চারিদিকে শুধু রক্ত আর ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া দেহের টুকরো, কমপক্ষে ৫টি বিস্ফোরণ বিমানবন্দরের বাইরে, মৃত ৬০
প্রথম বিস্ফোরণের পরই সন্দেহের তির তালিবানের দিকে গেলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয়, এই হামলার পিছনে তাদের হাত নেই।
কাবুল: একের পর এক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। চোখের সামনে দেহের টুকরো উড়তে দেখলেন কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন। একটি বা দুটি নয়, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে কমপক্ষে পাঁচটি বিস্ফোরণ (Blast) হয়েছে কাবুল বিমানবন্দর(Kabul Airport)-র বাইরে। ঘটনায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কাবুল স্বাস্থ্যমন্ত্রক (Kabul Health Ministry)।
হামলার আশঙ্কা আগেই ছিল। ৩১ অগস্ট উদ্ধারকার্যের শেষদিন বেঁধে দেওয়ার পরই তড়িঘড়ি নাগরিকদের নিজেদের দেশে ফেরানো হচ্ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরেই আত্মঘাতী হামলা হতে পারে, গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর মেলে। আমেরিকা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার তরফে সতর্কতা জারি করে বলা হয়, কেউ যেন বিমানবন্দরে না আসেন। যারা বিমানবন্দরের গেটের বাইরে রয়েছেন, তারাও যেন দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
সতর্ক করা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হল না। মার্কিন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গতকালের একাধিক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ জন মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে। এ দিকে, স্থানীয় সংবাদ মাধ্য়মের ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে কীভাবে বিমানবন্দরের কাছেই অবস্থিত একটি খালের ধারে ছিন্নভিন্ন হয়ে দেহগুলি পড়ে রয়েছে। কারোর মাথা আছে তো, হাত-পা নেই। আবার কারোর দেহটাই চার টুকরো হয়ে গিয়েছে। চেনার উপায় নেই অধিকাংশকেই।
Breaking-confirmed, another explosion it’s 5th today. pic.twitter.com/ZPPo5TtlNl
— Aśvaka – آسواکا News Agency (@AsvakaNews) August 26, 2021
প্রথম বিস্ফোরণের পরই সন্দেহের তির তালিবানের দিকে গেলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয়, এই হামলার পিছনে তাদের হাত নেই। তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবি, আইসিস-কে (ISIS-K) এই হামলা চালিয়েছে। আগামিদিনে জঙ্গিরা যাতে কোনও ভাবেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য আফগানিস্তানের মাটিকে না ব্যবহার করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে তালিবান গোটা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এ দিকে, তৃতীয় বিস্ফোরণের খবর নিশ্চিত হওয়ার পরই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে আইসিস-কে। তাদের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়, একজন আত্মঘাতী বোমারুকে পাঠানো হয়েছিল মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা চালানোর জন্য। হোয়াইট হাউসের তরফেও জানানো হয়েছে, এর পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) বলেন,, “আমরা ভুলব না, ক্ষমাও করব না। যারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং এত সংখ্যক প্রাণহানীর জন্য তাদের মূল্য চোকাতে হবে।” পেন্টাগনের তরফে ইতিমধ্যেউই পাল্টা হামলার ছক কষা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে বিস্ফোরণের জেরে উদ্ধারকার্য বন্ধ করা হবে না বলেই জানিয়েছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাককেনজি। তিনি জানান, এখনও প্রায় ১ হাজারের মতো মার্কিনবাসী আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন। তাদের যেভাবেই হোক উদ্ধারকার্য চালু রাখা হবে এবং সুস্থভাবে সমস্ত নাগরিকগের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য যা কিছু করা সম্ভব, তা অবলম্বন করা হচ্ছে। তবে বাকি অধিকাংশ দেখশের তরফেই জানানো হয়েছে উদ্ধার কার্য প্রায় শেষের পথেই। হাতে গোনা কয়েকজন নাগরিকই আটকে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। আরও পড়ুন: ‘রাখে হরি মারে কে…’, গুরুদ্বারে আশ্রয় নিয়ে জোড়া বিস্ফোরণ এড়ালেন ১৬০ আফগান হিন্দু ও শিখ