গলার নলি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে মাংসপিণ্ড! ফ্ল্যাটে প্রাক্তন পুলিশ কর্তার ছেলের শিউরে ওঠার মতো কীর্তি

Khardha: খড়দহ আদর্শপল্লির প্রতিমা আবাসনে থাকতেন এক প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের ছেলে শ্রেয়ান। সঙ্গে থাকতেন তাঁর দাদা।

গলার নলি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে মাংসপিণ্ড! ফ্ল্যাটে প্রাক্তন পুলিশ কর্তার ছেলের শিউরে ওঠার মতো কীর্তি
নিজস্ব চিত্র (বাঁ দিকে- নিহত শ্রেয়ান)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 12:48 PM

খড়দহ: ঘরের মেঝেতে পড়ে চাপ চাপ রক্ত। পুরো মেঝে মাখামাখি। তারই মধ্যে পড়ে রয়েছে রক্ত মাখা শরীরটা। হাতের শিরা কাটা, মাংস খুবলে বেরিয়ে এসেছে। গলার নলিও গভীরভা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছে। ক্ষত এতটাই গভীর, সেখান থেকেও মাংসপিণ্ড বেরিয়ে এসেছে। পেটে পীঠেও গভীর ক্ষত। পাশে পড়ে রয়েছে রক্তমাখা চাকুটা। খড়দার আদর্শপল্লিতে প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের ছেলের মর্মান্তিক পরিণতি দেখলে রীতিমতো শিউরে উঠতে হয়। মৃতের শ্রেয়ান সেন (২২)।

খড়দহ আদর্শপল্লির প্রতিমা আবাসনে থাকতেন এক প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের ছেলে শ্রেয়ান। সঙ্গে থাকতেন তাঁর দাদা। কিছুদিন আগে তাঁদের মাসি ও আরেক আত্মীয় এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। শ্রেয়ানের বাবা-মা অন্যত্র থাকেন। রবিবার সকালে আচমকাই শ্রেয়ানের দাদার চিত্কার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তা শুনেই ঘরে গিয়ে তাঁরা ওই দৃশ্য দেখতে পান।

শ্রেয়ানের দাদার বয়ান অনুযায়ী, রোজকার মতই তিনি নাকি সকালে ভাইয়ের ঘরে ঢুকেছিলেন ডাকতে। কিন্ত দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। একটু জোরে ধাক্কা দিতেই খুলে যায়। তারপরই তিনি ওই অবস্থায় ভাইকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। শনিবার রাতেও নাকি একসঙ্গে তাঁরা খাওয়াদাওয়া করেছেন। তারপর যে যার ঘরে চলে যান।

দৃশ্য দেখে রীতিমতো শিউরে ওঠেন প্রতিবেশীরা। এতটা নৃশংসতা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত পুলিশ কর্তারাও। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে খড়দহ থানার পুলিশ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এমএ পাশ করার পরও চাকরি পাননি শ্রেয়ান। চাকরির জন্য পড়াশোনা করছিলেন। তবে বেশ কিছু দিন ধরেই নাকি মানসিক সমস্যা তৈরি হয়েছিল ওঁর। নানা কারণেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অন্তত পরিবারের তরফ থেকে তেমনটাই দাবি করা হয়েছে।

শ্রেয়ানের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। কিন্তু শ্রেয়ানের এই মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, শ্রেয়ানের গলায় নলি কাটা, হাতের শিরা কাটা এবং বুকে ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, এক ব্যক্তি একইসঙ্গে সাধারণত হাতের শিরা, গলার নলি কাটতে পারে না। যে কোনও একটি কেটেই নিজেকে আহত করেন। এবং তাতে যে পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয়, তাতে এমনিতেই কাহিল হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আবার তারই পক্ষে গায়ে-হাত পায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করা সম্ভব নয়।

ঠিক এই জায়গাতেই শ্রেয়ানের মৃত্য নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। তবে কি তাঁকে কেউ খুন করেছে পরিকল্পিতভাবে? তারপর সেটিকে আত্মহত্যার নাম দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবেশীরাও এই ব্যাপারের সন্ধিহান। এক প্রতিবেশীর কথায়, “শুনছিলাম নাকি মানসিক অবসাদে ভুগছে। দেখে তো মনে হচ্ছে আত্মহত্যাই। ক্ষতচিহ্ন দেখে পুলিশ গোটা বিষয়টা ভালোভাবে বুঝবে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”

এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় শ্রেয়ানের পরিবারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুলিশ বলেছে, তদন্ত চলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। ক্ষতচিহ্নগুলো সন্দেহজনক। এক জন প্রাক্তন পুলিশ কর্তার ছেলের রহস্যমৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবে একাধিক প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। আরও পড়ুন: স্রেফ মনে এসেছিল একটাই কারণ, খুঁটিতে বেঁধে শরীর চিরে দিলেন ওঁরা! ছুটির সকালের নৃশংসতা