পুরুলিয়া: রবিবারের সন্ধ্যায় দুই জেলায় দুই কাউন্সিলর খুনের ঘটনা ঘিরে সোমবার সকাল থেকে শোরগোল শুরু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুরসভার কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুনে রবিবার রাতেই গ্রেফতার হয়েছেন মূল অভিযুক্ত। তবে পুরুলিয়ার ঝালদায় কাউন্সিলর খুনের অভিযোগে সোমবার সকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শুরু হয়েছে তল্লাশি। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে নিহত কাউন্সিলর তপন কান্দুর আত্মীয়-পরিজনদেরও। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড সীমানায় চলছে ব্যাপক নজরদারি। ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টা পুরুলিয়া বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে সোমবারই নিহত দলীয় কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ ঝালদায় পৌঁছনোর কথা তাঁর। এবার ঝালদা পুরসভার ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হয়েছিল। কংগ্রেস-তৃণমূল সমান সমান আসন পায়। তা নিয়ে একটা রাজনৈতিক চাপানউতর এলাকায় চলছিল বলে কংগ্রেসের দাবি। এরইমধ্যে কাউন্সিলরের খুনের ঘটনা। এই ঘটনায় পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। তাদের দাবি, পুলিশের প্রত্যক্ষ মদত না থাকলে এ ঘটনা ঘটে না।
ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তপন কান্দু। রবিবার সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। উদ্ধার করে রাঁচির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনা রাজনৈতিক হিংসার উদাহরণ বলেই মনে করছেন জেলার কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত। তাঁর কথায়, এই ঘটনার পিছনে বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাঁর মতে পুরভোটে এবার ঝালদায় ত্রিশঙ্কু হয়।
১২ আসনের পুরসভায় ৫টি তৃণমূল, ৫টি কংগ্রেস পেয়েছিল। বাকি ২টি নির্দল। পরে এক নির্দল তৃণমূলে যোগ দেন। নেপাল মাহাতোর কথায়, “আমাদেরও এক নির্দল সমর্থন করেছে। ফলে সমান সমান হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এরকম একটা হত্যাকাণ্ড ঘটল। এর আগে কখনও ঝালদায় এরকম ঘটনা ঘটেনি।”
নেপাল মাহাতোই জানান, রবিবার পুরুলিয়ায় দলীয় কার্যালয়ে তপন কান্দুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার পর বাড়ি ফিরে সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়েছিলেন কাউন্সিলর। সেখানেই এই ঘটনা। পুরুলিয়ার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো বলেন, “পুলিশ চেষ্টা করছে সকলকে তৃণমূলে টানতে।”
পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর কথায়, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার যে কী অবস্থা এই ঘটনাগুলি তা প্রমাণ করে। রোজই কোথাও না কিছু হচ্ছে। বাংলায় প্রশাসন বলে কিছু নেই। এখানে তালিবানি শাসন চলছে। আমার তো মনে হয় ঝালদার আইসির বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া দরকার। আমার মনে হয় এই ঘটনায় ওনার যোগ রয়েছে। উনি যতক্ষণ থাকবেন, কোনও বিচারই সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গে যে ঘটনাই ঘটছে তাতে পুলিশের প্রত্যক্ষ মদত থাকে।”