TMC Foundation Day: তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে হাতাহাতিতে জড়াল দুই গোষ্ঠী, মুখোমুখি পৃথক সভা মন্ত্রী বনাম নেতার!
TMC: হলদিয়ার ধানশিড়ি পেট্রোকেমিক্যালের সামনে পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ঝামেলায় জড়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। ক্রমশ জোরাল হয় সেই বচসা। এরপর তা পৌঁছয় হাতাহাতি-মারধরে।
পূর্ব মেদিনীপুর: গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে রজত জয়ন্তীর পথে ঘাসের উপর জোড়াফুল শিবির। শনিবার ছিল তৃণমূলের (TMC) প্রতিষ্ঠা দিবস। তবু ঘুচল না তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারীরা (দল না ছাড়লেও সবরকম অনুষ্ঠান থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারী) তৃণমূল ছেড়ে গিয়েছেন বটে, তবে অধিকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের বহু নেতা যোগাযোগ রাখছেন বলে অভিযোগ তুলে একে অপরের বিরুদ্ধে মাইক ধরে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছে না দলের পদাধিকারীরা। তাই বলা যায়, পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল আছে তৃণমূলেই।
বছরের প্রথম দিনে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনকে ঘিরে হলদিয়াতে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হলদিয়ার ধানশিড়ি পেট্রোকেমিক্যালের সামনে পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ঝামেলায় জড়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। ক্রমশ জোরাল হয় সেই বচসা। এরপর তা পৌঁছয় হাতাহাতি-মারধরে। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন। গুরুতর জখম অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুক জেলা হাসপাতাল।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে দুপুরে ফের দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে কেন্দ্র করে ঝামেলা। এবার পৃথক কর্মসূচিকে ঘিরে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অবশেষে হলদিয়া বন্দরের জিসি বার্থ গেটের সামনে সামান্য ব্যবধানে মুখোমুখি দুই মঞ্চে পালিত হয় দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। পয়লা জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে এমনই ছবি দেখা গেল হলদিয়ায়। শুধু অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পৃথক ভাবে পালন করলেন তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের কংগ্রেস সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল।
এ বিষয়ে জেলা দেবপ্রসাদ বাবু বলেন, ”মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ওই অনুষ্ঠান করেননি। প্রতিষ্ঠা দিবসে জেলা সভাপতি দলের পতাকা উত্তলোন করবেন এটাই স্বাভাবিক। দলের শাখা সংঠনও প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে পারে। কিন্তু এক জায়গায় অনুষ্ঠান থাকলে পৃথক অনুষ্ঠান করা যায় না। দলের অনুশাসন না মেনে এ সব করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় বার বার দাদার অনুগামী (শুভেন্দু অধিকারীর) বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।”
এদিকে জেলা সভাপতির অভিযোগ খারিজ করে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “একটা অনুষ্ঠান দলের তরফে করা হয়েছে। অন্যটি দলের শ্রমিক সংগঠন করেছে। এর মধ্যে দোষের কিছু দেখছি না। আমি জানি না, উনি (দেবপ্রসাদ) কেন এ কথা বলেছেন!”
এই ঘটনা দেখে কটাক্ষ করার সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিরোধীরা। সিপিএম নেতা অচিন্ত্য শাসমলের কথা, “তৃণমূল দলটার জন্ম হয়েছিল ক্ষমতা ও চেয়ার দখলকে কেন্দ্র করেই। এই শিল্পাঞ্চলে সেটা আরও বেশি করেই দেখা যাচ্ছে। হলদিয়ার উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূল কাটমানি খেয়ে শিল্পাঞ্চলকে রুগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।” একই রকম ভাবে কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি শিবিরও। তাদের কথায়, তৃণমূলে মুষল পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে।