Mamata Banerjee: ‘আমরা কেন ঝগড়া করব? সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’, BSF-এর ক্ষমতায়নে তোপ মমতার
BSF: বঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু অংশের এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়েই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এসেছেন।
দার্জিলিঙ: নির্বাচনের পর প্রথমবার উত্তরবঙ্গে পা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে সেরেছেন বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই নাম না করে পরোক্ষে বিজেপিকেই তোপ দাগলেন তৃণমূল সুপ্রিমো (Mamata Banerjee)। সম্প্রতি, সীমানায় ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী তথা বিএসএফের (BSF)। সেই ক্ষমতায়নকে ‘পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’ বলেই দাবি তৃণমূল নেত্রীর।
সভামঞ্চ থেকেই তৃণমূল নেত্রীর সাফ মন্তব্য, “বিএসএফকে আমি সম্মান করি। কিন্তু, কিছু পলিটিক্যাল মানুষ ইচ্ছে করে সীমানায় দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছেন। সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র। আগে সীমানা বরাবর বিএসএফ ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘুরতে পারত। এখন তা বাড়িয়ে ৫০ করে দেওয়া হয়েছে। কেন? ” এখানেই না থেমে মমতা আরও বলেন, “আমাদের সীমান্তে সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। ভুটানের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক, বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল করব। কেন আমরা খামখা ঝগড়া করতে যাব! একসঙ্গে সকলে মিলে মিশে থাকব। ইচ্ছে করে ভাগাভাগি করে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবেন না।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের তকমা দেওয়ার দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। পরে সেই দাবিতে সদর্থক মনোভাব পোষণ করেছিলেন একাধিক বিজেপি বিধায়ক। যদিও, পরে পদ্ম শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলা ভাগকে কোনওভাবেই সমর্থন করে না বিজেপি।
এদিকে সম্প্রতি, পাকিস্তান লাগোয়া পাঞ্জাব এবং বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ‘অপারেশনাল’ ক্ষমতার চৌহদ্দি বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত সোমবার, ১১ অক্টোবর, একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে কেন্দ্র। তাতেই বিএসএফের ‘ক্ষমতা’ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এই তিন রাজ্যে সীমান্ত থেকে মূল ভূখণ্ডের ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় অপারেশনাল কাজকর্ম অর্থাৎ অনুসন্ধান, আটক এবং গ্রেফতার করতে পারবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। আগে এই চৌহদ্দি ছিল মাত্র ১৫ কিলোমিটার। পাশাপাশি, গুজরাতে বিএসএফের অপারেশনাল কাজের পরিধি ৮০ থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
বঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু অংশের এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়েই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এসেছেন। বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধিতে এই সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। রবিবার জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্য সেদিক থেকে যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৮’এর ১৩৯ ধারা অনুযায়ী, বিএসএফ অ্যাক্টে অপারেশনাল কাজকর্মের চৌহদ্দির সীমানা বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। এই ধারা ২০১৪ সালে শেষবার সংশোধন করা হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষেত্রে পরিধি ভিন্ন ছিল। কিন্তু সেই পরিধিকে এক অঙ্কের তলায় আনতে এই সংশোধন। এরফলে গোরু, মাদক, জাল নোট পাচার এবং অনুপ্রবেশ রোধ করা যাবে বলেই অনুমান কেন্দ্রের।