ওরা ‘একই বৃ্ন্তে দুটি কুসুম’ রুহুল-শুভঙ্কর, চোখের জলে স্বজনহারানো বন্ধুকে বাড়ি ফেরাল কিশোর

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (NGO) ছায়াতটের হাত ধরে অবশেষে যুবকের পরিচয় জানতে পারে শুভঙ্কর ও তার পরিবার। জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবকের নাম রুহুল আমিন মল্লিক। ওই যুবকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের হাড়োয়া মসজিদ পাড়ায়। ততদিনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় (social Media) ছড়িয়ে পড়েছে রুহুলের ছবি। সেখান থেকেই খবর পান রুহুলের বাবা-মা। ছেলেকে নিতে তাঁরা ছুটে আসেন শুভঙ্করের বাড়িতে। দীর্ঘ তিন মাস পর মা রেজিনা বিবির কোল ফিরে পায় রুহুল।

ওরা 'একই বৃ্ন্তে দুটি কুসুম' রুহুল-শুভঙ্কর, চোখের জলে স্বজনহারানো বন্ধুকে বাড়ি ফেরাল কিশোর
ছবির বাঁদিকে শুভঙ্কর, ডানদিকে রুহুল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 20, 2021 | 10:05 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দিকে দিকে যখন হিন্দু-মুসলিম সংঘাত-সংঘর্ষের জের, তখন সম্প্রীতির (Communal Harmony) অনন্য নজির গড়ল ক্যানিংয়ের (Canning) চাঁদখালি গ্রামের এক বছর চোদ্দর কিশোর শুভঙ্কর মণ্ডল। সপ্তাহখানেক আগে নিজে বাড়ির কাছে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে  ইতিউতি ঘুরতে দেখে শুভঙ্কর। তাকে দেখে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটি খাবার প্রার্থনা করে। সে দিন নিজের ভাগের সমস্ত ভাতটাই ছেলেটিকে খাইয়ে দেয় শুভঙ্কর। তখনও জানা যায়নি, ছেলেটির পরিচয়।

খেতে পেয়ে ওই যুবকটিও আর শুভঙ্করকে ছেড়ে যায় না। প্রথম প্রথম শুভঙ্করের বাড়ির লোক আপত্তি করলেও পরে ছেলের মনোভাব বুঝতে পেরে শুভঙ্করের মা-বাবাও ওই যুবকের যত্ন নিতে শুরু করেন। শুধু ওই যুবকের দেখভাল নয়, তাকে বাড়ি ফেরানোর দায়িত্বও তার ছোট্ট কাঁধে নিয়ে নেয় শুভঙ্কর। বাড়ির সামনেই ‘বর্ণপরিচয়’ নামের একটি ক্লাবের ঘরে  অস্থায়ী ঠিকানা হয় রুহুলের।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (NGO) ছায়াতটের হাত ধরে অবশেষে যুবকের পরিচয় জানতে পারে শুভঙ্কর ও তার পরিবার। জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবকের নাম রুহুল আমিন মল্লিক। ওই যুবকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের হাড়োয়া মসজিদ পাড়ায়। ততদিনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় (social Media) ছড়িয়ে পড়েছে রুহুলের ছবি। সেখান থেকেই খবর পান রুহুলের বাবা-মা। ছেলেকে নিতে তাঁরা ছুটে আসেন শুভঙ্করের বাড়িতে। দীর্ঘ তিন মাস পর মা রেজিনা বিবির কোল ফিরে পায় রুহুল। রেজিনা বিবি বলেন, ”ভাবিনিই ছেলেকে খুঁজে পাব। শুভঙ্করকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার কাছে নেই।” কিন্তু, বন্ধু শুভঙ্করকেও যে কাছছাড়া করতে ইচ্ছে করে না রুহুলের! বন্ধুকে বিদায় জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে শুভঙ্করও।

এই ঘটনায় স্থানীয়রা বলেন,”শুভঙ্কর আর রুহুলকে দেখে মনেই হত না ওরা আলাদা। মনে হত দুই ভাই। শুভঙ্কর অনেক কিছু শিখিয়ে দিল। ও বুঝিয়ে দিল, মানুষের কোনও ভেদাভেদ নেই।”

আরও পড়ুন: ‘কহো না মলয়জি সে প্যায়ার হ্য়ায়’,তৃণমূলের প্রচারে ঝড় তুললেন আমিশা, ‘পেমেন্ট পেয়ে এসেছেন’ তোপ বাবুলের