ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে ধোঁয়া, দাউ দাউ করে জ্বলছে বিছানা-গদি, মাঝে শুয়ে বাড়ির বড় ছেলে!
দোতলায় ছুটে যান তাঁরা। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন খাটের ওপর পড়ে রয়েছেন সুমন। আগুন ধরেছে সুমনের শরীরেও।
উত্তর ২৪ পরগনা: ঘরের দরজা জানলা বন্ধ। ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে কুণ্ডলীকৃত ধোঁয়া। ধাক্কা দিয়েও সম্ভব হয়নি দরজা খোলা। শেষে ভেঙে ফেলা হয় দরজা। ভিতরে তখন দাউ দাউ করে জ্বলছে বিছানার তোষক, গদি। তার ওপর পড়ে রয়েছেন বাড়ির ছেলে। চতুর্দিকে কুণ্ডলীকৃত আগুন। দৃশ্য থেকে আঁতকে ওঠেন বাবা-ছোটো ভাই। স্তব্ধ হয়ে যান তাঁরা। উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরাই। অশোকনগরে (Ashoknagar) হরিপুরের অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিসের হাতে উঠে এসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের সুমন সিংহ বেসরকারি কোম্পানিতে সেলসম্যানের কাজ করতেন। বছরখানেক ধরে বেকার ছিলেন সুমন। মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত বারোটা নাগাদ হঠাৎ দোতলার ঘর থেকে আওয়াজ শুনতে পান ছোট ভাই এবং বাবা। দোতলায় ছুটে যান তাঁরা। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন খাটের ওপর পড়ে রয়েছেন সুমন। আগুন ধরেছে সুমনের শরীরেও।
চিৎকার ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। আগুন নিভিয়ে সুমনকে পাঠানো হয় হাসপাতালে। পরিবারের প্রাথমিক অনুমান মত্ত অবস্থায় সিগারেট টানতে টানতেই ঘুমিয়ে পড়েন সুমন। সিগারেট থেকেই আগুন ধরে যায় বিছানায়। রাতেই হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা সুমনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় পুলিশ আরও একটি বিষয় জানতে পেরেছে। পাশের বাড়ির এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সুমনের। তা নিয়ে দু’পরিবারের মধ্যে বচসা ছিল। বৃহস্পতিবার দুই পরিবারের অশান্তি চরম ওঠে। তবে ওই মহিলার দাবি, “আমার সঙ্গে সুমনের ভাল সম্পর্ক ছিল। তার থেকে বেশি কিছু নয়। মাঝেমধ্যে সুমন মত্ত অবস্থায় আমার বাড়িতে এসে অশান্তি করত। তা নিয়েই ঝামেলা হয়।”
আরও পড়ুন: জোড়াবাগান কাণ্ড: দারোয়ানের মোবাইলে অসংখ্য পর্ন ভিডিয়ো, শিশুর পাকস্থলীতে মিলল চিপস, বিরিয়ানি
অশান্তির জেরেই সুমন আত্মহত্যা করতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে অশোকনগর থানার পুলিশ।