Mystery Fever: বিপদ দক্ষিণবঙ্গেও! জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ছোট ছোট অসহায় মুখগুলি
Mystery Fever: ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪২ জন শিশু।
পুরুলিয়া: উত্তরবঙ্গের অজানা জ্বরের (Mystery fever) প্রকোপ এবার দক্ষিণবঙ্গেও ছড়াতে শুরু করেছে। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, আসানসোলে ইতিমধ্যেই শিশুদের মধ্যে এই জ্বর দেখা দিয়েছে। মুর্শিদাবাদেও একই ছবি। পরিস্থিতির আগাম মোকাবিলায় পুরুলিয়ায় তৈরি হল বিশেষ কমিটি। জেলাশাসক-সহ এই কমিটিতে রয়েছেন শিশু চিকিৎসকরা।
এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, পরিস্থিতির দিকে সবসময় তাঁদের নজর রয়েছে। এখনও উদ্বেগের কিছু নেই। যদিও জেলার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন প্রায় ২০০ শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গত বছরের মতোই সংখ্যাটা রয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে শিশুরা।
ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪২ জন শিশু। এই হাসপাতালে শিশু বিভাগে বেড রয়েছে ৫৫টি। এর মধ্যে ৪২টিতেই জ্বর, সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছে শিশুরা। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম। তারাই নজরদারি চালাচ্ছে এই শিশুদের উপর। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল বলেন, “এই সময়টা তো সিজন চেঞ্জের। এখন সিজনাল ফিভার হয়। মূলত ইনফ্লুয়েজ্ঞার উপসর্গ থাকে। তবু আমরা চিন্তিত। প্রত্যেক ডাক্তারই ভাবছেন কী হতে পারে কী হতে পারে না। তাই ডাক্তাররা কোনও সমস্যায় পড়লে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ইন্দ্রজিৎ মাজি বলেন, “ঋতু পরিবর্তনের কারণে একটা জ্বরের প্রকোপ তৈরি হয় এই সময়। জ্বরের সঙ্গে সর্দিকাশিও থাকে। মা ও সন্তানকে একই রকম ভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও ভাবেই বাচ্চাকে ঠান্ডা লাগতে দেওয়া চলবে না।”
অন্যদিকে শতাধিক শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে। ১৪৮ জনেরই জ্বর, সর্দিকাশি। তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কিছু ধরা না পড়ায় নমুনা গেল পুণের ভাইরলজিক্যাল ল্যাবে।
মুর্শিদাবাদেও এখনও অবধি ১৬০ জন শিশু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তারা। এক শিশুর আত্মীয় জানান, “প্রথমে রক্তের রিপোর্ট দেখে নিউমোনিয়া হয়েছে বলেছিল। পরে বলল টাইফয়েড। তারপর বলছে মশার কামড় থেকে জ্বর। এখন আবার রক্ত নিয়েছে। জানি না রিপোর্ট আবার কী বলবে।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ, “বছরের এই সময় প্রতিবারই শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এ বছর সংখ্যাটা বেশি। তার মানে এই নয় যে কিছুই ঘটেনি। রোগ যখন হচ্ছে। শিশুদের আইসিইউয়ে ভর্তি যখন করতে হচ্ছে তখন কিছু একটা কারণও নিশ্চিত রয়েছে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে বিশেষজ্ঞ কমিটি সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল তৈরি করছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে জানিয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষ হল ‘দুয়ারে সরকার’, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আবেদন দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়
আরও পড়ুন: ‘অন্য রাজ্য থেকে লোক আনা হচ্ছে, তাই অর্পিতা ঘোষের পদত্যাগ’, বললেন দিলীপ