ঘরে ফিরলেও এক কোণেই জিতেন্দ্র! ঠাঁই হল না জেলা কমিটির তালিকাতেও

জিতেন্দ্র তেওয়ারি অবশ্য দাবি করছেন, তিনি নিজে ইস্তাফা দিয়ে ওই পদ ছেড়েছেন। দলে ফিরে আসার পর ওই পদ ফিরে পেতে তিনি আবেদন করেননি।

ঘরে ফিরলেও এক কোণেই জিতেন্দ্র!  ঠাঁই হল না জেলা কমিটির তালিকাতেও
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 17, 2021 | 3:29 PM

আসানসোল: ঘর ওয়াপসি হয়েছে বটে, তবে দলে তাঁর ডানা ছাঁটা চলছেই। পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি থেকে বাদ গেল জিতেন্দ্র তিওয়ারির নাম। নতুন জেলা সভাপতি হলে দুর্গাপুরের অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।

প্রথমে পুরপ্রশাসকের পদ তারপরে জেলা সভাপতির পদ হাতছাড়া হল জিতেন্দ্র তেওয়ারির। এখন তিনি শুধুমাত্র পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক হয়েই থেকে গেলেন। তবে কী দলের মধ্যে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন জিতেন্দ্র? জিতেন্দ্র তেওয়ারি অবশ্য দাবি করছেন, তিনি নিজে ইস্তাফা দিয়ে ওই পদ ছেড়েছেন। দলে ফিরে আসার পর ওই পদ ফিরে পেতে তিনি আবেদন করেননি। রবিবার সংবাদমাধ্যম মারফত ও সামাজিক মাধ্যমে অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।

ঠিক একমাস আগে গত ১৬ ডিসেম্বর দলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে পশ্চিম বর্ধমান তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তারপর চলে অনেক ‘নাটক’। নেতৃত্ব তাঁকে কলকাতায় ডাকেন। কিন্তু তিনি যেতে চাননি। দেখা করতে চেয়েছিলেন খোদ নেত্রীর সঙ্গেই। এরপর দল ছাড়ার কথাও জানিয়ে দেন জিতেন্দ্র। তাঁর বিজেপি-যোগ আরও গাঢ় হয়।

তবে বিজেপিরই একাংশের বিরোধিতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। এরপর ফের সুর বদল, তার ঘর ওয়াপসি। ঠিক একমাস পরে জেলা সভাপতির পদে বসানো হলো দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। এর আগে অপূর্ববাবু দুর্গাপুর পুরনিগমের মেয়র পদে ছিলেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্গাপুরের বিধায়কও ছিলেন। এবার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের সংগঠন ধরে রাখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উপরেই আস্থা রাখছেন বলে মনে করছেন ঘনিষ্ঠরা।

অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বর্তমানে দুর্গাপুর পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র পদে আছেন। এছাড়াও একইসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি পুর্নগঠন করা হয়েছে। জেলার দলের কো-অর্ডিনেটরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এরআগে জেলায় দুজন কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে শ্রমিক সংগঠনের নেতা হরেরাম সিংকে।

আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ বিধান সভার কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন ভি শিবদাসন ওরফে দাসু। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে কুলটি ও বারাবনি বিধানসভার জেলা কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে। একইভাবে জেলার দুই মুখপাত্র হয়েছেন বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায় ও সদ্য আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ড থেকে বাদ পড়া অশোক রুদ্র। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও অশোক রুদ্র আগে থেকেই জেলার মুখপাত্র আছেন।

আরও পড়ুন: ‘পুরস্কৃত’ হলেন শতাব্দী, তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে পেলেন গুরুত্বপূর্ণ পদ

তবে, জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে দলের জেলার কোন পদে রাখা হয়নি। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানে দলের জেলা সভাপতি পদের পাশাপাশি আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ একইসঙ্গে ছেড়েছিলেন। তবে, জিতেন্দ্র তিওয়ারির সাফাই, “আমাকে তো পদ থেকে সরানো হয়নি। আমি নিজেই জেলা সভাপতি ও আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ ছেড়েছিলাম। জেলা কমিটিতে না থাকলেও দলে তো আছি। দলের কাজ করছি। দলের বিধায়কও তো আছি। এই কমিটির উপর আমার পুরো আস্থা আছে। আমি তাদেরকে সবরকম সহযোগিতা করব।” তবে রাজনীতির কুশীলবরা বলছেন, জিতেন্দ্র দুকুলই গেল!