, জেরায় তেমনটাই স্বীকার করল আততায়ী। ইছাপুরের ফাঁকা বাড়িতে একাকী বৃদ্ধার খুনের ঘটনায় রহস্যের কিনারা করল পুলিশ। রবিবার রাতে নোয়াপাড়া থানার ইছাপুর নতুন পাড়া এলাকার বাসিন্দা বছর সত্তরের বৃদ্ধা শিক্তা চট্টোপাধ্যায়কে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় প্রথম তিন জনকে আটক করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় অঞ্জন চৌধুরী নামে একজনকে। সেই জেরায় সবটা স্বীকার করে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, শিক্তার স্বামী জ্যোতির্ময় চট্টোপাধ্যায় ইছাপুর মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরিতে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর আট বছর ধরে বৃদ্ধা একাই ওই বাড়িতে থাকতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ রবিবার রাতে এক পড়শি মহিলার বাড়ির দরজা খোলা দেখেন। তখন তিনি বৃদ্ধাকে ডাকাডাকি করেন। প্রতিবেশীরা জানান, কলিং বেল টিপলেও বৃদ্ধার কোনও সাড়া মেলেনি। মোবাইলে ফোন করলেও ফোন বন্ধ ছিল। এরপর প্রতিবেশীরা বৃদ্ধার বাড়ির সামনে জড়ো হন। এরপর বিপদ আঁচ করে নোয়াপাড়া থানায় খবর দেন তাঁরাই। পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। বৃদ্ধার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। সোমবার বেলায় স্নিফার ডগ এনে তদন্ত করে পুলিশ। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ ইছাপুর লেলিননগরের বাসিন্দা বছর আটত্রিশের অঞ্জন চৌধুরী গ্রেফতার করেছে।
সোমবার রাতে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ লেনিননগরে তার বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, ৬ বছর আগে ট্রেনে একটি পা কাটা পড়ে অঞ্জনের। তারপর থেকে সে নকল পা নিয়ে হাঁটাচলা করে। শিক্তা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সে কিছু টাকা চেয়েছিল। টাকা না পাওয়াতেই খুন, জেরায় তেমনটাই জানিয়েছে অঞ্জন। জানা যাচ্ছে, অঞ্জন সেদিন কথা বলার ছুতোয় বাড়িতে ঢোকে। ফের টাকা চায়। টাকা না পাওয়ায় ব্লেড দিয়ে বৃদ্ধার গলায় আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিক্তা। তারপর সুযোগ বুঝে বেরিয়ে আসে অঞ্জন। পুলিশ জানাচ্ছে, এর পিছনে আর অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে।