Osama Bin Laden: লাদেনের হাত থেকে ‘বেঁচে’ কীভাবে হয়েছিলেন চিত্রশিল্পী, জানালেন তাঁরই পুত্র ওমর
Osama Bin Laden's son Omar: নিজের চতুর্থ পুত্র ওমরকেই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিয়েছিল ওসামা বিন লাদেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে না থেকে ফ্রান্সে পালিয়েছিলেন তিনি।
লন্ডন: নিজের চতুর্থ পুত্র ওমরকেই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিয়েছিল ওসামা বিন লাদেন (Osama Bin Laden)। ছোটবেলাতেই তাঁকে বন্দুক চালানোর শিক্ষা দিয়েছিল প্রাক্তন আল কায়দা প্রধান। শুধু তাই নয়, পুত্রের পোষা কুকুরের উপরই সে পরীক্ষা করত ভয়ঙ্কর রাসায়নিক অস্ত্র। তবে ওমর, ওসামার হিংস্রতা সহ্য করতে পারেননি। বাবাকে ছেড়ে, বাবার সন্ত্রাসবাদের পথ ছেড়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন শান্তির খোঁজে। আজ তিনি ফ্রান্সে থাকেন। পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। সম্প্রতি, ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য সান’কে এই সাক্ষাৎকারে ওমর জানিয়েছেন, আল কায়দা প্রধানের পুত্র হিসেবে তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।
বয়স তাঁর এখন ৪১। ১৯৮১ সালে, সৌদি আরবে বিন লাদেনের প্রথম স্ত্রী নাজওয়ার গর্ভে জন্ম হয়েছিল তাঁর। বর্তমানে তিনি তাঁর থেকে বয়সে ২৫ বছরেরও বড় স্ত্রী জ়াইনাকে নিয়ে ফ্রান্সের নর্মান্ডিতে থাকেন। তবে, এখনও ওমর পিছনে ফেলতে পারেননি তাঁর শৈশবকালের বিভীষিকাকে। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, একই সময়ে ওমর তাঁর বাবাকে ভালবাসেন, আবার তার কৃতকর্মের জন্য ঘৃণাও করেন। এখনও প্যানিক অ্যাটাক হয় ওমরের। আর এই মানসিক ধাক্কা সামলাতেই তিনি হাতে তুলে নিয়েছেন রং-তুলি। আজ তাঁর একেকটি ক্যানভাস বিক্রি হয় প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকায়।
ওমর জানিয়েছেন, তাঁর বাবা তাঁকে বলেছিল, তিনিই তার যোগ্য উত্তরসূরি। মনে মনে সে চাইত, তার পর ওমরই আল কায়েদার দায়িত্ব নিক। কিন্তু কখনই সে ওমরকে সরাসরি আল কায়েদায় যোগ দিতে বলেনি। কিন্তু,নিঃশব্দে সন্ত্রাসবাদের শিক্ষা দিতে শুরু করেছিল। ওমর জানিয়েছেন, তাঁর পোষা কুকুরের উপরই রাসায়নিক অস্ত্র পরীক্ষা করত ওসামা। ওমর বলেছেন, “আল কায়েদা সদস্যদের আমি নিজের চোখে দেখেছিলাম রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে। ওরা আমার কুকুরের উপর ওই অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল। তাতে আমি খব রেগে গিয়েছিলাম। ওই খারাপ সময়ের সব স্মৃতি ভুলে যেতে চাই, কিন্তু বিষয়টা সহজ নয়।”
osama bin laden’s son, omar, throws more fits than a baby ??? pic.twitter.com/v5xASmZwra
— BCG: King Of The E-Girls (@bigcontentguy) December 1, 2022
এরপরই আফগানিস্তান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওমর। ২০০১ সালের এপ্রিলে, ৯/১১ হামলার কয়েক মাস আগেই আফগানিস্তানের আল কায়েদা ঘাঁটি ছেড়েছিলেন ওমর। পিছনে ফেলে এসেছিলেন সন্ত্রাসবাদীর জীবন। তাতে একেবারেই খুশি হয়নি ওসামা। ওমর বলেছেন, “আমি বিদায় জানিয়েছিলাম। তিনিও বিদায় জানিয়েছিলেন। আমি আর ওই বিশ্ব সহ্য করতে পারছিলাম না। আমি চলে যাচ্ছি শুনে তিনি একেবারেই খুশি হননি।”
কিন্তু, সন্ত্রাসবাদীর জীবনে অনিচ্ছুক এই পুত্রকেই কেন তার উত্তরসূরি বেছে নিয়েছিল ওসামা বিন লাদেন? ওমর বলেছেন, “আমি জানি না। হয়তো আমি বেশি বুদ্ধিমান ছিলাম। সেই কারণেই হয়তো আমি আজও জীবিত আছি।” ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে এক বিশেষ সামরিক অভিযানে ওসামাকে হত্যা করেছিল মার্কিন বাহিনী। সেই সময়ে কাতারে ছিলেন ওমর। তারপর এক মার্কিন রণতরী থেকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়েছিল ওসামার দেহ, এমনটাই জানিয়েছিল মার্কিন বাহিনী। তবে, ওসামার শেষ পরিণতির এই তত্ত্ব মানেন না ওমর। তাঁর মতে, মার্কিন বাহিনী নিশ্চিতভাবে ওসামার দেহ নিয়ে গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।