AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

BDO: চায়ের দোকানে বাকি ১৪ হাজার টাকা, চাইতে গিয়ে খরিদ্দার বিডিও বললেন, ‘দলিল দেখাও’

BDO: বকেয়া বিল পেতে একাধিকবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সেই টাকা মেলেনি। আর এতগুলো টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন এই প্রৌড় চা-ওয়ালা। এমনকি বকেয়া চাইতে গেলে বিডিও তাকে ধমক দিয়ে দোকানঘরের জায়গার কাগজ দেখতে চেয়েছেন বলে দাবি প্রৌড় ওই চা- ওয়ালার।

BDO: চায়ের দোকানে বাকি ১৪ হাজার টাকা, চাইতে গিয়ে খরিদ্দার বিডিও বললেন, 'দলিল দেখাও'
চায়ের দোকানে ১৪ হাজার টাকার বিলImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2024 | 3:40 PM
Share

পূর্ব মেদিনীপুর:  রোজ চা যেত অফিসে। বলা হত টাকা মাসের শেষে দেওয়া হবে। এভাবে বিল হতে থাকে লম্বা। বকেয়া গিয়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার টাকা। অভিযোগ খোদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। বকেয়া টাকা পেতে গিয়েছিলেন দোকানদার। কিন্তু তাতে বিডিও যা বললেন, তা আরও অবাক হওয়ার মতো বইকি।

দোকানদারের দাবি, বিডিও নাকি বলেছিলেন, দলিল দেখালেই না কি মিলবে টাকা। অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা বিডিওর দাবি, অতিরিক্ত দাম ধরে বিল করায় এই বিপত্তি।  জানা যাচ্ছে, সরকারি অফিসে টেন্ডারের বিল পাশ হতে নানান ঝক্কি সামলাতে হয় ঠিকাদারদের, এমন অভিযোগ শোনা যায় অনেক সময়। বিলের টাকা নিয়ে বিভিন্ন গরমিলের অভিযোগও ওঠে নানান সময়ে। কিন্তু চা দোকান থেকে চা খেয়ে সেই বিল মাসের পর ফেলে রাখার নজির বোধহয় খুব একটা নেই! অন্তত তেমনটাই বলছেন দোকানদারেরা। তাও আবার সরকারি অফিসে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের ব্লক প্রশাসনের ছোট্ট একটি চা দোকানে বিল বাকি রয়েছে ১৩ হাজার ৬০০ টাকা। সূত্রের খবর, দিনের পর দিন ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির নানান মিটিংয়ে চায়ের পাশাপাশি খাওয়া হয়েছে বিস্কুট, কফি, মশলা মুড়ি প্রভৃতি। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির অনুমোদিত ক্যান্টিনের কর্মীদের অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েকমাস বন্ধ ছিল এই ক্যান্টিন। সেই সময় পঞ্চায়েত সমিতির কিছুটা দূরে হিজলি টাইডাল ক্যানেলের পাড়ে গড়ে ওঠা নন্দ মাইতির এই চা দোকান থেকে চা, বিস্কুট, কফি, মশলামুড়ি প্রভৃতি অর্ডার মাফিক যেত অফিসে। সেই বিলের প্রায় ১৪হাজার টাকা দীর্ঘদিন ধরে পাচ্ছেন না নন্দ মাইতি।

এমনকি বকেয়া বিল পেতে একাধিকবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সেই টাকা মেলেনি। আর এতগুলো টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন এই প্রৌড় চা-ওয়ালা। এমনকি বকেয়া চাইতে গেলে বিডিও তাকে ধমক দিয়ে দোকানঘরের জায়গার কাগজ দেখতে চেয়েছেন বলে দাবি প্রৌড় ওই চা- ওয়ালার। চা বিক্রেতা নন্দ মাইতির বক্তব্য, “আমাকে অর্ডার দিত, আমি খাবার সরবরাহ করতে থাকি। ওদের অফিসের ক্যান্টিন রয়েছে। কিন্তু ক্যান্টিনের মালিক অসুস্থ হয়ে যান। তারপর বিডিও-ই আমাকে বলেছিলেন, ক্যান্টিন বন্ধ, তুমি তোমার দোকানে খাবার রাখো, তোমারও লাভ। পরে আবার ক্যান্টিন খোলে। তখন আমি বিলগুলো সাবমিট করি। আমাকে প্রশ্ন করছেন, কফি কীভাবে ২০ টাকা করে হয়। আমি বললাম, ৭০ টাকা করে তো দুধই কিনি। কফি ২০ টাকারই হয়। আমার কাছে তখন দোকানের কাগজপত্র দেখতে চাইলেন। আমি তাও দেখলাম। তারপর আমার মেয়ে যায়। মেয়েকে বলেন, জায়গার দলিল দেখাও। দলিল কোথাও পাব, এটা তো সেচ দফতরের জায়গা। তারপর বললেন, দলিল না হলে টাকা দেব না।”

তবে বিষয়টি এমন নয় বলে মহিষাদলের বিডিও বরুনাশিস সরকারের দাবি, “আমি আসার আগে এই ঘটনা ঘটেছে। ওঁ যে অভিযোগ করছেন তা ভিত্তিহীন।ওঁ যে পরিমাণ টাকা বকেয়া বলছেন আদতে তা নয়। আর যেহেতু সরকারিভাবে, সরকারি জায়গায় যাঁরা রয়েছেন তাদের যেহেতু তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে, তাই ওঁকে দোকানের জায়গার কী কাগজ আছে তা আনতে বলা হয়েছে। যে টাকা বলছেন, ওত টাকা বাকি নেই। খুব বড় জোর চার হাজার টাকা মতো বাকি রয়েছে। ওঁ সব জিনিসেরই দাম বাড়িয়ে লিখেছে।”

ইতিমধ্যেই বকেয়া টাকা পাওয়ার জন্য মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাসের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন নন্দ মাইতি। শিউলির দাবি, “আবেদন পেয়েছি, বিডিওর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আর এই ঘটনা সামনে আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাসের বক্তব্য, একটি চা দোকানদারের এই টাকা না দিয়ে অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে মহিষাদল ব্লক প্রশাসন।