উত্তর ২৪ পরগনা: ফের প্রকাশ্যে বিজেপির (BJP) গোষ্ঠীকোন্দল। ভাড়া না পেয়ে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি বিধায়ক ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। প্রসঙ্গত , বেশ কিছু সময় ধরে বেসুর বাজছিলেন এই বিধায়ক। এ বার সরাসরি দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝোলানোর ঘটনায় স্পষ্ট পদ্ম অন্দরে বিরোধের সুর।
সমস্যার সূত্রপাত শনিবার রাত থেকে। গতকাল, জেলা দলীয় কার্যালয়ের সম্পাদক সুবীর সেন দেখেন কার্যালয়েরে গেটে ঝুলছে তালা। তখন বিধায়কের কাছে চাবি আনতে যান। কিন্তু ভাড়া না দেওয়ায় চাবি দিতে অস্বীকার করেন অশোক, অভিযোগ এমনটাই। সুবীর সেনের কথায়, “আমাদের কার্যালয়ের চাবি বিধায়কের কাছে থাকে। আমরা কাল চাবি চাইতে গেলে তিনি সাফ মানা করেন। জানান, ভাড়া না দিলে চাবি মিলবে না। আমাদের নাকি ছয়মাসের ভাড়া বাকি পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা কোষাধ্যক্ষকে ফোন করি। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাইনি। ওদিকে বিধায়কও আর চাবি দেননি। রবিবার সকালেও এসে দেখছি একই অবস্থা।”
এখানেই না থেমে সুবীরবাবু আরও বলেন, “অশোকবাবুর হয়ত কোনও ক্ষোভ রয়েছে। যা তিনি বলতে পারছেন না। আমরা তো সকলে মিলে ওঁকে নির্বাচনে জিতিয়েছি। ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি। তাহলে কেন তিনি আমাদের সঙ্গে এমন কাজ করছেন আমাদের জানা নেই। হয়ত কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেটা তিনি আমাদের খোলাখুলি বলতে পারতেন।”
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খোদ বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। তিনি স্পষ্টই বলেন, “আমার কাছে কার্যালয়ের চাবিই নেই। তাহলে আমি কী করে চাবি আটকে রাখব। যাঁরা এ ধরনের কথা রটাচ্ছেন তাঁরা কেন এমন রটাচ্ছেন তা জানা নেই। যাঁরা এমন কথা বলছেন মিথ্যা রটাচ্ছেন।”
যদিও, পদ্ম শিবিরের এই ‘অন্তর্বিরোধ’ নজর এড়ায়নি শাসক শিবিরের। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ দাস জানিয়েছেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই ঘটনা। বিধায়কের সঙ্গে মতপাথর্ক্য় হওয়াতেই এই বিরোধ। এর নেপথ্যে অন্য় কোনও কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের পরেই বনগাঁর রাজনৈতিক পরিবেশে আমূল পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। একের পর বেসুর বাজতে শুরু করছেন একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাস। অধুনা তৃণমূল নেতা মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অশোক কীর্তনিয়াও সেই পথেই বা পা বাড়াতে পারেন বলে জল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। নির্বাচনের পর একের পর এক দলীয় বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি, দলের কাজে না থাকা এমন নানা কিছু দেখা গিয়েছিল। এ বার সরাসরি দলীয় কার্যালয়ে তালা দেওয়ায় যে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন: Maldah: ‘সমাজবিরোধীরাই তৃণমূলে জায়গা নিচ্ছে’, জালনোট পাচারকাণ্ডে ‘দলবিরুদ্ধ’ স্বর কৃষেন্দুর!