উত্তর ২৪ পরগনা: পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শম্ভুনাথ পণ্ডিত নামে ধৃত ওই যুবকই মূল অভিযুক্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অন্যদিকে তাঁকে জেরা করে আরও একজনকে আটকও করা হয়েছে। দফায় দফায় জেরা-জিজ্ঞাসাবাদের চক্রে পুলিশ মনে করছে, রীতিমত পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে অনুপমকে। তবে ইতিমধ্যেই তিনদিক খোলা রেখে শুরু হয়েছে তদন্ত। এক, রাজনৈতিক কোনও কোন্দল রয়েছে কি না, দুই, কারও ব্যক্তিগত আক্রোশ রয়েছে কি না, তিন, প্রোমোটিং নিয়ে কোনও বিবাদ রয়েছে কি না।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিটি রোডের ধারে যে হোগলা বনে মূল অভিযুক্ত লুকিয়ে ছিলেন, সেই হোগলা বনের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু প্রমোটারের সঙ্গে অনুপমের টানাপোড়েন চলছিল। প্রায় ১৫ বিঘা জায়গা রয়েছে এখানে। যা নিয়ে ঝামেলা বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সোমবার এই জায়গা নিয়ে বৈঠকও করার কথা ছিল। কারণ এই জায়গাটি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম দত্ত।
প্রসঙ্গত, এই হোগলা বনেই অনুপমকে গুলি করার পর মূল অভিযুক্ত লুকিয়ে ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, অনুপম এখানে প্রোমোটিংয়ের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, যে জায়গা এখানে রয়েছে তার বাজার দর কম করে ১০০ কোটি টাকা হবে। অভিযোগ, বহুদিন ধরে এই জায়গায় প্রোমোটাররা বহুতল তোলার চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। এই টানাপোড়েন বেশ কয়েক বছরের বলেই জানা গিয়েছে। এই জায়গার প্রোমোটিংয়ে অনুপম বাধা দিয়েছিল বলেও সূত্রের খবর। সে কারণেই কি পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জের নিশানায় পড়তে হল তাঁকে?
শিরোনামে উঠে আসা হোগলা বন কমলের বাগান নামে পরিচিত। যে হোগলা বন ইতিমধ্যে শিরোনামে উঠে এসেছে, সেখান থেকে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে মোবাইল ফোন। যদিও তার ভিতর কোনও সিম কার্ড ছিল না। ফোনটি ধৃতের বলেই মনে করা হচ্ছে। উদ্ধার হয়েছে ট্রেনের টিকিটও। মেমারি থেকে শ্যাওড়াফুলির রিটার্ন টিকিট ছিল। রবিবার দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে কাটা হয় সেই টিকিটটি। এমনও হতে পারে শ্যাওড়াফুলি অবধি ট্রেনে আসার পর অভিযুক্ত গঙ্গা পার করে শ্যামনগরে আসেন। আবার এমনও হতে পারে সড়কপথে পানিহাটিতে আসেন তিনি। যদিও এই সবই এখন তদন্তসাপেক্ষ। ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটি ফরেনসিক তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় জানা গিয়েছে ধৃত শম্ভুনাথ পণ্ডিতকে ভাড়াটে খুনি হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা।