Ashraf Ghani on Fleeing Afghanistan: ‘বলির পাঁঠা হয়েছিলাম আমি’, কেন ২ মিনিটেই আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন, জানালেন ঘানি
Ashraf Ghani on Fleeing Afghanistan: তালিবান অভ্যুত্থানের মুখে গোটা দেশবাসীকে বিপদের মুখে ছেড়ে পালিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি।
লন্ডন: মাত্র দুই মিনিটেই নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশ ছেড়ে পালানোর! আফগানিস্তানে (Afghanistan) যখন তালিবান (Taliban) অভ্যুত্থান হচ্ছিল, সেই সময়ে গোটা দেশবাসীকে বিপদের মুখে ছেড়ে পালিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি(Ashraf Ghani)। এবার পালানোর কাহিনীই শোনালেন নিজের মুখে।
মাত্র দুই মিনিটেই সিদ্ধান্ত:
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রেডিও চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি জানান কীভাবে হঠাৎই দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছিল তাঁকে। তালিবান(Taliban)-র জুতোর শব্দেই মনে যে ভয় তৈরি হয়েছিল, তার জেরেই প্রাসাদ ছেড়েছিলেন তিনি। মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছিল, বিমান টেক অফ করার আগের মুহূর্ত অবধি জানতেন না যে তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। “গত ১৫ অগস্ট সকালে তালিবানিরা যখন রাজধানী কাবুলের দখল নেয়, সেই সময়ও জানতাম না যে নিজের দেশে এটাই শেষ দিন হতে চলেছে, কিন্তু দুপুরের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির প্রাসাদের পতন হয়।”, এমনটাই দাবি ঘানির।
“আমি উঠে দাড়ালেই খুন হতাম”:
বিপদের মুহূর্তে দেশ ছাড়ার জন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়লেও, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি বলেন, “আমি যদি সেই দিন ঘুরে দাঁড়াতাম, তবে সঙ্গে সঙ্গে খুন হতাম। কারোর ক্ষমতা ছিল না আমায় রক্ষা করার। আমার নিরাপত্তা পরামর্শদাতা হামদুল্লাহ মোহিব ভয়ে কাঁপছিল। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য় আমায় মাত্র দুই মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল। ”
ঘানি জানান, প্রথমে পরিকল্পনা ছিল হেলিকপ্টার করে দক্ষিণ পূর্ব খোস্ত শহরে যাওয়ার। কিন্তু খোস্ত শহরেরও পতন হয়। পাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া জালালাবাদ শহরেরও পতন হয়েছিল। তিনি কোথায় যাবেন, বুঝতে পারছিলেন না। যখন হেলিকপ্টার টেক অফ করে, তখনই তিনি বুঝতে পারেন যে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পর থেকেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অতিথি হিসাবে রয়েছেন আসরাফ ঘানি। তালিবানের তরফে তাঁকে দেশে ফিরে আসার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, সেই প্রস্তাব তিনি স্বীকার করেননি।
কাবুলকে বাঁচাতে আত্মত্য়াগ করেছিলাম:
দেশ ছাড়া ও বিপুল টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়েছেন প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি বারংবারই দাবি করেছিলেন যে, খালি হাতেই তিনি দেশ ছেড়ে চলে এসেছেন। হেলিকপ্টার বোঝাই টাকা তো দূরের কথা, ঘরের জুতো টুকু বদলানোর সময় পাননি বলেও তিনি দাবি করেছিলেন আগে। বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারেও তিনি একই সাফাই দেন।
গতকালের সাক্ষাৎকারে ঘানি বলেন, “কাবুলে যাতে রাস্তায় রক্তগঙ্গা না বয়ে যায়, সেই কারণেই দেশ ছেড়েছিলাম। আমার কাছে অন্যতম কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল এটা। কাবুলকে রক্ষা করতে এবং দেশের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সকলের সামনে তুলে ধরতেই আত্মত্যাগ করতে হয়েছিল আমাকে।”
ঘানির দাবি, তিনি যদি দেশে থেকে যেতেন, তবুও তালিবানের হাত থেকে রক্ষা করতে পারতেন না। তিনি বলেন, “দুঃখজনকভাবে আমাকেই শুধু কালিমালিপ্ত করা হল। এটা আর আফগানিস্তানের ইস্যু নয়, বরং আমেরিকার ইস্যুতে পরিণত হল। আমার গোটা জীবনের কাজ ধ্বংস হয়ে গেল, আমায় বলির পাঁঠা বানানো হল।”