‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা টানলেন ভাবী প্রেসিডেন্ট, শান্তির বার্তা ট্রাম্পের

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jan 08, 2021 | 10:58 AM

পরিস্থিতি সামাল দিতেই একটি ভিডিয়ো বার্তায় শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিলেন ট্রাম্প। তিনি বললেন, "মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরই আমার লক্ষ্য। ২০ জানুয়ারি নতুন প্রশাসন কাজ শুরু করার আগে সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চাই আমি।"

ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা টানলেন ভাবী প্রেসিডেন্ট, শান্তির বার্তা ট্রাম্পের
ফাইল চিত্র

Follow Us

ওয়াশিংটন: ক্যাপিটলে হামলার (Capitol building attack) ঘটনার পর চাপের মুখে পড়ে হার স্বীকার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump), কিন্তু সমালোচনার ঝড় থামেনি তাতেও। ক্ষতে প্রলেপ দিতে গতকাল যাদের “আই লভ ইউ” বলেছিলেন, শুক্রবার তাদেরই সমালোচনা করলেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে জয়ের স্বীকৃতি পাওয়ার পরই ট্রাম্প সরকারকে তোপ দেগেছেন হবু প্রেসিডেন্ট। টুইটে প্রশ্ন করেছেন, “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (Black Lives Matter)-র আন্দোলনকারী ক্যাপিটলে হামলা চালালে তাঁদের সঙ্গেও কি একই ব্যবহার করা হত?”

বুধবার ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে তাণ্ডব চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। এরপরই চাপ বাড়ে ট্রাম্পের উপর। একাধিক সহায়ক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ থেকে শুরু করে সমালোচনা, এমনকি ইমপিচমেন্টের দাবিও ওঠে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই একটি ভিডিয়ো বার্তায় শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিলেন ট্রাম্প। তিনি বললেন, “মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরই আমার লক্ষ্য। ২০ জানুয়ারি নতুন প্রশাসন কাজ শুরু করার আগে সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চাই আমি।”

একইসঙ্গে হামলাকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আইন অমান্য, হিংসা দেখে আমি ক্ষুব্ধ। আমি সঙ্গে সঙ্গেই ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছি শান্তি বজায় রাখতে ও হামলাকারীদের ক্যাপিটল বিল্ডিং থেকে বের করতে। যাঁরা হিংসার সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা আমেরিকার প্রতিনিধি হতে পারে না। কারণ আমেরিকা আইন মেনে চলে। আর যাঁরা আইন ভেঙেছেন, তাঁদের মূল্য চোকাতেই হবে।” ভিডিয়োর শেষে তিনি সমর্থকদের মনমরা না হয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেন।

আরও পড়ুন: শুধু আমেরিকা নয়, কাবুল থেকে দিল্লি! একাধিক হামলার শিকার ‘সংসদ ভবন’

অন্যদিকে গতকাল যৌথ অধিবেশনে কংগ্রেস আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন (Joe Biden)-কে স্বীকৃতি দিতেই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে গত বছরের “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার” (Black Lives Matter) আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন। টুইটে তিনি বলেন, “একথা কেউ আমায় বলতে পারবে না যে, গতকাল যদি ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের একদল আন্দোলনকারীরা ক্যাপিটলে হামলা চালাত, তবে তাঁদের সঙ্গেও একই ব্যবহার করা হত। আমরা সবাই জানি এটাই সত্যি এবং অনস্বীকার্যও।”

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস (Kamala Harris)-ও একইভাবে তুলনা টেনে বলেন, “আমরা দুইধরনের বিচার ব্যবস্থার সাক্ষী রইলাম। এক, যারা চরমপন্থীদের ক্যাপিটলে তাণ্ডব চালাতে দিল এবং অন্যটি হল, যাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারীদের উপর কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছিল। এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

অন্যদিকে, ক্যাপিটলের ঘটনার পরই ফেসবুক ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টের উপর ২৪ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। আজ তা বাড়িয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য করা হল। ফেসবুক কর্তা মার্ক জুকারবার্গ (Mark Zuckerberg) নিজেই এই কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “গত ২৪ ঘণ্টার ঘটনায় স্পষ্ট যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর হাতে থাকা শেষ সময়টুকু নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেননি। আমাদের মাধ্যম ব্যবহার করে হামলাকারীদের সমালোচনার বদলে উৎসাহ দেওয়ার ঘটনায় আমেরিকা তথা গোটা বিশ্বের মানুষরা উদ্বিগ্ন। আমরা গতকালই সেই মন্তব্য সরিয়ে ফেলেছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মাধ্যম ব্যবহার করতে দেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা প্রেসিডেন্টের ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করছি এবং কমপক্ষে দুই সপ্তাহ অর্থাৎ যতদিন না শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে, এই নিষেধাজ্ঞা বজায়ই থাকবে।”

ফেসবুকের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও টুইটারে ফের সচল হয়েছে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট। তবে টুইটার কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এইধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে চিরতরেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: পুলওয়ামা হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড’ মাসুদের নামে জারি হল গ্রেফতারি পরোয়ানা

Next Article