Bhoot Chaturdashi 2024: ভোগ নিবেদনের পর গাছ থেকে নেমে আসে শিবানী-শঙ্করীরা
Bhoot chaturdashi 2024: আসানসোলের মহিশীলা ১ নম্বর কলোনীতে পিয়ালবেড়া শ্মশানের বটগাছে নাকি ভূতদের বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন বামাক্ষ্যাপার অন্যতম প্রধান শিষ্য বনমালী ভট্টাচার্য। প্রায় সত্তর বছর আগেকার এই ঘটনা। বনমালীবাবু আজ আর জীবিত নেই।
আসানসোল: জানেন ভূতচতুর্দশীতে ভূতেদের ভোগ দেওয়া হয় আসানসোলে? একদিনের জন্য সাময়িকভাবে তেনাদের দেওয়া হয় মুক্তি। আর তারপর কালী পুজোর রাতে ফের মন্ত্রবলে বেঁধে ফেলা হয় তাদের। এমনই বিশ্বাস মহিশীলা কলোনীর বাসিন্দাদের। এভাবেই ভূতচতুর্দশীর রাত পালন হয় আসানসোলে। এই পরম্পরায় পুজো হয়ে আসছে বিগত ৭০ বছর ধরে ।
আসানসোলের মহিশীলা ১ নম্বর কলোনীতে পিয়ালবেড়া শ্মশানের বটগাছে নাকি ভূতদের বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন বামাক্ষ্যাপার অন্যতম প্রধান শিষ্য বনমালী ভট্টাচার্য। প্রায় সত্তর বছর আগেকার এই ঘটনা। বনমালীবাবু আজ আর জীবিত নেই। কিন্তু গাছে নাকি রয়ে গিয়েছে ভূতেদের দল। ভূত চতুর্দশীর রাতে তাদের কিছু সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। বলা চলে বাঁধন ছাড়া করা হয়। আর কালী পুজোর রাতে ফের বন্দি করা হয় অপদেবতাদের।
বহুবছর আগে আসানসোলের রায় পরিবারের জমিদার জমি দান করেছিলেন তান্ত্রিক বনমালী ভট্টাচার্যকে। নদিয়ার নিবাসী বনমালী ভট্টাচার্য বামাক্ষ্যাপার শিষ্যত্ব নিয়েছিলেন মাত্র সাত বছর বয়সে। সেই তান্ত্রিক বনমালী ভট্টাচার্যকে আশ্রম করে সাধনা করার জন্য মহিশীলার পিয়ালবেড়া শ্মশানে জমি দান করেছিলেন আসানসোল গ্রামের রায় পরিবার। তখন পিয়ালবেড়া শ্মশান ছিল জঙ্গলে ভরা নির্জন এক স্থান। ভূতদের খুব উপদ্রব ছিল তখন। রাতে কারোর মৃত্যু হলে ভয়ে শ্মশানে নিয়ে যেতে পারতেন না বাসিন্দারা। অপেক্ষা করতে হত সকালের জন্য। সেই নির্জন স্থানে সাধনা শুরু করেন বনমালীবাবু।
শুধু তাই নয়, এলাকায় যাতে অনিষ্ট করতে না পারে তাই সমস্ত ভূতেদের একটি গাছে তিনি বেঁধে রেখে দিয়েছিলেন। সময় বদলেছে। পিয়ালবেড়া থাকলেও, আর শ্মশান নেই। সেই আশ্রমের মন্দির রয়ে গিয়েছে। আজও আছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। বনমালিবাবুল মারা গিয়েছেন বহু বছর হল। তাঁর ছেলে নাতিরা দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তিনি মারা গিয়েছেন এক বছর আগে। তাঁর ভাই পিকলু ভট্টাচার্য্য বলেন, “কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন ভূত চতুর্দশীতে সেখানে কালীপুজো করা হয়। মায়ের বীজমন্ত্রের পুজো হয়। শিবাভোগ ও ভৈরব ভোগ দেওয়া হয় পুজোর পরে। সেই ভোগ থাকে মদ ও মাংস। গাছের দুই পিশাচ শিবানী ও শঙ্করীকে ডাকা হয়। তারা ভোগ খেয়ে চলে যায়। কালী পুজোর পরে সেই ভূতেদের মন্ত্র বলে বেঁধে দেওয়া হয় গাছের সঙ্গে। ভূতচতুর্দশীতে এটাই নাকি পরম্পরা এখানকার।”