AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Durga Puja 2021: এ পুজোয় জ্বলে না বিদ্যুতের আলো, মায়ের আনন উদ্ভাসিত প্রদীপ শিখায়

Contai: পাল পরিবারের সদস্যরা জানালেন, পুরনো দিনের ঐতিহ্যের ছোঁয়াই এই পুজো মণ্ডপকে আরও প্রাণের কাছাকাছি করে তোলে।

Durga Puja 2021: এ পুজোয় জ্বলে না বিদ্যুতের আলো, মায়ের আনন উদ্ভাসিত প্রদীপ শিখায়
দুর্গাপুজো (নিজস্ব ছবি)
| Edited By: | Updated on: Oct 10, 2021 | 5:49 PM
Share

পূর্ব মেদিনীপুর: ৭৫ বছর হয়ে গেল পুজোর (Durga Puja 2021)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কত কিছুতেই বদল এসেছে। কিন্তু এতগুলো বছর ধরে মায়ের আরাধনায় কোনও বদল আনেনি কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের বামুনিয়ার দামোদর দত্তবাড় গ্রামের মানুষ। এখনও এ পুজোয় বাজে না মাইক, জ্বলে বিদ্যুতের আলো। এ পুজোয় ভুবনমোহিনীর ভুবন ভোলানো মুখ উদ্ভাসিত হয় সনাতনী প্রদীপের আলোয়।

পূর্ব মেদিনীপুরের দামোদর দত্তবাড় গ্রামে ৭৫ বছর ধরেই প্রদীপের আলোর স্নিগ্ধ আভায় উজ্জ্বল হয় মায়ের আননখানি। পুজোর চারটে এ গ্রামের মানুষ বাইরে কোথাও ঠাকুরও দেখতে যান না। গ্রামেই হইহই করে ছেলে-বুড়োতে জমে যায় উৎসব। গ্রামের লোকজন জানান, এ পুজো আজকের নয়। বহু পুরনো। ঠিক করে সন তারিখ বলাও যাবে না।

তবে ১৩৫৩ সনে নতুন করে এই পুজো শুরু করেন স্থানীয় পাল পরিবারের তিলকতমা পাল, কুচল চন্দ্র পালেরা। আর সেই পুজোকে পরবর্তী কালে এগিয়ে নিয়ে যান হীরালাল পাল ও তাঁর স্ত্রী সত্যভামা পাল। শোনা যায়, তিলকতমা পাল যখন এই পুজো শুরু করেছিলেন, তখন প্রথমে ঘটে পুজো হতো দেবী দুর্গার। পরে ধীরে ধীরে তা পট এবং শেষে মাটির প্রতিমা রূপে পূজিত হন দশপ্রহরণধারিনী।

এই প্রতিমা এক চালায় হয়। সাবেকি রূপ তার। মাটির তৈরি গয়না শোভা পায় উমার গায়ে। রং তুলির টানে ও মাটির বসনে সেজে ওঠেন মৃণ্ময়ী। যদিও পারিবারিক সোনা ও রুপোর গয়নাও পরানো হয় মাকে। এই পুজোর বৈশিষ্ট্য হল, মায়ের মূর্তির সামনে কোনও বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবহার হয় না।

বরং প্রদীপ, মোমবাতি, লন্ঠনের আলোয় আলোকিত হয় মায়ের মন্দির। পাল পরিবারের সদস্যরা জানালেন, পুরনো দিনের ঐতিহ্যের ছোঁয়াই এই পুজো মণ্ডপকে আরও প্রাণের কাছাকাছি করে তোলে। বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে যখন আধুনিক আলোকমালার চোখ ধাঁধানে ঝলকানি, এই গ্রামের পুজোয় তখন এক অদ্ভূত শান্ত সৌম্য আবহ।

ষষ্ঠী থেকে পুজো শুরু হয়। অষ্টমীতে থাকে ভোগের ব্যবস্থা। নবমীতে মায়ের কাছে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রস্তুত খইয়ের পাকে তৈরি মোয়া নিবেদন করা হয়। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর পারিবারিক বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন করেন পাল পরিবারের সদস্যরা। তাতে অংশ নেন গ্রামের লোকজনও।

পাল পরিবারের সদস্য সর্বাণী পালের কথায়, “এই পুজো কম বেশি ৭৫ বছরের পুরনো। আমাদের পুজোতে মাইক বাজে না, জ্বলে না বৈদ্যুতিক বাতি। চিরাচরিত রীতি মেনেই প্রদীপ, মোমবাতি ও হ্যাজাগের আলোয় আলোকিত হয় মায়ের মুখমণ্ডল। এখানকার মৃৎশিল্পীরা চার পুরুষের রীতি মেনেই এক চালার প্রতিমা তৈরি করেন। রেওয়াজ মেনে মাটির গয়না, মাটির শাড়িতে সাজানো হয় উমাকে। শুধু রং তুলি ব্যবহার হয়। বাইরের কোনও সাজসজ্জা মায়ের গায়ে ওঠে না।”

আরও পড়ুন: আঁধারে পুজো: বন্যায় ভেসে কলকাতায় ভিরেছে ওরা, ‘মাকে’ কাঁধে না তুলতেই ১০ হাজার টাকা চাঁদা!