Mohan Bhagwat: ‘হিন্দুসমাজ ও ভারতবর্ষ একই রূপ, সেটাই ধ্রুপদী…’, হিন্দু কারা, হিন্দুর বিশিষ্টতা কী বোঝালেন ভাগবত
Mohan Bhagwat: হিন্দুত্ব বোঝাতে গিয়ে পৌরাণিক গল্পের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভাগবত। তুলে এনেছেন রামায়ণের অধ্যায়। তিনি বলেন, "হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ একই কথা। আর এই স্বভাব পরম্পরার সঙ্গে যাঁদের কাছে এসেছে, তাঁরাই হিন্দু। ভারতে অনেক রাজা এসেছেন গিয়েছেন।"

পূর্ব বর্ধমান: আগামী ২০২৬-এ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। স্বাভাবিকভাবেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের টানা ১০ দিনের এই বাংলা সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছিলেন রাজনৈতিক মহল। কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, তা পূর্ব বর্ধমানের সভায় তাঁর বলা প্রত্যেকটা কথার মধ্যে দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন মোহন ভাগবত।
বিগত কয়েক মাস ধরে পড়শি বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত, নিপীড়িত। বাংলাদেশে যখন হিন্দুদের ওপর নিপীড়নে সরব হন ভাগবত। তিনি বলেছিলেন, “পড়শি দেশ বড় বিপদে রয়েছে! কেন্দ্রের উচিত গোটা বিষয়টি গুরুতর দিয়ে দেখার।” বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন কিছুটা হলেও থিতু, এই পরিস্থিতিতে বাংলায় এসেছে ভাগবত। সেখানে দাঁড়িয়েও বুঝিয়ে গেলেন হিন্দুদের মাহাত্ম্য। কারা হিন্দু? কেন হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ একই রূপ? সে সবেরই ব্যাখ্যা দেন ভাগবত।
ভাগবত বলেন, “ভারতীয়দের এই স্বভাব অনেক প্রাচীন। যাঁদের ভূগোলে ইন্দো ইরানিয়ান প্লেট বলে, এখানে বসবাসকারী সকলেই এই স্বভাব পেয়েছেন। এই স্বভাব হল, বিশ্বের বিবিধতাকে স্বীকার করে চলা, যেটা হিন্দু চলে। হিন্দু জানে, সত্য একটাই। সবার নিজের নিজের বিশিষ্টতা রয়েছে, হিন্দু জানে এই বিশিষ্টতা কী! বাকি সবই বদলাতে থাকবে। এই কারণেই নিজের নিজের বিশিষ্টতা নিয়ে চলো। সবার বিশিষ্টতার সম্মান করো।”
হিন্দুত্ব বোঝাতে গিয়ে পৌরাণিক গল্পের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভাগবত। তুলে এনেছেন রামায়ণের অধ্যায়। তিনি বলেন, “হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ একই কথা। আর এই স্বভাব পরম্পরার সঙ্গে যাঁদের কাছে এসেছে, তাঁরাই হিন্দু। ভারতে অনেক রাজা এসেছেন গিয়েছেন। কিন্তু মানুষ সেই সমস্ত রাজাদের কথাই মনে রেখেছেন, যিনি নিজের বাবার কথা রাখতে ১৪ বছর বনবাসে গিয়েছেন। তাঁর ভাই ১৪ বছর ধরে দাদার নামেই দেশ চালিয়েছেন, পাদুকা সিংহাসনে রেখে। ১৪ বছর পর দাদা ফেরত আসার পর তাঁর হাতে রাজ্যপাট তুলে দেন।”
তুলে আনেন স্বামী বিবেকানন্দের পর্ব। তাঁর কথায়, “পুরো ভারতে এমন এক ব্যক্তির কথা চলে, যিনি এক পয়সাও রোজগার কোনওদিন করেননি। কোথাও থেকে নির্বাচিত হয়ে আসেননি। যাঁর মায়ের চিন্তায় খেতরির রাজা মানি অর্ডার পাঠাতেন। কিন্তু সেই স্বামী বিবেকানন্দের নাম গোটা ভারতবর্ষ জানে।” ভাগবত বলেন, “হিন্দুদের এই স্বভাবের জন্যই ভারত আছে। এই স্বভাব নেই, তো ভারত নেই। সেই প্রাচীন কাল থেকে এখনও পর্যন্ত যাঁরা এই স্বভাব নির্বাহ করে আসছেন, তাঁরাই হিন্দু। এই সমষ্টিতেই ভারতবর্ষে হিন্দু সমাজ বলা হয়ে থাকে। হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ এক রূপ। আজকের এই দিনে দাঁড়িয়েও ওর মান্যতা ধ্রুপদি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সংগঠনের খোলনোলচেই বদলে ফেলতে বদ্ধপরিকর আরএসএস। এবার গ্রামীণ ক্ষেত্রে গ্রামপঞ্চায়েত ও পুরসভার ক্ষেত্রে ওয়ার্ড ভিত্তিক শাখা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে পঞ্চপরিবর্তনের কথাও ভাবা হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে সামাজিক উন্নয়নই সংঘের লক্ষ্য। আর তা সবটাই হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করেই।





