AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

হাতে বন্দুক নিয়েই চাপল নাগরদোলায়! আফগানবাসীর কান্নাতেও জয়ের আনন্দ তালিবানিদের

তালিবানরা মুখে নারী শিক্ষা ও সুরক্ষার কথা বললেও কাবুল দখলের পরই দেখা যায়, বোরখাহীন যাবতীয় মহিলার পোস্টার, ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বা সাদা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে খুন হওয়ার ভয়ে বোরখার দোকানগুলিতেও মহিলাদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।

হাতে বন্দুক নিয়েই চাপল নাগরদোলায়! আফগানবাসীর কান্নাতেও জয়ের আনন্দ তালিবানিদের
কাবুলে বিনোদন পার্কে তালিবানরা।
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2021 | 2:50 PM
Share

কাবুল: যা লক্ষ্য ছিল, তা পূরণ হয়েছে রবিবারই। তাই এখন ‘ফূর্তি’র সময়। সোমবার কাবুলের একটি বিনোদন পার্কে তালিবানিদের বিভিন্ন রাইড চড়তে দেখে এই বার্তাই পেল বিশ্ববাসী। টুইটারে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, হাতে অস্ত্র নিয়েই ইলেকট্রিক বাম্পার গাড়িতে চড়ছেন। অপর একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, ছোট্ট একটি নাগরদোলায় চড়ছেন তারা।

যেখানে গোটা আফগানিস্তান জুড়ে কেবল সাধারণ মানুষদের কাতর আর্তি ও অসহায়ভাবে ছোটাছুটির দৃশ্যই নজরে এসেছে, সেখানেই মজায় দিন কাটাচ্ছেন তালিবানিরা। সাংবাদিকদের হাত থেকে বুম কেড়ে নিয়ে পথ চলতি মানুষদের প্রশ্ন করছেন, তা্লিবান শাসনের অধীনে এসে কতটা খুশি তারা? বন্দুক হাতে তালিবান বাহিনীর এ হেন প্রশ্নের মুখে পড়ে বাধ্য় হয়েই ঘাড় নাড়িয়েছেন সাধারণ মানুষ। বেগোরবাই করলেই যদি প্রাণ হারাতে হয়?

জ়াবিউল্লাহ নামক এক ব্যক্তির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিয়ো পোস্ট করা হলেও সূত্রের দাবি, এই অ্যাকাউন্টটি আসলে ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের আসল অ্য়াকাউন্ট।

শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বললেও তালিবানের কার্যকলাপ সম্পূর্ণ ভিন্ন বার্তাই দিচ্ছে। গতকালই তালিবানদের তরফে দখল নেওয়া শহরগুলির বর্তমান চিত্র কেমন, তা তুলে ধরা হয়। দেখা যায়, গত ৮ অগস্ট দখল নেওয়া কুন্দুজ শহরের প্রতিটি জায়গায় চেক পয়েন্ট বসানো হয়েছে। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি কর্মীদের খোঁজ চালানো হচ্ছে, দ্রুত কাজে না ফিরলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানানো হয়েছে তাদের।

একাধিক শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে তালিবানরা। পশ্চিম কাবুলে এক প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাড়ি দখল করে নেওয়া হয় ও যাবতীয় গাড়ির চাবিও কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের অন্যান্য প্রান্তগুলি থেকেও খবর মিলছে আমেরিকান ও সরকারের সমর্থকদের খোঁজে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে তালিবানরা।

তালিবানরা মুখে নারী শিক্ষা ও সুরক্ষার কথা বললেও কাবুল দখলের পরই দেখা যায়, বোরখাহীন যাবতীয় মহিলার পোস্টার, ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বা সাদা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে খুন হওয়ার ভয়ে বোরখার দোকানগুলিতেও মহিলাদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাবালিকাদের বিয়ে করার বা যৌনদাসী হওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে, মার্কিন মদতপুষ্ট জেনারেল আব্দুল রাশিদ দস্তুমের বাড়িতেও তালিবানদের হানা দেওয়ার ভিডিয়ো ভািরালস হয়েছে। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বাড়িতে সাজানো তাক থেকে সোনার পানীয়ের পাত্র বের করে নিচ্ছেন তালিবানরা, অপর আরেকটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, গোটা বাড়ি তছনছ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে খাবার ও পানীয় নিয়ে উল্লাস করছে তালিবানীরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, মাজার-ই-শরিফ দখল নেওয়ার আগেই নাকি আফগান সেনা উজ়বেকিস্তানের দিকে ছুট লাগিয়েছিল।

গোটা দেশই তালিবানদের দখলে চলে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে সীমান্ত ও সড়ক পথ। দেশ ছেড়ে পালানোর একমাত্র পথ কাবুলের হামিদ কারজ়াই বিমানবন্দর। তাই গতকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমিয়েছেন আফগানবাসী। পালাতে গিয়ে বিমান থেকে পড়ে ও গুলি চালনার ঘটনায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আরও পড়ুন: কখন আমাকে মারবে, তাদের অপেক্ষায় বসে আছি: আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র