SIR: ‘বাঁচলেও এখানে, মরলেও এখানে মরব’, বলছে বাংলাদেশ থেকে পূর্বস্থলীতে ‘আশ্রয়’ নেওয়া পরিবারগুলি
Bangladeshi Nationals in Purbasthali: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকা মানুষজনরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাঁরা কেউ ৩০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছেন। কেউ বা তার পরে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকা ভোটাররা বলছেন, সরকারের উপর তাঁদের আস্থা রয়েছে। আবার অনেকে বলছেন, তাঁরা ভয় পাচ্ছেন না।

পূর্বস্থলী: নিরাপত্তার কারণে ওপার বাংলা ছেড়ে এপার বাংলায় এসে বসবাস করছে বহু পরিবার। জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে সংসার পেতেছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে তারা ভোটও দিয়েছে। পাচ্ছে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা। রয়েছে ভোটার কার্ড। তবে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই ওপার বাংলা থেকে আসা বহু পরিবারের। এসআইআর শুরু হওয়ার প্রশ্ন উঠছে, এসআইআরের পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কি এইসব পরিবারের নাম থাকবে? এই নিয়েই এখন চিন্তায় বাংলাদেশে থেকে এসে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে ‘আশ্রয়’ নেওয়া পরিবারগুলি। তবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি।
পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের কালেখাঁতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের ২টি বুথে মোট ১৮২০ জন ভোটার। এখানে বসবাস করা অধিকাংশ মানুষজনই ওপার বাংলা থেকে আসা। প্রায় প্রত্যেকেরই ভোটার কার্ড রয়েছে। বিগত ভোটগুলিতে তাঁরা ভোটও দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেক মানুষজনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই। ১৯৬ নম্বর বুথে ৮৭০ জন ভোটার হলেও ২৫০ জনের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নেই। পাশের বুথ ১৯৭ নম্বরে মোট ভোটার ৯৫০ জনের বেশি। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় এই বুথের ৫০০ ভোটারের নাম নেই।
ভোটার তালিকায় নাম না থাকা মানুষজনরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাঁরা কেউ ৩০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছেন। কেউ বা তার পরে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকা ভোটাররা বলছেন, সরকারের উপর তাঁদের আস্থা রয়েছে। আবার অনেকে বলছেন, তাঁরা ভয় পাচ্ছেন না। নিখিল দাস নামে একজন বললেন, “বাঁচলে এখানেই বাঁচব। মরলে এখানেই মরব।” বাংলাদেশে এখন তাঁর কিছু নেই বলে জানালেন। কেউ কেউ বললেন, ২০০২ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছিলেন। তবু ২০০২ সালে নাম ওঠেনি। এই সমস্ত পরিবারগুলি যেমন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এমন পরিবারে বিয়ে হওয়া এপার বাংলার মহিলারা। তাঁদের বাপেরবাড়ির নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকায় তাঁদের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় উঠে যাবে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির পরিবারের নাম না থাকায় ফাঁপরে বিবাহিত মহিলারা।
SIR আবহে রাজনৈতিক দলগুলি একই পথ ধরেই এগোচ্ছে। সরকার ও প্রশাসনের উপর আস্থা রাখার কথা বলছে তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূলের বক্তব্য, সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনেই চলতে হবে। তৃণমূলের কালেখাঁতলা ১ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি অজিত কুমার ঘোষ বলেন, “তাদের জন্য ফর্মে যেটুকু অংশ আছে, তা ফিলাপ করে দিতেই পারে। তাদের নাম থাকুক, নির্বাচন কমিশন সহানুভূতিশীল হোক।” বিজেপি জানিয়েছে, “আমরা চাইছি ওরা সকলে এখানেই থাকুক। যা নথি আছে তা জমা দিক।কোনও ভয় নেই।”
