Paschim Medinipur: খেজুর গাছে ‘হাঁড়ি’ বাঁধতে উঠছেন শাহরুখ, সঙ্গী আমির-সলমন!
Jaggery: সাতসকালে চোখের নিমেষে খেজুর গাছে উঠে পড়লেন শাহরুখ খান। তাঁর সঙ্গেই আছেন আমির ও সালমান খান। চমকে উঠলেন?
পশ্চিম মেদিনীপুর: তখন পূবের আকাশে সবে লাল আভা। কুয়াশার চাদরে জড়িয়ে আছে এলাকা। বাতাসে শিরশিরানি ঠান্ডা। এমন সাতসকালে চোখের নিমেষে খেজুর গাছে উঠে পড়লেন শাহরুখ খান। তাঁর সঙ্গেই আছেন আমির ও সালমান খান। চমকে উঠলেন? ভাবলেন ঠিক পড়ছেন কিনা? হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। তবে এটা কোন সিনেমার শুটিং নয়, জীবনের চিত্রনাট্য। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই ‘খান ব্রাদার্স’- এর পরিচয় শুনেই এলাকায় উপচে পড়ছে ভিড়।
শাহরুখ খানের নাম শুনলেই ভক্তদের ভিড় জমে ওঠে। সেটাই স্বাভাবিক। তবে এই শাহরুখ খানের কোনও ভক্ত ছিল না। যদিও শুধু তিনি একা নন, শাহরুখের কাছেই যে থাকেন ভাই সলমন খান, আমির খান। থাকেন বাবা সাবরুদ্দিন খান। শীতের মরসুমে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত পুরো পরিবার। দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে এই কাজে হাত পাকিয়েছেন সাবরুদ্দিন খান। আর এখন তাঁর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করছেন বড় ছেলে শাহরুখ খান, মেজো ছেলে আমির ও সেজো ছেলে সলমন খান। এদিকে তাঁদের নাম শুনে কৌতূহলীরা ভিড় করে আসছেন দেখার জন্য।
পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি থানার বাঁশগোড়ার আলীআমদাচক গ্রামের বাসিন্দা সাবরুদ্দিন প্রতি বছর শীতের শুরুতে চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুর দাসপুর এলাকায়। দাসপুর পিরতলা এলাকায় ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের ধারে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে খেজুর গুড়ের ব্যবসা শুরু করেন। বছরের অন্য সময় অবশ্য দিন মজুরের কাজ করতে হয়। খেজুরের রস জোগাড় করতে হবে। তাই প্রতিদিন সকাল ও বিকালে ছুটে যান দাসপুরের বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছে। বাবাকে সঙ্গ দেন তিন ছেলে শাহরুখ, আমির ও সলমন।
প্রতিদিন দেড়শো থেকে দুশোটি খেজুর গাছে চড়ে রস সংগ্রহ করেন শাহরুখ, আমির ও সলমনরা। খেজুর গাছে হাঁড়ি ঝোলানোর পরিবর্তে তাঁরা ঝুলিয়ে দেন টিন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখন মাটির হাঁড়ির দাম বেশি, তায় টেকেও কম। তাই দামে কম মানে ভাল টিনের পাত্র। তারই ব্যবহার করছেন তাঁরা। প্রতিদিন দেড় থেকে দুশোটি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন অস্থায়ী আস্থানায়। তার পর খেজুর রস আগুনে ফুটিয়ে ফুটিয়ে তৈরি হয় খেজুর। সুস্বাদু খাঁটি খেজুর গুড় বিক্রি হয় ১০০ টাকা কেজি দরে। এভাবে খেজুর রস সংগ্রহ করে তা থেকে গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন শাহরুখ, আমির ও সলমন।
কিন্তু ছেলেদের এমন নাম কেন? বলিউড সিনেমার ভক্ত? তিন খানকেই পছন্দ? প্রশ্ন শুনে হাসি খেলে যায় সাবরুদ্দিনের মুখে। হাসিতেই বুঝিয়ে দেন উত্তর। এখন তিন খান ভাইর নাম শুনে তাঁদের দেখতেই উৎসাহীরা ভিড় করছেন। তবে সাবরুদ্দিুনের লক্ষ্য, এসবের পর যেন ব্য়বসাটা ভাল হয়।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: চলন্ত ট্রেন থেকে ‘নিখোঁজ’ আইনজীবী! তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়িতে