TMC Firing: বিধায়কের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের! রাতের অন্ধকারে পরপর গুলিতে বিদ্ধ তৃণমূল নেতা
TMC Firing: রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ একদল দুষ্কৃতী গুলি চালায় তৃণমূলের অঞ্চল যুব সভাপতিকে লক্ষ্য করে। পরপর দুটি গুলি গিয়ে লাগে সুজাউদ্দিন গাজীর পেটে ও পিঠে।
উস্তি : ফের প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এক দিকে যখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বার্তা দিচ্ছে, তখন রাজ্যের একাধিক জায়গায় অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি সামনে আসছে। ডায়মন্ড হারবারের পর এবার গুলি চলল উস্তিতে। মগরাহাট-১ এর অঞ্চল সভাপতি সুজাউদ্দিন গাজীকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পেটে ও পিঠে গুলি লেগেছে ওই নেতার। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরেই এই গুলি। দলেরই বিধায়ক আর ব্লক যুব সভাপতির মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল। তাই সুজাউদ্দিনকে বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনই গুলি করেছে বলে মনে করছে পুলিশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির উত্তর কুসুম এলাকার হালদার হাটের ঘটনা। রবিবার রাতে ওই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, এ দিন দলীয় কাজ সেরে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল যুব সভাপতি সুজাউদ্দিন। মাঝপথে খুব কাছ থেকে গুলি চালায় একদল দুষ্কৃতী। পরপর দুটি গুলি গিয়ে লাগে সুজাউদ্দিন গাজীর পেটে ও পিঠে। গুলি চলার শব্দে আশেপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় যুব নেতাকে স্থানীয় বানেশ্বরপুর ব্লক হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হল। পরে তাঁকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে নেমে দুষ্কৃতীদের খোঁজ শুরু করে উস্তি থানার পুলিশ। আর এই গুলি চলার ঘটনায় আবারও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুজাউদ্দিন মগরাহাট ১ নম্বর ব্লক যুব সভাপতি ইমরান হাসান ও উত্তর কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কুতুবউদ্দিন লস্করের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের কাজকর্ম নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মগরাহাট পশ্চিমের বিধানসভার বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয় ব্লক যুব সভাপতি ইমরান হাসানের। এমনকি উত্তর কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়েও পঞ্চায়েত প্রধান কুতুব উদ্দিন লস্করের সঙ্গে বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লার মনোমালিন্য ছিল। ইমরান ও কুতুবউদ্দিনকে সমর্থন জানিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দলের নেতা সুজাউদ্দিন। তাই এ ভাবে সুজাউদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বিধায়ক গিয়াসউদ্দিনের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই গুলি চালিয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন ব্লক যুব সভাপতি ইমরান হাসান। আগেই খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে দাবি পরিবারের।
গিয়াসউদ্দিন মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘আমার দলের ছেলে গুলি খেয়েছে। ওই এলাকাগুলোতে দুষ্কৃতীরাজ চলছে। পুলিশকে বারে বারে জানিয়েও কোনও সুরাহা মিলছে না। আর আমি কোন দুষ্কৃতী পুষি না।’
কয়েক দিন আগে এ ভাবেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলি চলে ডায়মন্ড হারবারে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসার জেরে গত সপ্তাহে শুক্রবার সন্ধেয় পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ হন যুব তৃণমূল কর্মী বিশাল খেয়ারি। খুব কাছ থেকে বিশালকে গুলি করা হয়। ওই ঘটনাতেও দেখা যায়, দুই গোষ্ঠীর লোকই তৃণমূলের কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এলাকা দখল নিয়ে বুদ্ধদেব চিত্রকর নামে আর এক তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে বিশালের মধ্যে বেশ কয়েক মাস ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল বলে জানা যায়। তারপরই এই গুলি চালানোর ঘটনা সামনে আসে।
আরও পড়ুন : Kolkata municipal corporation election 2021: শুভেন্দুর ‘গায়ে হাত দেওয়া’র অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে