রুশ গোয়েন্দাদের ৪০ বছর গবেষণার ‘থিসিস পেপার’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!

অবাক করার বিষয়, সদ্য প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় আসাও রুশ গোয়েন্দাদের গবেষণারই রেজাল্ট। এমনই দাবি প্রাক্তন কেজিবি মেজর ইউরি শভেৎসের। যা যে কোনও হলিউড থ্রিলারকেও হার মানাতে পারে।

রুশ গোয়েন্দাদের ৪০ বছর গবেষণার 'থিসিস পেপার' প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 31, 2021 | 7:18 PM

ওয়াশিংটন: মার্কিন মুলুকের গণতন্ত্র সবচেয়ে প্রাচীন। ১৭৮৯ সালে প্রথম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। এর পর অনেক প্রেসিডেন্ট এসেছেন, গিয়েছেন। ২৩১ বছরের গণতন্ত্রের উপর দাঁড়িয়ে আজকের আমেরিকা। কিন্তু এই আমেরিকায় সম্প্রতি দেখা গিয়েছে গণতন্ত্রের গায়ে কীভাবে কালি লেপে দিয়েছেন ট্রাম্প সমর্থকরা। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উস্কানিতে ন্যক্কারজনক দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব। কিন্তু এই ঘটনার পিছনে কি শুধু একা দায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প? প্রাক্তন রুশ গোয়েন্দা মেজরের দাবি অনুযায়ী কিন্তু এই উত্তর দেওয়াটা আর এত সহজ নয়।

ট্রাম্পকে তৈরি করেছে রাশিয়া?

আমেরিকার সিংহাসনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিকে বসানোর জন্য ৪০ বছর কাজ করেছে রুশ গোয়েন্দাদের মস্তিষ্ক। এমনটাই বিস্ফোরক দাবি প্রাক্তন রুশ গোয়েন্দা মেজর ইউরি শভিৎসের। যা যে কোনও হলিউড থ্রিলারকেও হার মানাতে পারে। রহস্যের গন্ধ পেতে ক্রেগ অঙ্গারের লেখা বই ‘আমেরিকান কম্প্রোম্যাটের’ পাতা উলটে পিছিয়ে যেতে হবে ৪৩ বছর আগে। শভিৎসের এই দাবিতে বিশ্ব জুড়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

ট্রাম্পকে কীভাবে পেল রুশ গোয়েন্দা সংস্থা?

সালটা ১৯৭৭, চেক মডেল ইভানা জেলনিকোভাকে বিয়ে করেন উদীয়মান ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই থেকেই রুশ গোয়েন্দাদের নজরে সদ্য প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরপর থেকে অজান্তেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পকে তৈরি করতে কাজ করে গিয়েছে কেজিবি। কখনও জেনেবুঝেও কেজিবির সাহায্য নিয়েছেন ট্রাম্প। এমনটাই দাবি শভিৎসের।

ট্রাম্প ও ইভানা

প্রেক্ষাপট এমনই, টিভি কেনাই পরোক্ষ ভাবে ট্রাম্পকে সাহায্য করেছে প্রেসিডেন্ট হতে। আর এই অভিষেকের নেপথ্যে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র কিসলিন। তৎকালীন সময়ে কিসলিন ছিলেন জয়-লুড ইলেক্ট্রনিকস কোম্পানির মালিক ছিলেন। ট্রাম্প তাঁর নিউ ইয়র্ক হায়াত হোটেলের জন্য ২০০টি টেলিভিশন সেট কিনতে গিয়েছিলেন কিসলিনের কাছে। এরপরই কিসলিন মারফত কেজিবির সঙ্গে সংযুক্ত হন ট্রাম্প।

আমেরিকান কম্প্রোম্যাটের লেখা হয়েছে, ১৯৮৭ সালে যখন ট্রাম্প ও ইভানা মস্কো ভ্রমণে গিয়েছিলেন, তখন কেজিবি গোয়েন্দাদের বক্তব্যে ট্রাম্পের মনে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে সে বছরই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একাধিক সংবাদ মাধ্যমে পাতাজোড়া বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: নারী নয়, পুতুল প্রেমিকাই বেশি আরামপ্রদ! বিয়ে সারলেন যুবক

তবে এই কিসলিন অবশ্য কেজিবির সঙ্গে তাঁর সংযোগের কথা স্বীকার করেননি। যদিও শভেৎসের দাবি, কেজিবির স্থানীয় এজেন্ট হয়ে আমেরিকায় ছিলেন কিসলিন। শভেৎসের এ-ও দাবি, ২০১৬ সালে যখন ট্রাম্প যেতেন তখন মস্কোয় সাড়ম্বরে পালিত হয়েছিল বিজয়োৎসব। ট্রাম্পের জয়ে রুশ কারচুপির অভিযোগ আগেই এসেছে, পরবর্তীকালে দেখা গিয়েছে ট্রাম্পের রাশিয়া প্রীতিও। সেক্ষেত্রে আমেরিকান কম্প্রোম্যাটের সব কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে হলফ করে বলা যায়, মার্কিন গণতন্ত্রের আজীবন ইতিহাসে অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থেকে যাবেন ট্রাম্প।