আসানসোল : আসানসোলে (Asansol) যে তৃণমূলের সবকিছু ঠিক নেই, তা ফের স্পষ্ট। এবার তা শোনা গেল খোদ মন্ত্রীর গলাতেই। আসানসোলের লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাকে জেতাতে সব বিবাদ ও নিজেদের মতবিরোধ ভুলে একজোট হয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। জেলা নেতৃত্বের তরফে বার্তা দেওয়া হয়, ঘরে কেউ বসে থাকবেন না। পাশাপাশি দলের কেউ বিরোধিতা করবেন না। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিক করা প্রার্থীকে জেতাতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেন তিনি। তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাকে জয়ী করার লক্ষ্যে রবিবার জেলার বিধায়ক ও জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
উল্লেখ্য, আসানসোলের রাজনীতির দিকে নজর রাখলে দেখা যায়, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল তার দাপট দেখাতে পারলেও, লোকসভা নির্বাচনে তা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়। আর এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই দায়ী করেন তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বকে। আসানসোলে তৃণমূলের বর্তমানে প্রধান মুখ মলয় ঘটক হলেও বিভিন্ন বিধানসভা ভিত্তিক পৃথক পৃথক গোষ্ঠী রয়েছে। সরাসরি কিছু না বললেও ভোটের আগে তাঁদের উদ্দেশেই বার্তা দিতে চাইলেন কি মন্ত্রী মলয় ঘটক? রবিবার আসানসোলের কল্যাণপুরের এক অনুষ্ঠান বাড়িতে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা কমিটির তরফে এক প্রস্তুতি বৈঠক হয়। লোকসভা কেন্দ্রের ৭ টি বিধানসভা এলাকার ৬ বিধায়ক সহ সবস্তরের জয়ী জনপ্রতিনিধি ও সব শাখা সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে ডাকা হয়েছিল এ দিনের বৈঠকে।
রবিবার এই প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায় বৈঠকে বলেন, “দলের ভাল সময়ে সঙ্গে থাকব। আর লড়াইয়ের সময় এসি ঘরে বসে থাকব, তা চলবে না। দলের নির্দেশ মতো সবাইকে একজোট হয়ে নেমে পড়তে হবে।” বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপির যিনি প্রার্থী হয়েছেন তিনি আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক। কিন্তু সেই বিধায়ককে তো গত এক বছরে এলাকার লোকেরা পায়নি। আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার ৯০ শতাংশ মানুষ তো আমার কাছে আসেন। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরে দলের কর্মীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখেছি, তাতে বুঝেছি, আমরা বিপুল ভোটে জিতব।”
বৈঠকে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “দলের প্রার্থী জিতবে। আমি ২০০ শতাংশ নিশ্চিত। সোমবার প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন। মঙ্গলবার থেকে সবাইকে নিজের নিজের এলাকায় প্রচারে নেমে পড়তে হবে। ছোট ছোট ব়্যালি করতে হবে এলাকায়। পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার দলের বিধায়কদের আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রচারে ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।” তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে বিরোধীরা “বহিরাগত” বলে কটাক্ষ করছে। এদিন বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তার জবাব দিয়ে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের লোক। তিনি তো বারাণসী থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন। তাহলে তিনিও তো বহিরাগত।”
আরও পড়ুন : School Uniform: এবার কি স্কুল ইউনিফর্মও নীল সাদা? সমগ্র শিক্ষা মিশনের নোটিস ঘিরে বাড়ছে জল্পনা