Michelangelo’s David: মাইকেলেঞ্জেলোর ‘ডেভিড’ নাকি পর্নোগ্রাফি! পড়িয়ে চাকরি গেল প্রধান শিক্ষিকার

Florida Michelangelo’s David: রেনেসাঁ যুগের বিখ্যাত শিল্পকর্ম মাইকেলেঞ্জেলোর 'ডেভিড'-এর মূর্তিকে পর্নোগ্রাফির তকমা দেওয়া হল। রেনেসাঁ পড়াতে গিয়ে এই মূর্তির ছবি দেখানোর জন্য চাকরি গেল এক স্কুলের শিক্ষিকার।

Michelangelo’s David: মাইকেলেঞ্জেলোর 'ডেভিড' নাকি পর্নোগ্রাফি! পড়িয়ে চাকরি গেল প্রধান শিক্ষিকার
মাইকেলেঞ্জেলোর 'ডেভিড' (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 26, 2023 | 6:55 PM

ওয়াশিংটন: ইতালিয় শিল্পী মাইকেলেঞ্জেলোর ভাষ্কর্য, ‘ডেভিড’ বাদ দিয়ে রেনেসাঁ যুগ কল্পনাই করা যায় না। মূর্তিটি আসলে বাইবেলের এক ব্যক্তিত্বের সম্পূর্ণ নগ্ন মূর্তি। শৈল্পিক মূল্যের জন্য গোটা বিশ্বে বিখ্যাত এই মূর্তিকেই পর্নোগ্রাফির তকমা দেওয়া হল। ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেনেসাঁ পড়ানোর সময়, ছাত্রছাত্রীদের এই মূর্তির ছবি দেখানোর জন্য ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে। বিবিসি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পর্নোগ্রাফিক ছবি দেখানো হয়েছে। অন্যান্য অভিভাবকরা এতটা চরমপন্থী অবস্থান না নিলেও, জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে এই ছবি দেখানোর আগে তাঁদের জানানো উচিত ছিল। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি কোনও তৃতীয় বিশ্বের দেশের নয়, ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা প্রদেশের টালাহাসিতে।

টালাহাসি ক্লাসিক্যাল স্কুলে, মাইকেলেঞ্জেলোর ‘ডেভিড’-এর ছবি দেখানো নিয়ে বিতর্কের পরই প্রধান শিক্ষিকা হোপ ক্যারাসকুইলাকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁর দাবি, স্কুল বোর্ডের পক্ষ থেকে তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। সাফ জানানো হয়, হয় তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে, নাহলে তাঁকে বরখাস্ত করা হবে। হোপ ক্যারাসকুইলা আরও জানিয়েছেন, তাঁকে কেন পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে, তার কোনও কারণ জানানো হয়নি। তবে, তাঁর মতে ‘ডেভিড’ বিতর্কই তাঁর চাকরি খোয়ানোর মূল কারণ। সিএনএন-কে তিনি বলেছেন, “বোর্ডের চেয়ারম্যান আমাকে নিয়ে অখুশি ছিলেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, স্কুলের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে সবসময় যে তিনি সব নীতি এবং পদ্ধতি মেনে চলতেন, তা নয়। তবে এর আগে এই নিয়ে তাঁকে কিছু বলা হয়নি।

তবে তাঁর সঙ্গে একমত নন স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান তৃতীয় বার্নি বিশপ। তাঁর দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের স্কুলের এক ভিন্ন দিকে এগোনোর প্রয়োজন পড়েছে। তাই তাঁরা নেতৃত্বে বদল ঘটিয়েছেন। বার্নি বলেছেন, “মাইকেলেঞ্জেলোর ডেভিডের ছবি দেখানোর জন্য তাঁকে সরানো হয়নি। আড়াই বছর ধরে আমাদের এই স্কুল চলছে। প্রতি বছরই ক্লাস সিক্সের রেনেসাঁ আর্ট ক্লাসে আমরা ডেভিডের ছবি দেখাই। ছাত্রছাত্রীদের রেনেসাঁ পড়ানো হয়। এই বছর সমস্যা হয়েছে যে, এই ক্লাস নেওয়ার আগে অভিভাবকদের জানানো হয়নি। আমরা ডেভিডের ছবি নিষিদ্ধ করছি না। গত বছর অধ্যক্ষ অভিভাবকদের এই বিষয়ে একটি নোটিস পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এই বছর এই প্রোটোকল মানা হয়নি। এটা গুরুতর ভুল। তাদের সন্তানকে যখনই কোনও বিতর্কিত বিষয় বা এবং ছবি শেখানো হচ্ছে, তখন অভিভাবকদের তা আগে থেকে জানার অধিকার আছে।”

উল্লেখ্য়, সম্প্রতি ফ্লোরিডার ডানপন্থী গভর্নর রন ডিসান্টিস একটি আইন প্রণয়ন করে সরকারি স্কুলগুলিতে যৌন শিক্ষা এবং লিঙ্গ পরিচয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছেন। যেসব শিক্ষক এই আইন মানবেন না, তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে অথবা তাদের শিক্ষাদানের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। এই আইনের সঙ্গে হোপ ক্যারাসকুইলার পদত্যাগের সরাসরি কোনও সম্পর্ক না থাকলেও, মার্কিন শিক্ষাবিদদের মতে, এই নয়া আইন ফ্লোরিডার শিক্ষাজগতে এক রক্ষণশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। আর সেই কারণেই ডেভিডের মতো আইকনিক মূর্তিকেও পর্নোগ্রাফির তকমা দেওয়া হচ্ছে। রেনেসাঁর শিক্ষাদানের জন্য প্রধান শিক্ষিকাকে পদত্যাগ করতে হচ্ছে।