শক্তিগড়: তখন তিনি সিবিআই হেফাজতে। আসানসোল জেল থেকে কলকাতা আনা হচ্ছিল তাঁকে। শক্তিগড়ে গাড়ি থামানোর অনুরোধ জানান তিনি। খাবার খেতে চান। সেই খাবার টেবিলে তাঁর সঙ্গে সবুজ পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তিকে নিয়ে ঘনিয়েছিল রহস্য। বছর দেড়েক পর বীরভূম থেকে কলকাতা আসার পথে সেই শক্তিগড়েই গাড়ি থামালেন অনুব্রত মণ্ডল। এবারও খাবার খেলেন তিনি। তবে আর রেস্তরাঁয় ঢুকে নয়। গাড়িতে বসেই খেলেন খাবার।
২০২৩ সালের মার্চে শক্তিগড়ে রেস্তরাঁয় কচুরি খেয়েছিলেন অনুব্রত। আর রবিবার গাড়ি থামিয়ে প্রথমে চা খান তিনি। তারপর শশা দিয়ে মুড়ি খেলেন। এবার আর গাড়ি থেকে নামেননি। গাড়িতে বসেই খাবার খেলেন। এদিন প্রায় আধঘণ্টা তিনি ছিলেন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের শক্তিগড়ের ল্যাংচাহাবে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার প্রায় ২ বছর পর জামিন পেয়েছেন। চিকিৎসককে দেখাতে কলকাতায় আসছেন অনুব্রত। এদিন সন্ধ্যায় বোলপুর থেকে কলকাতা আসার পথে শক্তিগড়ে দাঁড়ান। মেয়ে সুকন্যাকে সঙ্গে নিয়েই তিনি কলকাতা আসছেন চিকিৎসার জন্য। কলকাতায় কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন? প্রশ্ন শুনে অনুব্রত বলেন, বাড়িতে তাঁর দুর্গাপুজো আছে। তাই এইবার কলকাতায় চিকিৎসা করিয়েই তিনি বাড়ি ফিরে আসবেন। তবে পরে তিনি দলীয় সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। দেখা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। তিনি বলেন, “গোটা রাজ্যে মারাত্মক বন্যা হয়েছে। মানুষের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। সব ঠিক হয়ে যাবে। সবাই ভাল থাকুন। ভাল করে দুর্গাপুজো কাটুক।”
অন্যদিকে বীরভূম জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটি বহাল থাকা নিয়ে কেষ্ট মণ্ডল অবশ্য বেশ রক্ষণাত্মক। তিনি বলেন, “আগেও ছিল কোর কমিটি। তখনও আমি জেলা সভাপতি ছিলাম। এখনও আমি জেলা সভাপতি। কোর কমিটি আছে।” তবে শনিবার কাজল শেখের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। বলেন, “দলের মিটিংয়ে কী আলোচনা হল, তা বাইরে কেন বলব।” তবে এত কিছুর মধ্যেই তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেন, বীরভূম জেলার পাশাপাশি বর্ধমানও তিনি দেখেন।
কেষ্ট মণ্ডল জেলের যাওয়ার আগে পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের তিনটি বিধানসভা আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম দেখতেন। তাঁর উপরেই দলের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সমীকরণ পাল্টে যায় কেষ্টর জেল যাত্রার পর। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদে তিনি বহাল থাকলেও তাঁর হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয় পূর্ব বর্ধমানের তিনটি বিধানসভার দায়িত্ব। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাঁধে এই তিন বিধানসভার দায়িত্ব বর্তায়। পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ফলও ভাল হয়।