আসানসোল: “মিশর যাওয়া আর হল না। পরের বছরই আমাকে নিয়ে দাদার মিশর যাওয়ার কথা ছিল। পাসপোর্টও তৈরি হয়ে গেছে দুই ভাই বোনের।” শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বিছানায় শুয়ে বলছিলেন মৃত কিশোর ঘটকের বোন দীপান্বিতা ঘটক। যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন দাদার সঙ্গেই ছিলেন রানিগঞ্জের কিশোর ঘটকের বোন। বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে দাদার। কিন্তু কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছেন বোন। যখন রানিগঞ্জের (Raniganj) সিয়ারশোলে ঘটক বাড়িতে কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছল, তখন ঢুকরে ঢুকরে কাঁদছেন পঞ্চাশোর্ধ বোন দীপান্বিতা (Tourist Death In Uttarakhand)। আতঙ্কের প্রহর দুঃস্বপ্নের মতো ঘিরে রয়েছে তাঁকে।
রানিগঞ্জের সিটু নেতা অকৃতদার কিশোর ঘটক এবার উত্তরাখন্ডে গিয়েছিলেন। তাঁর বেরানোর সঙ্গী বোন দীপান্বিতা ঘটক। বোন ফিরলেন দাদার কফিনবন্দি দেহ নিয়ে। এসেই বিছানা নিয়েছেন তিনি। কিশোর বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পার্টির এরিয়া কমিটির সদস্য ও সিটুর সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য ছিলেন। এলাকায় একজন মিশুকে ও সমাজসেবী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। কাজ করতেন ইসিএলের কুনুস্তরিয়া এরিয়া অফিসে।
বাড়ি থেকে লাল পতাকায় গাড়ি নিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব দেহ নিয়ে কর্মস্থল হয়ে পার্টি অফিসে নিয়ে যান। শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরি, প্রাক্তন বিধায়ক, রনু দত্ত, জাহানারা খান সহ অন্যরা। রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খুব ঘুরতে ভালোবাসতেন কিশোর ঘটক। আগামী বছরই অবসর নেওয়ার কথা কিশোরবাবুর। বাড়ির সমস্ত ভাই বোন ভাইপো ভাইঝি সবাইকে নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর তাঁর পুরী নিয়ে যাওয়ার কথা। তিনি পরিবারের সবাইকে মেলালেন ঠিকই কিন্তু এভাবে তিনি মেলাবেন কেউ ভাবতে পারেননি।” কিশোর ঘটকের মৃত্যুতে শোকাহত শুধু পরিবার নয়, রানিগঞ্জের সিয়ারসোলের বাসিন্দারাও। ভালো মানুষ, কাজের মানুষ চলে গেল।
আরও পড়ুন: আবারও বাড়ল করোনায় মৃত্যু! ‘বিপদ কেন্দ্র’ সেই উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা
আরও পড়ুন: কার্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে খুন তৃণমূল নেতা! জনরোষে পুড়ল অভিযুক্তের বাড়ি