নিউইয়র্ক: পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিন(China)। আন্তর্জাতিক স্তরে বর্তমানে ভারতের মাথাব্যথা এই তিন দেশ। আর রাষ্ট্রপুঞ্জের (UN) সাধারণ সম্মেলনে ভাষণ দিতে উঠে এই তিন দেশকেই তিন ভাবে বার্তা দিলেন নমো (Narendra Modi)। গত বছর গালোয়ান ঘাঁটিতে গিয়ে চিনের সম্প্রসারণ নীতিকে এক হাত নিয়েছিলেন তিনি। শনিবারও নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে মোদীর কণ্ঠে আবারও উঠে এল সেই ‘সম্প্রসারণ প্রসঙ্গ’। সমুদ্রপথকে সুরক্ষিত রাখার কথা বলতে গিয়ে তিনি এই প্রসঙ্গ টেনে আনেন। চিনের নাম মুখে উচ্চারণ না করেই মোদী বলেন, “আমাদের সমুদ্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লাইফলাইন। একে সম্প্রসারণের কবল থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।”
ক্রমশ বদলাতে থাকা আন্তর্জাতিক পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য ধরে রাখতে ও নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধি করতে এ দিন রাষ্ট্রপুঞ্জের কার্যপদ্ধতিতেও সংস্কার আনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সময়ের কাজ সময়ে করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে চাণক্যের একটি শ্লোক বলেন মোদী। এর পরই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “রাষ্ট্রপুঞ্জ যদি প্রাসঙ্গিকতা না হারাতে চায়, তবে নিজেদেরকে আরও কার্যকরি করে তুলতে হবে। আরও আস্থাশীল হতে হবে।”
মোদী বলে চলেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা নিয়ে আজকাল প্রচুর প্রশ্ন উঠছে। জলবায়ু সঙ্কট, কোভিড বিপর্যয়, সন্ত্রাসবাদ সমস্যা এবং সম্প্রতি আফগানিস্তানের পরিস্থিতিও বড় প্রশ্ন খাড়া করে দিয়েছে। কোভিডের উৎস সন্ধানের বিষয়টিও কয়েক দশকের প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া সংস্থার উপর প্রশ্নচিহ্ন তুলেছে। তাই বিশ্বব্যাপী আইন, মূল্যবোধ এবং শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে রাষ্ট্রপুঞ্জের কার্যপদ্ধতিতে নিরন্তর সংস্কার আনার প্রয়োজন রয়েছে।”
চিনের পাশাপাশি সমানভাবে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানকেও বার্তা দিয়ে রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, কেউ যেন সন্ত্রাসবাদের সম্প্রসারণ ঘটানোর জন্য সেই দেশের মাটি ব্যবহার না করে। যেই বক্তব্য আসলে পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করেই ছিল, এটা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময় নমো এ দিন বলেন, “যেই দেশ সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তাদের বুঝতে হবে যে সন্ত্রাসবাদ ওদের জন্যও একইভাবে বিপজ্জনক। আফগানিস্তানের মাটির ব্যবহার যেন সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো, এবং জঙ্গি হামলার জন্য ব্যবহার না করা হয়। এটা সুনিশ্চিত করতে হবে আমাদের। কোনও দেশ যাতে নিজের স্বার্থে আফগানিস্তানের স্পর্শকাতর পরিস্থিতিকে ব্যবহার না করে, সেই নিয়ে সতর্কতাও অবলম্বন করা আবশ্যক। কোনও দেশ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে এই পরিস্থিতিকে নিজের ফায়দার জন্য ব্যবহার না করে।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে একদিকে যেমন পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্নভাবে তিনি সমঝে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। একই সঙ্গে আফগানিস্তানের শাসক তালিবানকেও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তারাও যেন পাকিস্তানকে কোনও ভাবে প্রশ্রয় না দেয়।
আরও পড়ুন: Narendra Modi at UN: ‘আসুন, ভারতে টিকা তৈরি করুন’, বিশ্বের টিকাপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে ডাক নমোর