Suicide: ‘কাজ থেকে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল মা…’ ছোট্ট মেয়ের চোখের সামনেই আত্মাহত্যা মায়ের!
Mystery Death: "হঠাৎ দেখলাম মা ছুটে এসে ঘরের দরজা লাগিয়ে দিল। আমি চিৎকার করতে থাকি দরজা খোলার জন্য। কিন্তু মা খুলনা। প্রতিবেশীদের ডাকলাম কেউ আসেনি। তারপরে দেখছি মা গলার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে।''
পশ্চিম মেদিনীপুর: কী থেকে যে কী হয়ে গেল বুঝেই উঠতে পারছে না ছোট্ট তনুজা। একটু আগেই মাকে দেখেছিল। তারপর কী হয়েছিল? প্রতিবেশীদের প্রশ্নে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল সে। বছর-দশেকের তনুজা কাঁদতে কাঁদতে বলল “মাকে দেখলাম ছুটে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল। তার পর মাকে আমি অনেক ডাকলাম। কিন্তু মা দরজা খুলল না। বাড়ির পিছন দিকের জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি, মা বাড়ির সিলিং ফ্যানে গলায় কিছু একটা বেঁধে ঝুলছে… অনেক চিৎকার চেঁচামেচি করলাম, প্রতিবেশীদের ডাকলাম। কিন্তু কেউ এল না। অনেক পরে যখন সবাই এল তখন সব শেষ। আমার মা আর নেই, মরে গিয়েছে।” ছোট্ট মেয়েটির কান্নায় চোখ ভিজে গেল সবার। বৃহস্পতিবার এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানায়।
দিনের আলোয় জনবহুল এলাকায় বাড়িতে মেয়ের সামনেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন মা। ঘটনায় এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় ময়নাতদন্তে জন্য।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার কলোড়া গ্রাম বাসিন্দা মিঠু মণ্ডল গ্রামে বাইরে থেকে আসা রাজমিস্ত্রীদের জন্য রাঁধুনির কাজ করত। স্বামীও রাজকুমার মণ্ডলও পেশায় রাজমিস্ত্রী। স্বামী স্ত্রী এবং মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে সংসার। ছেলে বাইরে সোনার কাজ করে। প্রতিবেশীদের সূত্রে খবর, প্রায়শই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হত। এমনকি রাজকুমার তার মেয়েকেও প্রচুর মারধর করত বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এদিনের ঘটনায় কার্যত হতবাক সবাই।
এদিন সকালে রাজকুমার বাড়িতে ছিলেন না। আর রান্নার কাজে গিয়েছিলেন মিঠু। সেই সময় বাড়ির বারান্দায় খেলা করছিল মেয়ে তনুজা। সে বলে, “হঠাৎ দেখলাম মা ছুটে এসে ঘরের দরজা লাগিয়ে দিল। আমি চিৎকার করতে থাকি দরজা খোলার জন্য। কিন্তু মা খুলনা। প্রতিবেশীদের ডাকলাম কেউ আসেনি। তারপরে দেখছি মা গলার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে।” জানা যায়, ছোট্ট মেয়েটি নিজেই কোনও রকম দরজা খুলে বাড়িতে ঢোকে। দড়ি কেটে মাকে উদ্ধারও করে। কিন্তু তখন সব শেষ। মারা গিয়েছেন মা।
মেয়েটি বলে চলে, “প্রতিবেশীরা সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল, কিন্তু কেউ আসল না।” এদিকে খবর পেয়ে মৃত মিঠুর বাপের বাড়ি লোকজন পৌঁছয়। তাঁরা আঙুল তুলেছেন স্বামীর দিকে। দালি করেছেন দ্রুত মিঠুর স্বামী রাজকুমারকে গ্রেফতার করতে হবে। তাঁর অত্যাচারেই তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এর পর পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে আসলো প্রথমে কিছুটা হলেও বাধার মুখে পড়তে হয়। অবশেষ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পাঠিয়েছে পুলিশ । যদিও এই ঘটনায় পর থেকে রাজকুমার পলাতক বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Electrocution: ২ দিনে ১০, নাতিকে ফ্যানের হাওয়া খাওয়াতে উঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু দাদুর!