Minor Marriage: তখনও আসেনি বরপক্ষ, অল্পের জন্য মন্দির থেকে উদ্ধার নাবালিকা!

Purba Medinipur: গোপন সূত্রে খবর পেয়ে  নাবালিকার বিয়ে রুখতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন সহকারি ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সুমন সাহা ও শিক্ষা আধিকারিক সুদীপ্ত মহাপাত্র। সঙ্গে ছিল পুলিশও

Minor Marriage: তখনও আসেনি বরপক্ষ, অল্পের জন্য মন্দির থেকে উদ্ধার নাবালিকা!
পটাশপুরে নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 11, 2022 | 3:00 PM

 পূর্ব মেদিনীপুর: মন্দিরে তখন বেশ ভিড়। লাল-চেলি, চন্দনে সেজে একেবারে মধ্যমণি হয়ে বসে রয়েছে ১৪ বছরের মেয়ে। তার বিয়ে! কিন্তু, কৈশোর মনে রঙ লাগায় বইয়ের ছবি, ক্লাসরুম। করোনার দৌরাত্ম্যে সেসব খানিক অতীত। মা-বাবার অত পয়সা কোথায়! তাছাড়া বাড়ির মেয়ের অত পড়াশোনার কী  ই বা দরকার! তাই চুপচাপ মন্দিরেই গৌরীদান সেরে ফেলছিলেন পিতা। কিন্তু, সে গুড়ি বালি! মোক্ষম সময়ে এসে দাঁড়ালেন প্রশাসনিক কর্তারা। তখনও বরপক্ষ এসে পৌঁছয়নি। তার আগেই ১৪ বছরের নাবালিকাকে উদ্ধার করল প্রশাসন।

পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের  বাল্যগোবিন্দপুর গ্রাম। সেই গ্রামেই থাকে ১৪ বছরের ওই নাবালিকা। পড়াশোনা করতে চাইলেও জোর করে মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কারণ, অভাব! অন্যদিকে, ওই নাবালিকার মা বলেছেন, “আমাদের অভাবের সংসার। মেয়েকে পড়াব কী করে। তাই তো বাধ্য হয়ে বিয়ে দিতে গিয়েছিলাম।”

এদিকে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে  নাবালিকার বিয়ে রুখতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন সহকারি ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সুমন সাহা ও শিক্ষা আধিকারিক সুদীপ্ত মহাপাত্র। সঙ্গে ছিল পুলিশও। নাবালিকার মা-বাবার সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। নূন্যতম ১৮ বছর না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না এই মর্মে একটি অঙ্গীকারপত্রে সইও করেন নাবালিকার মা-বাবা।

নিজ এলাকায় নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার পরিস্থিতির খবর পেয়ে মেয়েটি যাতে ফের স্কুলে যেতে পারে সে বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শঙ্কু বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, মেয়েটি যতদিন পড়াশোনা করবে, তার স্কুল ও পড়াশোনা সংক্রান্ত খরচ তিনি বহন করবেন। সম্প্রতি, হুগলির গুড়াপেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। সেখানেও অর্থাভাবে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কেবল নিজ বুদ্ধিবলে সেই বিয়ে ভাঙে ওই নাবালিকা।

প্রসঙ্গত, সমীক্ষা বলছে শুধু বঙ্গে নয়, করোনাকালে প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবার তাঁদের সন্তানকে অনলাইন শিক্ষার পরিকাঠামোয় আনতে সক্ষম হননি। ১৫ শতাংশের অধিক বাংলার। এই ১৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে দলিত আদিবাসী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা। এমনকী, হকের ‘মিড-ডে মিল’-ও জোটেনি পড়ুয়াদের। মোট ৮ শতাংশ পড়ুয়া গোটা দেশে তৈরি করা খাবার পেয়েছে। বেশিরভাগই পেয়েছে কাচামাল। বাংলায়  মিড-ডে মিল-এও কারচুপির খতিয়ান উঠে এসেছিল।

লকডাউন পরবর্তী সময়ে বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতেও সমস্যা দেখা গিয়েছে। অনেকেই আর স্কুলে ভর্তি হয়নি। হার কমেছে ভর্তির। স্কুলের পরিকাঠামোগত দিক থেকে প্রাথমিক স্তরে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও অবনমনও হয়েছে। শুধু তাই নয়, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে পাঠ্যবই কিনে পড়ার ক্ষমতা রয়েছে আনুমানিক ২০ শতাংশের। সেদিক থেকে করোনাকালে আরও কমেছে পড়ার জিগিরও।  এই পরিস্থিতিতে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মেয়েদের হাতে বা তাদের মা-বাবার কাছে কী বিকল্পই বা রয়েছে! যদিও, ১৮ বছরের আগে বিবাহ আইনবিরুদ্ধ, কিন্তু অভাবের সংসারে সে আইন মানছে কে!

আরও পড়ুন:  Jago Bangla: ‘দ্বিচারী কংগ্রেস’! গোয়ায় জোট নিয়ে সিদ্ধান্তের আগেই ফের দলীয় মুখপত্রে ‘আক্রমণাত্মক’ তৃণমূল