১০ দিন পার হলেও, থামার নাম নেই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। দশম দিনেও লাগাতার গোলাবর্ষণ চলছে রাজধানী কিয়েভে। খেরসনের পর এবার মারিউপোল দখলেরও চেষ্টা চলছে। এদিকে, ন্যাটোর তরফে ইউক্রেনে নো-ফ্লাই জ়োন ঘোষণা করতে অস্বীকার করায়, ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। ইউক্রেনীয়দের মৃত্যুর দায়ভার ন্যাটোর উপর বর্তাবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও পারমাণবিক হামলা নিয়েন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
ইউক্রেনে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয় পড়ুয়া। তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে তৎপর কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার ভারতীয়কে উদ্ধার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে যাতে কোনও খামতি না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার রাতেই তিনি জরুরি বৈঠকে বসছেন বলে জানা গিয়েছে। শনিবার কেন্দ্রের তরফে জানোনো হয়েছে মূলত ইউক্রেনের সামি শহর থেকে ৭০০ পড়ুয়াকে উদ্ধার করাই আপাতত কেন্দ্রের মূল লক্ষ্য। ওই শহরে রাশিয়া বোমা ফেলছে বলে জানা গিয়েছে। এরপরই ওই শহরে আটকে থাকা পড়ুয়াদের সতর্ক করেছে কেন্দ্র।
ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিপুল খরচ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ অর্থনীতি ব্যাপক চাপের মুখে। রাশিয়া যে এই অর্থনৈতিক চাপে ভাল নেই শনিবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথা থেকে প্রমাণিত হয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত ছাড়া আর কিছুই নয়। রীতিমতো হুঁশিয়ারির ঢঙে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনে ‘নো-ফ্লাই জ়োন’ ঘোষণা করলে ফল মারাত্মক হতে পারে। পুতিনে জানিয়েছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষী মানুষদের রক্ষা করাই তার প্রধান কাজ।
বিস্তারিত পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: পশ্চিমী দেশগুলিকে নিশানা করে কি ‘আরও বড় যুদ্ধ’ শুরুর ইঙ্গিত দিলেন পুতিন?
অপারেশন গঙ্গা’-র আওতায় ৩ হাজার ভারতীয়কে ইউক্রেনের প্রতিবেশি দেশগুলি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ১৫ টি বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এরমধ্য ১২ টি যাত্রীবাহী বিমান ও ৩ বায়ুসেনা বিমান ছিল বলেই জানা গিয়েছে। আজকের ৩ হাজার জনকে অন্তর্ভুক্ত করলে এখনও অবধি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে মোট ১৩ হাজার ৭০০ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখ থেকেই এই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল কেন্দ্র। এখনও অবধি ৫৫ টি যাত্রীবাহী বিমানে মোট ১১ হাজার ৭২৮ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং বায়ু সেনার বিশেষ বিমানে ২ হাজার ৫৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ইউক্রেনে সামি শহরে আটকে থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ভারত। টুইটে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছন, “সামিকে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা রাশিয়া ও ইউক্রেন সরকারকে অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির মাধ্যমে আমাদের পড়ুয়াদের নিরাপদে বের করে আনার করা কথা জানিয়েছি। আমদের ছাত্রদের নিরাপদ স্থানে থেকে অযথা ঝুঁকি না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Have advised our students to take safety precautions, stay inside shelters and avoid unnecessary risks.
Ministry and our Embassies are in regular touch with the students.
— Arindam Bagchi (@MEAIndia) March 5, 2022
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে বিধ্বস্ত অবস্থা ইউরোপের এই ছোট দেশের। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভারত থেকে শয়ে শয়ে পড়ুয়া সেদেশে গিয়েছিল। তবে রাশিয়ান আক্রমণের কারণে প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই দেশে ফিরে এসেছেন। এখনও অনেকেই ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। কিন্তু দেশে ফিরে আসা মেডিক্যাল পড়ুয়ারা তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কতদিন ধরে চলবে তার কোনও ঠিক নেই, তাই অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়া পড়াশুনা শেষ না করলে ভবিষ্যতে তার কী পরিণতি হবে সেই নিয়েই আতঙ্কে ছিলেন পড়ুয়ারা। এবার তাদের পাশে দাঁড়াতেই এগিয়ে এল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। ন্যাশানাল মেডিক্যাল কমিশন সবরকমভাবে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানতেন, আমেরিকা নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর সদস্যপদ যদি ইউক্রেন পেয়ে যায় তবে, রুশ সীমান্তের আমেরিকার নিঃশ্বাস অনিবার্য। সেই কারণ প্রথমে সেনা মোতায়েন করে কূটনৈতিক চাপ এবং পরবর্তী সময়ে সটান ইউক্রেন আক্রমণ করে বসেন পুতিন। তবে বারবার ন্যাটোর সাহায্য প্রার্থনা করলেও যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ থেকে ন্যাটো বিরত থাকে। এমনকী জ়েলেনস্কির আবদেন প্রত্যাখান করে ইউক্রেনে ‘নো-ফ্লাই জ়োন’ ঘোষণা করেনি ন্যাটো।
বিস্তারিত পড়ুন TV9 Explained on No-fly Zone: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ‘নাটের গুরু’ ন্যাটো, তবু কেন ‘নো-ফ্লাই জ়োন’ আরোপ করল না ইউক্রেনের ওপর?
