Purba Medinipur: জমি কেনা-বেচাতেও স্বাধীনতা নেই, চাই গ্রাম কমিটির অনুমতি! পড়ল পোস্টার
Purba Medinipur: পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাখরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রাম। এই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গ্রাম কমিটিও গেরুয়া মনোভাবাপন্নদের দ্বারাই পরিচালিত। এমন অবস্থায় গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে এই পোস্টার ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
তমলুক: গ্রামে জমি কেনা বেচা করতে গেলে লাগবে গ্রাম কমিটির ‘অনুমতি’। গ্রাম কমিটিকে না জানিয়ে এলাকায় কোনও জমি কেনা বেচা করা যাবে না, এই মর্মে পোস্টার পড়েছে গ্রামের ভিতরে। আর তা নিয়েই শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁকটিয়া গ্রামে। গ্রামের রাস্তার ধারে গাছে, বিদ্যুতের খুঁটিতে, চৌরাস্তার মোড়ে এমনই পোস্টার লাগানো হয়েছে। পোস্টারের উপর আবার লেখা, ‘বিশেষ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাখরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই গ্রাম। এই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গ্রাম কমিটিও গেরুয়া মনোভাবাপন্নদের দ্বারাই পরিচালিত। এমন অবস্থায় গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে এই পোস্টার ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
এলাকার গ্রাম কমিটির কেউই এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি, তবে বিষয়টি নিয়ে সুর চড়াতে ছাড়ছে না শাসক শিবির। তৃণমূলের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক সভাপতি রাজেশ হাজরা বলেন, “গতকাল আমি জেনেছি বিষয়টি। অতীতে এমন ঘটনা কোনওদিন ঘটতে দেখিনি। পঞ্চায়েত ভোটের পর সেখানে গ্রাম কমিটির যাঁরা পদাধিকারী রয়েছেন, তাঁরা বিজেপি মনোভাবাপন্ন। আমার মতে এই গর্হিত অন্যায়। কে কাকে জমি বিক্রি করবে, কে জমি কিনবে, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমার সন্দেহ, এর মধ্যে টাকা নেওয়ার একটি চক্রান্ত রয়েছে।”
বিজেপি শিবির থেকেও এই পোস্টারের ধিক্কার জানানো হয়েছে। তবে ওই গ্রাম কমিটি কেবল বিজেপি মনোভাবাপন্নদের দ্বারা পরিচালিত এই তত্ত্ব মানতে নারাজ পদ্ম শিবির। জেলা পরিষদে বিজেপির বিরোধী দলনেতা বামদেব গুচ্ছাইত বলেন, ‘স্থানীয়স্তরে গ্রাম পরিচালক কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা এই বিষয়টিকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। দেশের আইন ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে আমরা কেউই নয়। আইন ও সংবিধানকে মেনে প্রত্যেকের চলা উচিত। আমরা এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে যা জেনেছি, ওই গ্রাম পরিচালক কমিটিতে সর্বদলীয় মানুষ রয়েছেন। বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।’
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও রথীনচন্দ্র দে বলেন, “এটা আজ আমাদের নজরে এসেছে। বিভিন্ন জায়গায় গ্রামের মানুষ নিজেরা গ্রাম কমিটি তৈরি করেন। কিন্তু এটার কোনও আইনি স্বীকৃতি বা আইনি ক্ষমতা কিছুই নেই। ফলে তারা এটা করতে পারে না। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি কাখরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে জানিয়েছি। তাঁকে ডেকেও বলা হয়েছে, যাতে ওই পোস্টারগুলি সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যদি তা না হয়, তাহলে আগামিকাল আমরা এগুলি সরানোর ব্যবস্থা করে দেব। এই পোস্টারের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বিডিও জানিয়েছেন, “জমি বিক্রির ব্যাপারে যে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে। যদি কোথাও কেউ হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ আসে, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”