TMC: পদ একটাই, দাবিদার দুই, পোস্টারেই কোন্দলে শান তৃণমূলের!
Rajpur: তাৎপর্যপূর্ণ হলেও একজনের পোস্টারে বিধায়কের ছবি নেই, আরেকজনের পোস্টারে বিধায়কের ছবি দেওয়া রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে কে তবে টাউন সভাপতি?
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পদ একটাই। কিন্তু সে পদের দাবিদার দুইজন। কে শহর সভাপতি? আর তাই নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীকোন্দল। রাজপুরে দুটো আলাদা পোস্টার ঘিরেই বিতর্ক শাসক শিবিরের অন্দরে। বহুদিন ধরেই রাজপুর-সোনারপুর চত্বরে তৃণমূলের অন্তর্কলহ দানা বাঁধছিল। এ বার সেই রেশ যেন এসে পড়ল সরাসরি পোস্টারে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল।
ঠিক কী হয়েছিল? রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভা এলাকার রাজপুর টাউন জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) পক্ষ থেকে একটি পোস্টার দিতে দেখা যায়। সেই পোস্টারে উত্সবের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। সেখানে টাউন সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে তৃণমূল নেত্রী কুহেলী ঘোষের। অন্যদিকে, রাজপুর টাউনেই আরও একটি বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার পড়েছে যেখানে টাউন সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে শিবু ঘোষের।
তাৎপর্যপূর্ণ হলেও একজনের পোস্টারে বিধায়কের ছবি নেই, আরেকজনের পোস্টারে বিধায়কের ছবি দেওয়া রয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে কে তবে টাউন সভাপতি? পাশাপাশি, দলের তরফ থেকে দুই নেতৃত্বের নামে এভাবে পৃথক পোস্টার প্রকাশ্যে আসায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল।
বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শিবু ঘোষের দাবি, তিনিই টাউন সভাপতি। বিধায়কের নির্দেশ মেনেই তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর কথায়, “দিদি আমার কাছে জানতে চান কে করেছে। আমি বললাম, কে করেছে জানি না, তবে ঘরের মধ্যে ঘর হয়ে যাচ্ছে। বাজে জায়গায় যাচ্ছে। দিদি তখন বলেন, আপনি আছেন আপনি থাকবেন।” শুধু তাই নয়, তিনি আরও দাবি করেন, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলী মৈত্রও তাঁকেই টাউন সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন।
পোস্টার বিতর্কে রাজপুরের প্রাক্তন টাউন সভাপতির পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র। তিনি বলেন, “শিবনাথ ঘোষকে মানছি কারণ দলের নির্দেশ মেনে করছি, শিবুদাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।”
এদিকে পাল্টা, তৃণমূল নেত্রী কুহেলি ঘোষের দাবি, তিনিই শহর সভাপতি। দলের নির্দেশেই তিনি কাজ শুরু করেছেন। কুহেলীর কথায়, “গত ১৬ অগস্ট রাজপুর-টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে আমার নাম প্রকাশিত হয়েছে, দলের পদ অনুযায়ী শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। দলের নির্দেশ মেনে কাজ করছি।”
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন এই অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি ছিলেন বর্ষিয়ান নেতা শিবু ঘোষ। কিন্তু জেলা কমিটি ঢেলে সাজানোর পর অনেক রদবদল করা হয়। তখন কুহেলী ঘোষকে রাজপুর টাউনের সভাপতি ঘোষণা করা হয়। তৃণমূলের ওয়েবসাইটেও কুহেলী ঘোষের নাম আপলোড করে দেওয়া হয়। সেইমতো তিনি কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু তৃণমূলের আরেক গোষ্ঠী কুহেলীদেবীকে মেনে নিতে পারছেন না। এবার তা নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে এই বিষয়টি জানানো হয়েছিল বলে খবর সূত্রের। তখন নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিবের পক্ষ থেকে ফোন করে শিবুবাবুকে কাজ চালিয়ে যেতে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও লিখিত কিছু দেওয়া হয়নি।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি পদ্ম শিবির। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “তৃণমূলের সব জায়গায় দু’জায়গায়, জেলাজুড়ে গোষ্ঠীকোন্দল। সামনে ভোটে দেখা যাবে রক্তারক্তি। পরের বছর ভোট তৃণমূল-তৃণমূল মারপিট করে মরবে।”
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমরা কেন ঝগড়া করব? সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’, BSF-এর ক্ষমতায়নে তোপ মমতার