শিশু শ্রম বিরোধী দিবস: বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে অঙ্গীকারবদ্ধ ইটভাটার শ্রমিকরা
পেটের দায়ে ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় এসে রুটিরুজি জোগাড় করেন এঁরা। আর সেই ভাটার মধ্যেই ছোট্ট ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে কোনওরকম মাথা গুঁজে এঁদের বসবাস। থাকে সন্তান-সন্ততিরাও। এই বাচ্চাদেরই ভবিষ্যৎ একপ্রকার বিপন্ন।
বসিরহাট: বসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কয়েক হাজার ইটভাটা। ন্যাজট, মালঞ্চ, বরুণহাট, বদরতলা ও হাসনাবাদের ইছামতি, বিদ্যাধরী, ডাঁসা ও গৌড়েশ্বর সহ একাধিক নদীর তীরে গজিয়ে উঠেছে এই ইটভাটাগুলি। আর সেখানে কাজ করেন যে শ্রমিকরা তাঁরা রাজ্যের তো বটেই, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও ঝড়খান্ড থেকেও আসেন। এঁরা মূলতঃ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ।
পেটের দায়ে ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় এসে রুটিরুজি জোগাড় করেন এঁরা। আর সেই ভাটার মধ্যেই ছোট্ট ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে কোনওরকম মাথা গুঁজে এঁদের বসবাস। থাকে সন্তান-সন্ততিরাও। এই বাচ্চাদেরই ভবিষ্যৎ একপ্রকার বিপন্ন। কারণটা অর্থাভাব। সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত শিক্ষার অভাব। দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থায় এই শ্রমিকরা বছরের পর বছর এই ভাটাগুলিতে কাজ করে চলেছেন। কিন্তু তাঁদের ইচ্ছা সন্তানরা পড়াশোনা করে শিক্ষিত হোক। তারা সমাজে মুখ তুলে দাঁড়াক। শনিবার, ১২ই জুন বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবস। তাই এই সমস্ত বাচ্চারা যাতে আগামী দিনে ভাটায় না কাজ করে, যাতে ভালো চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সেই দিকেই তাকিয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ এই অভিভাবকরা।
কিন্তু উপায় কী? অর্থাভাব তো রয়েছেই পাশাপাশি আছে পর্যাপ্ত স্কুলের অভাব। বেশিরভাগ ভাটার শ্রমিক পড়তেই জানেন না। তাঁরা হিন্দি, সাঁওতালি বা ভোজপুরীতে কথা বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই সরকারি বাংলা মাধ্যমে পড়ানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন ভাটায় ঢুকলে দেখা যায় এরা স্কুলে না গিয়ে পড়াশোনা না করে ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: মুচলেকা পড়ে তৃণমূলে যোগদান বিজেপি কর্মীর, তবেই মিলল দোকান খোলার অনুমতি!
প্রশাসনের তৎপরতায় এই বাচ্চারা হয়ত আর আগের মত ভাটার কাজে যুক্ত হয় না। কিন্তু ১৪ বছর বয়স পেরোলেই বেশিরভাগ ছেলে এবং মেয়েরা বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়। যা তাদের আগামীর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তোলে। যদিও বর্তমান দিনে এই বাচ্চাদের অভিভাবকরা চাইছেন যাতে আগামী দিনে যারা সঠিকভাবে পড়াশোনা করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। চাইছেন সরকার হোক বা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কেউ পদক্ষেপ করুক।