Blinken meets Abbas: চুপি চুপি গিয়েও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে বিক্ষোভের মুখে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী
Blinken meets Abbas in West Bank: রবিবার, আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়াই ইজরায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। 'গাজা ভূখণ্ডের অসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ কমানোর প্রচেষ্টা' বলে দাবি করলেও, মনে করা হচ্ছে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পশ্চিম এশিয়ার ভবিষ্যতের রূপরেখা আঁকা শুরু করে দিল আমেরিকা। আর সেই কারণেই প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করলেন ব্লিঙ্কেন।

রামাল্লা: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চাপ দিল মিশর ও জর্ডন। স্থানীয় সময় শনিবার (৪ নভেম্বর), গাজায় রাষ্ট্রপুঞ্জের আওতাধীন এক স্কুলেও বোমা হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। ওই স্কুলটিকে যুদ্ধের সময় আশ্রয় কেন্দ্র ও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই হামলায় অন্তত ৫৫ জন প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই এক সাংবাদিক সম্মেলনে, ব্লিঙ্কেনের উপস্থিতিতেই যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানান মিশর ও জর্ডনের বিদেশমন্ত্রীরা। কিন্তু, ইজরায়েলের সুরে সুর মিলিয়ে ব্লিঙ্কেন সাফ জানিয়ে দেন, এখন যুদ্ধবিরতির অর্থ হল গাজায় প্যালেস্তিনীয় ‘সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ হামাসকে ফের ঘর গোছানোর সুযোগ করে দেওয়া। এরপর রবিবার, আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়াই ইজরায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ‘গাজা ভূখণ্ডের অসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ কমানোর প্রচেষ্টা’ বলে দাবি করলেও, মনে করা হচ্ছে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পশ্চিম এশিয়ার ভবিষ্যতের রূপরেখা আঁকা শুরু করে দিল আমেরিকা। আর সেই কারণেই প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করলেন ব্লিঙ্কেন।
৭ অক্টোবরে ইজরায়েলে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে বহুমুখী হামলা চালিয়েছিল হমাস গোষ্ঠী। অতর্কিত সেই হামলায় ১,৪০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২৪০ জন ইজরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে যুদ্ধবন্দি বানিয়েছিল হামাস। তারপর থেকে গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে ইজরায়েলি বাহিনী। এর জেরে ইতিমধ্যেই ৯,৫০০ জনেরও বেশি অসামরিক প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। যার অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। কীভাবে এই যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়, এই নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, ঐকমত্যে পৌঁছন যায়নি। বলা যেতে পারে, প্যালেস্তিনীয় গণহত্যায় ইজরায়েলকে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে আমেরিকা ও অন্যান্য পশ্চিমী দেশগুলি।
এর মধ্যেই এদিন ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের রামাল্লা শহরে যান ব্লিঙ্কেন। কোনও আগাম ঘোষণা ছিল না। একেবারে গোপনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সাঁজোয়াগাড়ির ছত্রছায়ায় রামাল্লার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন ব্লিঙ্কেন। গাজায় রাষ্ট্রপুঞ্জের স্কুলে ইজরায়েলি হামলার পরও যেভাবে ইজরায়েলের প্রতি একপেশে মার্কিন সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি, তাতে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে মার্কিন বিদেশমন্ত্রীকে তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিল মার্কিন প্রশাসন। আর সেই কারণেই ব্লিঙ্কেন রামাল্লা ছাড়ার আগে পর্যন্ত এই নিয়ে টু-শব্দটি করেনি মার্কিন প্রশাসন। তবে, তাতেও প্রতিবাদ থামানো যায়নি। সূত্রের খবর মার্কিন কূটনীতিকের সফরের সময় ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে প্রতিবাদ হয়েছে। প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কী কথা হল ব্লিঙ্কেনের? জানা যায়নি। ক্যামেরার সামনে দুই নেতা একে অপরকে অভিবাদন জানিয়েছেন। তবে, সেই সময়ও কারোর মুখে কোনও কথা ছিল না।
ব্লিঙ্কেনের সফর সঙ্গী এক পদস্থ মার্কিন কর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, গাজার অসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তা সরবরাহ বৃদ্ধি এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে প্যালেস্তীনিয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইজরায়েলি হিংসায় লাগাম টানার বিষয়ে তেল আবিবকে চাপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। প্যালেস্তীনিয় কর্তৃপক্ষের যে করের টাকা আটকে রেখেছে ইজরায়েল, তাও দিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হবে। গাজায় হামাস-পরবর্তী প্রশাসন গঠনের জন্য প্যালেস্তীনিয় কর্তৃপক্ষের সহায়তাও চেয়েছে আমেরিকা। উল্টোদিকে, সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানিয়েছে, আব্বাস গাজায় ইজরায়েলি হামলাকে যুদ্ধ না বলে গণহত্যা বলে নিন্দা করেছেন। অবিলম্বে যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন তিনি। একমাত্র দখলদারির অবসান ঘটিয়ে প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হলে, তবেই ইজরায়েল সুরক্ষিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
