ফিলিপিন্স: কথায় আছে, রাখে হরি, মারে কে। সেই কথাই অক্ষরে অক্ষরে সত্য়ি প্রমাণিত হল ১১ বছরের কিশোরের জন্য। ভূমিধসে যেখানে আস্ত ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, সেখানেই অক্ষত অবস্থায় থাকল ওই কিশোর। গোটা একটা দিন পার হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল তাঁকে যেখান থেকে বের করে আনে, তা জানলেও অবাকই হবেন। ফিলিপিন্সের বাসিন্দা ওই কিশোর বিপদের আশঙ্কা করেই ফ্রিজের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছিল। বাড়ি, পরিবার-পরিজনেরা সকলেই ভূমিধসের জেরে কাদায় ভেসে চলে গেলেও, সে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থাতেই থাকে। পরেরদিন উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে এসে যখন নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ চালাচ্ছিল, সেই সময় ভাঙাচোরা যন্ত্রাংশের মাঝখানে পড়ে থাকা একটি ফ্রিজের ভিতর থেকে শব্দ শুনতে পান। দরজা খুলতেই দেখতে পান ভিতরে গুটিসুটি মেরে বসে আছে ওই কিশোর।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিজে জাসমে নামক ওই কিশোর তাঁর পরিবারের সঙ্গে ফিলিপিন্সের বেবে সিটিতে বসবাস করত। গত সপ্তাহের শুক্রবারই ওই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মেগি’ আছড়ে পড়ে। একটানা বৃষ্টির জেরেই একাধিক জায়গায় মাটি আলগা হয়ে ধস নামে। ওই ধস থেকে রক্ষা পায়নি সিজের বাড়িঘরও। ঘরে হু হু করে জল ও কাদামাটি ঢুকতে শুরু করলেই, ভয়ে ফ্রিজের ভিতরে আশ্রয় নেয় ওই কিশোর। প্রায় ২০ ঘণ্টা ওই অবস্থাতেই ফ্রিজের ভিতরে আটক থাকে সে।
ধসের জেরে সিজের বাড়ি ভেসে গিয়েছে বললেই জানা গিয়েছে। নদীর পাড়ে ওই ফ্রিজটি দেখতে পেয়েছিলেন উদ্ধারকারী দল। এক পুলিশকর্মী ফ্রিজের দরজা খুলতেই, ভিতরে দেখতে পান ওই কিশোর কুকড়ে শুয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্ট্রেচারে করে ঘটনাস্থল থেকে বের করে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দেখা যায়, তাঁর একটি পা ভেঙে গিয়েছে। তবে ধাতস্থ হতেই ওই কিশোরের প্রথম কথাই ছিল “আমার খিদে পেয়েছে।”
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। কপালের জোরে সিজে বেঁচে গেলেও, তাঁর পরিবার অতটা ভাগ্যবান নয়। তাঁর মা ও ছোট বোনের এখনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।