Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল, ইচ্ছে ক্রিকেট খেলারও! দুই হাত খুইয়েও আত্মবিশ্বাসেই ‘দশকর্মা’ জাহিদুল

হাত না থাকলেও লেখাপড়ার অদম্য় ইচ্ছাতেই বিশেষ বাধা তৈরি হয়নি। দুই হাতের কাটা অংশ দিয়েই পেন ধরে জাহিদুল খাতায় লেখার অভ্য়াস শুরু করে। ধীরে ধীরে বিষয়টি রপ্ত হয়ে গেলেই তাঁকে ফের তৃতীয় শ্রেণিতেই ভর্তি করানো হয়।

পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল, ইচ্ছে ক্রিকেট খেলারও! দুই হাত খুইয়েও আত্মবিশ্বাসেই 'দশকর্মা' জাহিদুল
ছবি: সংগৃহীত।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 14, 2021 | 3:09 PM

ঢাকা: খেলতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় অল্প বয়সেই খোয়াতে হয়েছিল দুটি হাত। তবে কোনও দুঃখ নেই ১৯ বছরের জাহিদুলের। বাকি পাঁচটা মানুষের মতোই নিজেকে মনে করে সে, হাজারো প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তাই সাফল্যের দিকে এগিয়ে চলেছে জাহিদুল।

বাংলাদেশের যশোরের মনিরামপুরের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম (১৯)। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবথেকে ছোট সে। ২০০৮ সালে যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত জাহিদুল, সেই সময়ই এক বন্ধুর সঙ্গে পাশের একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে ওঠে। খেলতে গিয়ে ছাদের পাশ দিয়েই যাওয়া বিদ্যুতের ওভারহেড তারে হাত লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নীচে পড়ে যায় জাহিদুল।

তাঁকে প্রথমে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৩ দিন চিকিৎসা চলার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে তিন মাস তাঁর চিকিৎসা চলে। অস্ত্রোপচার করে তাঁর ডান হাত কনুইয়ের নীচ থেকে এবং বাঁ হাত বাহুর নীচ থেকে বাদ দেওয়া হয়। প্রায় তিন বছর লাগে জাহিদুলের সুস্থ হয়ে উঠতে।

হাত না থাকলেও লেখাপড়ার অদম্য় ইচ্ছাতেই বিশেষ বাধা তৈরি হয়নি। দুই হাতের কাটা অংশ দিয়েই পেন ধরে জাহিদুল খাতায় লেখার অভ্য়াস শুরু করে। ধীরে ধীরে বিষয়টি রপ্ত হয়ে গেলেই তাঁকে ফের তৃতীয় শ্রেণিতেই ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে দারুণ রেজাল্ট করে ধলীগাতী মাধ্যমিক বিদ্য়ালয়ে ভর্তি হয় জাহিদুল। সেখানেও দশম শ্রেণিতে দুর্দান্ত ফল তাঁর।

জাহিদুলের মা রশিদা বেগম বলেন, “ওঁর বাবা ইটভাটার ম্য়ানেজার। এমনিতেই অভাবের সংসার, তার উপর যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে, তখন চিন্তায় ঘুমাতে পারতাম না আমরা। হঠাৎ একটা অঘটনে প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ায় মনে দুঃখ থাকলেও আস্তে আস্তে জাহিদুলকে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে দেখে এখন অনেকটাই আশ্বস্ত আমরা।”

হাত না থাকলেও নিজে নিজেই জামা, প্যান্ট পরতে পারে জাহিদুল, শুধু আটকাতে পারে না বোতাম। খাবার খেতেও একটু সমস্যা হলেও চামচ দিলে নিজেই খাবার খায় সে। জাহিদুলের ইচ্ছা আরও পড়াশোনা করার। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করতে চায় সে। পাশাপাশি ক্রিকেট খেলাও খুব পছন্দের, ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। আরও পড়ুন: মহাত্মা গান্ধীকে ‘সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান’ দেওয়ার প্রস্তাব আমেরিকায়