দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম মঙ্গল প্রামাণিক (৩৫)। তিনি বিষ্ণুপুরের ২২২ নম্বর বুথের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে দেবাশিস প্রামাণিক নামে স্থানীয় এক বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। তবে এর পিছনে একটা পারিবারিক বিবাদের তত্ত্বও উঠে আসছে। ভোরবেলা মাছ আড়তে কাজে যাওয়ার পথে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তদন্তে সোনারপুর থানার পুলিশ। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবাশিস প্রামাণিকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের শত্রুতা ছিল মঙ্গলের। এর আগেও একাধিকবার তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় তা মিটেও যায়। কাজ, পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের পাশাপাশি রাজনৈতিক মতাদর্শে পার্থক্য থাকায় অশান্তি আরও চরমে ওঠে। ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে মঙ্গল মাছের আড়তে কাজে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ তখনই ধারালো অস্ত্র, বাঁশ নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান দেবাশিস। রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মঙ্গল প্রামাণিক। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের মা, “আগের বছর থেকেই দল দল করে ঝামেলা শুরু করেছে। আগেও ওকে মেরেছিল। আমি রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। বলেছিলাম মারিস না ওকে, মারলে মরে যাবে। আমিও আমার ছেলেকে মারধর করতে বারণ করতাম। কিন্তু রবিবার ওই এসে গালাগালি শুরু করে। উত্ত্যক্ত করেছিল আমার ছেলেকে। ও মেরে দেয় তখন। তখনকার মতো ব্যাপারটা মিটেও যায়। কিন্তু প্রতিশোধ নিল ওই ছেলে।”
ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক শোরগোল তুঙ্গে এলাকায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুফল ঘাটু বলেন, “আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দল করছে। গত বছর থেকেই বিজেপি এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করছিল। আমাদের ছেলেরা শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তার প্রতিবাদ করে। একটা সামান্য ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরে সাড়ে চারটে নাগাদ বিজেপির সক্রীয় কর্মী আমাদের ছেলেকে খুন করে।”
অন্যদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতা পিন্টু সর্দার বলেন, “এটা সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল এটাকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিজেপি খুনের রাজনীতি করে না।”