ফুটবল। এই খেলার সঙ্গে অনেক আবেগ জড়িয়ে। গোলাকৃতির একটি বলের পিছনে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালবাসা জড়িত। তবে তথাকথিতভাবে ফুটবল বলতে আমরা যা বুঝি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সেই সংজ্ঞাটা আলাদা। আমেরিকাতে রাগবিকে ফুটবল বলা হয়। সাধারণভাবে আমরা যাকে ফুটবল বলি, মার্কিনীরা তাকে বলে ‘সকার’। কিন্তু, মার্কিন প্রশাসনে ফুটবল শব্দের মানে আলাদা। এই ফুটবলের সঙ্গে খেলার কোনও সম্পর্ক নেই। এই ‘ফুটবল’ একটি চামড়ার ঝোলা। তার ভিতরে থাকে অ্যালুমিনিয়ামের মোটা ফ্রেম থাকে। ওই মোটা ফ্রেমের ভিতরে কী থাকে? তা জানলে অনেকেই অবাক হবেন অনেকে, তবে ভিতরে থাকা বস্তুর সঙ্গে অবশ্যই ফুটবল নামের সাদৃশ্য রয়েছে। ওই পদার্থের নাম নিউক্লিয়ার ফুটবল বা অ্যাটমিক ফুটবল।
বিস্তারিত পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: একটি ‘ফুটবলে’ যাবতীয় পরমাণু অস্ত্র পুরে রেখেছে আমেরিকা, জানলে অবাক হবেন…
মারিউপোল থেকে জ়াপোরঝিয়ার পথ ধরেই সুরক্ষিতভাবে বের করে আনা হবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে। জানা গিয়েছে, শহরের তিনটি বাসস্ট্যান্ড থেকে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী বাস ছাড়বে। এছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও যাতায়াত করতে দেওয়া হবে। সিটি কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়েছে, বাসে যথাসম্ভব যাত্রী যেন তোলা হয় এবং প্রশাসনোর তরফে যে নির্দিষ্ট রুট বেধে দেওয়া হয়েছে, তা অনুসরণ করেই চলা হয়।
বেলারুশের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে সাধারণ মানুষদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে আনার জন্য মানবিক করিডর তৈরি করা হবে। সেই প্রস্তাব মেনেই আজ রাশিয়ার তরফে সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করা হয়েছে। আপাতত সাড়ে ৫ ঘণ্টার জন্য এই বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: Russia Announces Ceasefire: বেলারুশের বৈঠকেই গলল বরফ, সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার
চলতি সপ্তাহেই খেরসন শহর দখল করে নেয় রুশ সেনা। এবার বন্দর শহর মারিউপেল দখলেরও চেষ্টা শুরু করল রাশিয়া। শনিবারই ওই শহরের মেয়র জানিয়েছেন, বিগত কয়েকদিন ধরেই নির্মমভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করছে তারা, আটকে দেওয়া হয়েছে শহর থেকে বেরনোর সমস্ত পথও। এই কঠিন পরিস্থিতিতে শহরবাসীর সুরক্ষার কথা ভেবো দ্রুত মানবিক করিডর তৈরির আর্জি জানালেন মেয়র।
দশম দিনেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপরে আক্রমণ থামায়নি রাশিয়া। খারকিভ সহ একাধিক শহরেও লাগাতার সংঘর্ষ চলছে ইউক্রেনীয় ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে।
গতকালই জ়াপোরঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়ার বাহিনী। এরপরই রাষ্ট্রসঙ্ঘের বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ভারত। বৈঠকে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি (TS Tirumurti) বলেন, “পরমাণু কেন্দ্রে কোনও প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৃতির উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে”।
ইউক্রেনের শহরগুলির উপর লাগাতার গোলাবর্ষণ করছে রাশিয়া, এ কথা মানতে নারাজ খোদ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-ই। শুক্রবারই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কলজ়(Olaf Scholz)-র সঙ্গে ফোনে বার্তালাপ চলাকালীন পুতিন দাবি করেন যে রাশিয়া মোটেও ইউক্রেনের শহরের উপরে গোলাবর্ষণ করছে না, এই খবর ভুয়ো। শুক্রবার ক্রেমলিনের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: Putin on Ukraine Attack: জেলেনস্কির প্রস্তাবে সাড়া, আলোচনায় বসতে রাজি পুতিন! তবে শর্ত একটাই…