‘রাখে হরি মারে কে…’, গুরুদ্বারে আশ্রয় নিয়ে জোড়া বিস্ফোরণ এড়ালেন ১৬০ আফগান হিন্দু ও শিখ

বরাত জোরেই মৃত্যুতে কান ঘেঁষে বেরিয়ে যেতে দেখলেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্থানীয় এক গুরুদ্বারে আশ্রয় নেওয়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হওয়ার থেকে তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন।

'রাখে হরি মারে কে...', গুরুদ্বারে আশ্রয় নিয়ে জোড়া বিস্ফোরণ এড়ালেন ১৬০ আফগান হিন্দু ও শিখ
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 26, 2021 | 11:29 PM

কাবুল: বিধ্বংসী জোড়া বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন। সেই তালিকায় কোনও হিন্দু বা শিখ রয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও খবর মেলেনি। কিন্তু সেই তালিকায় থাকতে পারতেন আফগানিস্তানের কমপক্ষে ১৬০ জন শিখ ও হিন্দু নাগরিক। বরাত জোরেই মৃত্যুতে কান ঘেঁষে বেরিয়ে যেতে দেখলেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্থানীয় এক গুরুদ্বারে আশ্রয় নেওয়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হওয়ার থেকে তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন।

খুব বেশি সময় আগের কথা না। বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরের পূর্ব দিকের গেটে ঠিক যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, বুধবার রাতে সেখানেই বসে ছিলেন আফগানিস্তানের প্রায় ১৫ জন হিন্দু এবং ১৪৫ জন শিখ নাগরিক। তালিবান অধীনস্থ আফগানিস্তান থেকে প্রাণ নিয়ে পালানোর উদ্দেশ্যে সেখানে বসে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু আর কয়েক ঘণ্টা থাকলেই যে তাঁদের মৃত্যু অবধারিত ছিল, সেটা বুঝতে পেরে এখন ভগবানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। কারণ এ দিন সকালেই ওই জায়গা ছেড়ে গুরুদ্বারে আশ্রয় নেই আফগানিস্তানের শিখ ও হিন্দুরা।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরের গেটের বাইরে যে জোড়া বিস্ফোরণ হয়, তা আত্মঘাতী জঙ্গিরা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযোগের আঙুল উঠতে শুরু করেছে আইএস জঙ্গিদের দিকে। তালিবানের মুখপাত্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জঙ্গিরা যাতে কোনও ভাবেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য আফগানিস্তানের মাটিকে না ব্যবহার করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে তালিবান গোটা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তালিবানের পক্ষ থেকেই এই বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘জঙ্গি হামলা’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এবং তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবি, ইরাক এবং সিরিয়ার ইসলামিক স্টেট দ্বারাই এই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই হামলা সম্পর্কে আইএস-র পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। তালিবানের তরফে পরোক্ষে বিস্ফোরণের দায় আমেরিকার কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে কারণ যেই এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে, সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্ব মার্কিন সেনার উপরে ছিল।

শিখ গুরুদ্বারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মজিন্দর সিং শিরসা জানিয়েছেন, ১৬০ জনের এই দলটি কোনওক্রমে বিস্ফোরণ এড়াতে সক্ষম হয়েছে। টুইট করে তিনি লেখেন, “গতকাল ওঁরা যেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, আজ ঠিক ওই জায়গাতেই বিস্ফোরণটা হয়েছে। আমরা পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই যে গতকাল এরকম কিছু হয়নি।” এই টুইটের সঙ্গে বিস্ফোরণ পরবর্তী ভয়াবহতার ছবি জুড়ে দিয়েছেন তিনি।

একই সঙ্গে আরও একটি বিষয় এ দিন বিস্ফোরণের পর ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সেটা হল- এই ঘটনায় কোনও ভারতীয় আহত হননি বা কারোর মৃত্যু হয়নি। আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: শ্মশানপুরী কাবুল, চারিদিকে শুধুই লাশ আর লাশ, ভেসে আসছে আর্তনাদ…