Afghanistan: কথা রাখল কি তালিবান? দ্বিতীয় জমানার এক বছরের কতটা বদলে গেল আফগানিস্তান?

One year of second Taliban regime in Afghanistan: আফগানিস্তানে দ্বিতীয় তালিবান জমানার এক বছর পূর্ণ হল। ক্ষমতা দখলের সময়, তালিবানদের পক্ষ থেকে এক গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সেইসব কথা কি তারা রাখল? গত এক বছর পর কতটা বদল ঘটল আফগানিস্তানের?

Afghanistan: কথা রাখল কি তালিবান? দ্বিতীয় জমানার এক বছরের কতটা বদলে গেল আফগানিস্তান?
দ্বিতীয় তালিবান জমানার এক বছরে কতটা বদলাল আফগানিস্তান?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 16, 2022 | 4:10 PM

কাবুল: আফগানিস্তানে দ্বিতীয় তালিবান জমানার এক বছর পূর্ণ হল। সোমবার (১৫ অগস্ট) এই উপলক্ষে জাতীয় ছুটি দেওয়া হয়েছিল। ক্ষমতা দখলের সময়, তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ নয়া তালিবান সরকারের পক্ষ থেকে এক গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রথম তালিবান জমানার থেকে অনেকটাই নরমপন্থী শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। কথা দিয়ে সেইসব কথা কি তারা রাখল? তালিবানদের ক্ষমতায় ফেরার এক বছর পর কতটা বদল ঘটল আফগানিস্তানের?

“আমরা মহিলাদের কাজ ও পড়াশুনার অনুমতি দেব। মহিলারা সমাজে খুব সক্রিয় ভূমিকা নেবেন। তবে, ইসলামী কাঠামোর মধ্যে।’

কার্যক্ষেত্রে, দ্বিতীয় তালিবান জমানার প্রথম বছরেই মহিলাদের উপর প্রথম জমানার বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাদমস্তক না ঢেকে এবং পুরুষ অভিভাবক ছাড়া প্রকাশ্যে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত মার্চে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তালিবানদের দাবি, মহিলা শিক্ষিকার অভাবেই মহিলাদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে মেয়েদের শুধু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের অনুমতি রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদেরও পড়াশোনা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে মহিলাদের অংশগ্রহণ নগন্য বললেই চলে।

এর পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, শ্রম ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ তালিবান জমানায় প্রায় শূন্য হয়ে গিয়েছে। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, শ্রম ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ ১৫ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে পৌঁছেছিল। গত এক বছরে আবার তা ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

‘অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য, দেশের পুনর্গঠনের জন্য, দেশের সমৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করব।’

তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই, অধিকাংশ দেশ আফগান ভূমে তাদের আর্থিক সহায়তা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল। এর পাশাপাশি ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিলও। ফলে, চরম আর্থিক দুর্দশার মুখে পড়েছে আফগানিস্তান। আর্থিক সহায়তা বন্ধের ক্ষতি পূরণ করতে তালিবান সরকার করের হার বাড়িয়েছিল। সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর – দুই মাসে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব আদায় হয়েছিল বলে দাবি করেছিল। তবে, সেই দাবির কোনও ভিত্তি খুঁজে পায়নি আন্তর্জাতিক মহল। খুচরো বাজারে মুদ্রাস্ফীতি আকাশ ছুঁয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হাঁসফাঁস অবস্থা নাগরিকদের।

“আফগানিস্তানে মাদকের উৎপাদন বন্ধ করা হবে। আমরা আফিমের উৎপাদন আবার শূন্যের কোঠায় আনব।”

হেরোইনের মত মাদক তৈরিতে আফিম ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘগিন ধরেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ আফিম উৎপাদক দেশ আফগানিস্তান। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পোস্তর চাষ নিষিদ্ধ করেছে তালিবান প্রশাসন। এই পোস্ত থেকেই আফিম তৈরি করা হয়। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে হেলমান্দ প্রদেশের পোস্ত চাষের জন্য সম্বৃদ্ধ বেশ কয়েকটি এলাকায় জমির পর জমি পোস্ত ধ্বংস করেছে তালিবানরা। তবে একই সময়ে, ক্রিস্টাল মেথ-সহ অন্যান্য মাদকের উৎপাদন ক্রমে বাড়ছে।

“দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

গত এক বছরে থেমে গিয়েছে আফগান গৃহযুদ্ধ। তবে তারপরও, গত বছরের অগস্ট থেকে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে অন্তত ৭০০ জন অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৪০০ জন আহত হয়েছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এই সংখ্যাটা অনেক কম। প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে তালিবান প্রশাসন ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশকে দায়ী করেছে। এছাড়া, ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট, আফগানিস্তান ফ্রিডম ফ্রন্টের মতো তালিবান বিরোধী আফগান শক্তিগুলির উপস্থিতিও ক্রমে বাড়ছে। গত জুন মাসে রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছিল, অন্তত ১২টি তালিবান বিরোধী যোদ্ধা গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে আফগানিস্তানে। তাই ক্রমে সেই দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।