পশ্চিম মেদিনীপুর: শরীর নীলাভ হয়ে গিয়েছে। গায়ে হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। পরীক্ষাকেন্দ্রে ধীরে ধীরে হেলে পড়ছিল পরীক্ষার্থী। দেখেই সন্দেহ হয়েছিল শিক্ষকদের। তাঁরা প্রশ্ন করেন ছাত্রকে। আর তাতেই উঠে এল ভয়াবহ সত্য। প্রথমে ছাত্রের কথায় বিশ্বাসই করতে পারেননি শিক্ষকরা। চিকিৎসকরা যখন স্বীকৃতি দিলেন ছাত্রের বক্তব্যে, তখন স্তম্ভিত হয়ে গেলেন শিক্ষকরাই। সাপের কামড় খেয়েও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে এসেছিল ছাত্র। তাও আবার বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ! ছাত্রের সাহসিকতা আর অদম্য জেদ দেখে বাকরুদ্ধ শিক্ষকরা।
সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন। আর প্রথম দিনেই পরীক্ষা দিতে এসে কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়ে চন্দ্রকোণা পলাশচাবাড়ি নিগমানন্দ হাইস্কুলের ছাত্র গৌতম ঘোষ। শিক্ষকরা তাকে দেখতে পেয়েই বুঝতে পারেন। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো চিকিৎসাও চলে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই সামনে আসে আসল ঘটনা।
রবিবার রাতে ঘরে বসেই পড়ছিল গৌতম। সে সময় চৌকির নীচ থেকে একটি বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। সেই সময় তাকে প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার জন্য জেদ করছিল গৌতম। ওই অবস্থাতেই সকালে চলে আসে পরীক্ষাকেন্দ্রে। স্কুল ড্রেস পরে অ্যাডমিট কার্ড হাতে গৌতম পৌঁছয় সেন্টারে। পরীক্ষা শুরুও হয়ে গিয়েছিল। লিখতে শুরু করেছিল গৌতম। কিন্তু ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে শুরু করে সে।
চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে বিএমওএইচ স্বপননীল মিস্ত্রি বলেন, “বিষধর কোনও সাপই কামড়েছে ওকে। সেটা কোন সাপ স্পষ্ট নয়। চন্দ্রবোড়া সাপ হয়ে থাকতে পারে।” চন্দ্রকোনা জিরাট হাই স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে আর পরীক্ষা দিতে পারেনি গৌতম। কিন্তু পরীক্ষা ও দিয়েছে। হাসপাতালের বেডে বসেই। অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে সব কিছুই। বাহবা দিয়েছেন শিক্ষক-চিকিৎসকরাও।
আরও পড়ুন: Russia Ukraine Conflict: বাড়ি ফিরলেও এখনও মাথার ভিতর বোমারু বিমান ঘুরছে বালুরঘাটের জয়তীর