Fiber Optic Drone: রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে ‘ফাইবার অপটিক ড্রোন।’ কতটা মারাত্মক এই নয়া ড্রোন?
ফাইবার অপটিক কেবল ড্রোন। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের নয়া সামরিক অস্ত্র। আতঙ্কের নয়া নাম। প্রথমে রাশিয়া একাই ব্যবহার করত, এখন ইউক্রেনও শিখে গেছে।

এক হাজার দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার নামই নিচ্ছে না। প্রায় নিত্যদিনই এই যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন নতুন সামরিক অস্ত্র। একটা অন্যটার চেয়ে আরও বেশি মারাত্মক। এবার রুশ সেনা ইউক্রেনের শহরে ‘ফাইবার অপটিক ড্রোন’ হামলা শুরু করেছে।
ইউক্রেনের ছোট ছোট শহরে ফাইবার অপটিক কেবলে ড্রোন বেঁধে পাঠাচ্ছে রুশ সেনা। এইরকম ড্রোন হামলা আগে দেখেনি ইউক্রেনের সেনা। ইউক্রেনের সেনাঘাঁটি, শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং, এমনকী সেনার গাড়ি দেখতে পেলেও সেখানে এই ড্রোন পাঠাচ্ছে মস্কো। তবে হাল ছাড়তে নারাজ ইউক্রেনও। তারাও পাল্টা দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি তারাও পাল্টা ফাইবার অপটিক ড্রোন হামলা শুরু করেছে। ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের ‘আনম্যানড সিস্টেম ব্যাটেলিয়ন’-এর টুয়েলভথ স্পেশ্যাল ফোর্স ব্রিগেড ফাইবার অপটিক কেবলে বেঁধে হামলাকারী ড্রোন পাঠাচ্ছে রুশ সেনাকে লক্ষ্য করে।
কীভাবে এই ড্রোন কাজ করে?
সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে ১০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের ফাইবার অপটিক কেবলের সঙ্গে এক একটি বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন বেঁধে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, কোনওরকম ইলেকট্রিকের ব্যবহার নেই বলে এই ড্রোন থেকে কোনও সিগন্যাল বেরোয় না। ড্রোনগুলি ছোট, ব্যাটারিতে ওড়ে। ইলেকট্রিকের ব্যবহার নেই, ফলে শত্রুর রেডার হাজার আধুনিক হলেও ধরা পড়ার প্রশ্নই নেই। এইরকম প্রতিটি ড্রোন ‘রেডিও সাইলেন্স’ অবলম্বন করে। একজন ড্রোন পাইলট দূর থেকে বসে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ড্রোনটি অপারেট করেন। সাধারণত, ড্রোনকে অকেজো করতে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। মিসাইলগুলি শত্রুর ড্রোনের রেডিও সিগন্যালকে লক্ষ্য করে ছুটে যায়। একবার ভাবুন, যদি এই রেডিও সিগন্যাল-ই না থাকে, তাহলে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও কোনও কাজে লাগে না। কেউ যদি অপটিক কেবল কেটে দিতে যায়, ক্যামেরায় সেটা দেখতে পেয়ে সেই মুহূর্তেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেওয়া হয়। আর আকাশে কোথায় সরু অপটিক কেবল রয়েছে, দেখতে পাওয়াও দুঃসাধ্য। সঙ্গে রয়েছে ড্রোনের ধারাল টাইটেনিয়াম ব্লেডের ধার। কেউ কাছাকাছি গেলে তাঁর আস্ত হাতটাই কেটে যেতে পারে।
প্রথমে এই ড্রোন শুধুমাত্র নজরদারি, তথ্য সংগ্রহ করতে ব্যবহার করত মস্কো। কিন্তু ২০২৪ থেকে রুশ সেনা হামলা চালাতেও এই প্রথাগত ড্রোন ব্যবহার শুরু করে। রাশিয়ার দেখাদেখি ইউক্রেনের সেনাও সম্প্রতি এই অপটিক কেবল ড্রোন ব্যবহার করছে। তবে এই ড্রোনের কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। কেবলের মাধ্যমে যায় বলে ১০ বা ২০ সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটারের বেশি এগুলি যেতে পারে না। অপটিক কেবল গাছে জড়িয়ে গেলে ড্রোনটি লক্ষ্যে পৌঁছনোর আগেই নষ্ট হয়ে যায়। বেশি উঁচুতে উড়তে পারে না এই ধরণের ড্রোন। যায়ও ধীরে। কিন্তু এর উপস্থিতি টের পাওয়া অসম্ভব হলে এখন রাশিয়া এই ড্রোন বেশি ব্যবহার করছে।





