AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মুখে মুচকি হাসি, হাত মেলাচ্ছেন পথ চলতি মানুষদের সঙ্গে! বিমানবন্দর দখল নিতেই ভিন্ন রূপ তালিবানের

মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া স্পেশাল কমব্যাট ফোর্সের পোশাক পরেই তালিব বাহিনীকে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা হেলিকপ্টারগুলির ভিতরে ঢুকতে ও যন্ত্রপাতি ঘাটাঘাটি করে তা ওড়ানোর চেষ্টা করতেও দেখা যায়।

মুখে মুচকি হাসি, হাত মেলাচ্ছেন পথ চলতি মানুষদের সঙ্গে! বিমানবন্দর দখল নিতেই ভিন্ন রূপ তালিবানের
ফাইল ছবি
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 12:05 PM
Share

কাবুল: হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আর শোনা যাচ্ছে না মার্কিন বাহিনী বা অন্য দেশের সেনাবাহিনীর বুটের শব্দ। চারিদিকে কেবলই তালিবানের উল্লাস। তাড়াহুড়োয় দেশ ছাড়তে হয়েছে মার্কিন বাহিনীকে। কয়েকমাস আগে থেকেই সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু করলেও বিগত এক মাসে আফগানিস্তানের যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, সামরিক বিমান ফেলে আসতে হয়েছে বাইডেন বাহিনীকে। বিমানবন্দর খালি হতেই একদিকে যেমন বুক চিতিয়ে তালিবান নেতাদের ঘুরতে দেখা গেল, তেমনই আবার শক্তি বাড়ানোর লোভে ফেলে যাওয়া বিমানগুলি চালু করার চেষ্টা করতেও দেখা গেল।

৩০ অগস্টের মধ্য রাতেই মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়েছে। শেষ বিমান ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলির শব্দে তালিবান বাহিনীর উল্লাসের টের পাওয়া যায়। তালিবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০ বছর পর পূর্ণ স্বাধীনতা পেল আফগানিস্তান। তাই রাতের আকাশে বাজি ফাটিয়ে সেই ‘স্বাধীনতা’ উদযাপন করছে তারা।

মঙ্গলবার সকালেই দেখা যায়, তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ একজন সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে বিমানবন্দরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া স্পেশাল কমব্যাট ফোর্সের পোশাক পরেই তালিব বাহিনীকে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা হেলিকপ্টারগুলির ভিতরে ঢুকতে ও যন্ত্রপাতি ঘাটাঘাটি করে তা ওড়ানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। তালিবানের “বাদরি ৩১৩” নামক স্পেশাল ফোর্সের গোটা বাহিনীকেই ছবি তুলতে দেখা যায়, তালিবানের সাদা পতাকা এবং মার্কিন রাইফেল হাতে তাদের হাসিমুখে ছবি তুলতে দেখা যায়।

ককপিটে বসে ছবি তুলছেন তালিব বাহিনীর সদস্য।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল পুরোপুরি তছনছ হয়ে গিয়েছে। প্রবেশপথের সামনেই বুলেটের খোলও দেখা যায়। মঙ্গলবারই বিমানবন্দরের যাওয়ার রাস্তা থেকে চেকপোস্ট, বার সরিয়ে নেওয়া হয়। খোশ মেজাজে দেখা যায় তালিবান বাহিনীকেও। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীদের সঙ্গেও হাত মেলাতে দেখা যায় তাদের।

ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তালিবানের তরফে বারংবার জানানো হয়েছে যে বিমানবন্দরের সুরক্ষা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৩১ অগস্টের পর তারা অন্য কোনও দেশের সামরিক বাহিনীকে বিমনানবন্দরে থাকতে দেওয়া হবে না। প্রথমে মার্কিন বাহিনীর আরও কিছুদিন থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও গত সপ্তাহে বিমানবন্দরের বাইরেই আইসিস-কে পরপর দুটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ এবং পরদিনও রকেট হামলার পরই সিদ্ধান্ত বদল করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উদ্ধারকার্য শেষ করা ও সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে বিমানবন্দর ছাড়ায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, সামরিক বিমান, হেলিকপ্টার ফেলে আসতে হয়েছে। তবে বোকা নয় মার্কিন বাহিনীও। তালিবানের হাতে এই বিমান গেলে বড় বিপদ হতে পারে, এই আশঙ্কায় তারা আফগানিস্তান ছাড়ার আগে সমস্ত বিমান, অস্ত্রশস্ত্র বিকল করে দেওয়া হয়েছে।

সেন্ট্রাল কম্যান্ড হেড জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজ়ি জানান, ৭৩ টি বিমানকে সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ককপিটের সমস্ত কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে , বিমানের টায়ারও গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, গত ১৪ অগস্ট উদ্ধারকার্য শুরু হওয়ার পরই ৬ হাজার বাহিনী উপস্থিত ছিল। তবে ফেরার সময় ২৭টি হামভিস, ৭০টি সশস্ত্র ট্যাকটিকাল গাড়ি ফেলে আসা হয়েছে। এছাড়াও সি-র্যাম সিস্টেম, কাউন্টার রকেট, মর্টার, গুলি ফেলে আসা হয়েছে। আরও পড়ুন: আফগানিস্তানেই ঘাপটি মেরে বসে আছে ২৫ ‘ওয়ান্টেড’, আইসিসের সঙ্গেও রয়েছে যোগাযোগ! দাবি গোয়েন্দাদের