AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পুতিন কি তাহলে প্ল্যান বদলালেন! কী বলছে ক্রেমলিনের রণকৌশল?

সীমান্ত থেকে অনেক দূরে মধ্য ইউক্রেনে রুশ ফৌজের পা পড়া মানে ইউক্রেনের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা যে শেষ হতে চলছে, এমনটাও অনেকে মনে করা শুরু করে দিয়েছেন।

পুতিন কি তাহলে প্ল্যান বদলালেন! কী বলছে ক্রেমলিনের রণকৌশল?
ভ্লাদিমির পুতিন।Image Credit: PTI
| Updated on: Jun 11, 2025 | 12:39 AM
Share

আমেরিকায় যখন অশান্তির আগুন তখন কেমন আছে ইউরোপ। ইউরোপে এখন ফিরে এসেছে আজ থেকে ৮৬ বছর আগের পরিস্থিতি। বিমানঘাঁটি ধ্বংসের বদলা নিতে শুরু করেছেন পুতিন। রুশ মিসাইলে তছনছ হয়ে যাচ্ছে কিয়েভ থেকে খারকিভ। ইউক্রেনের সীমান্ত শহর সুমিতেও ঢুকে পড়েছে রুশ সেনা। তবে, এসবের চেয়ে আরও একটা মারাত্মক ব্যাপার ঘটেছে, যা দেখে ইউরোপের শিরদাঁড়া বেয়ে নামতে শুরু করেছে ঠাণ্ডা স্রোত।

ইউক্রেনের চতুর্থ বৃহত্তম শহর নিপ্রোয় ঢুকে পড়েছে পুতিনের বাহিনী। এর মানে কী! এতদিন দেখা গিয়েছে যে ইউক্রেনের সীমান্ত এলাকায় ডনেত্‍স্ক ও লুহান্সক রিজিয়নে রুশ সেনা ঢুকেছে। বাকি ইউক্রেনে তারা আকাশপথে হামলা চালিয়েছে। পূর্ব ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেনের আর কোথাও রুশ সেনার পা পড়েনি। সেটাই এবার ঘটল। মধ্য ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে ঢুকে পড়ল রাশিয়ান আর্মি।

নিপ্রো এখনও তারা দখল করতে পারেনি। কিন্তু, ক্রেমলিনের রণকৌশল দেখে পশ্চিমী দুনিয়া ভাবতে শুরু করেছে যে পুতিন কি তাহলে প্ল্যান বদলালেন! এবার কি তিনি কিয়েভেও গ্রাউন্ড ইনোভেশনের কথা ভাববেন। সীমান্ত থেকে অনেক দূরে মধ্য ইউক্রেনে রুশ ফৌজের পা পড়া মানে ইউক্রেনের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা যে শেষ হতে চলছে, এমনটাও অনেকে মনে করা শুরু করে দিয়েছেন। এইসব দেখে আর অপেক্ষা করতে রাজি নয় ইউরোপ। এতদিন যা মুখে বলা হচ্ছিল, এবার তা হাতে-কলমে করা শুরু করে দিল তারা।

প্রথমে পোল্যান্ড। রাশিয়ার পশ্চিম সীমান্ত ছাড়িয়ে সোজা এগোলে সরলরেখা বরাবর প্রথমে ইউক্রেন। তারপরেই পোল্যান্ড। ন্যাটোর সদস্য এই দেশটা দীর্ঘদিন ধরেই পুতিনের নিশানায়। পোল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধু দেশ বেলুরুশের সীমান্ত রয়েছে। বেলারুশে আবার পুতিন তাঁর পরমাণু অস্ত্রের একাংশ পাঠিয়ে দিয়েছেন। ইউক্রেনের সঙ্গেও পোল্যান্ডের সীমান্ত রয়েছে। ফলে, পোলিশদের আশঙ্কা যদি ইউক্রেনের পতন হয় তাহলে ইউক্রেন আর না হলে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে যে কোনও দিন তাঁদের দেশে ঢুকে পড়তে পারে রাশিয়ার সেনা।

তাই, পোল্যান্ডের দক্ষিণপন্থী প্রাইম মিনিস্টার ডোনাল্ড টাস্ক সেনাকে বেলারুশ বর্ডার সিল করার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। আর বায়ুসেনাকে বলে দিয়েছেন দেশের এয়ারস্পেসের ওপর সবসময় নজর রাখতে হবে। ১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়েছিল হিটলারের বাহিনী। আর আজ পোল্যান্ড আশঙ্কা করছে যে পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়বে পুতিনের সেনা।

এরপর জার্মানি। শুরু থেকেই এই দেশটা জেলেনস্কিকে অস্ত্র জুগিয়ে এসেছে। কয়েকদিন আগেই নতুন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ বলেছেন যে তিনি ইউক্রেনকে এবার লং রেঞ্জ মিসাইলও দেবেন। তাই, বার্লিনের আশঙ্কা যে রুশ মিসাইল তাদের দেশে যে কোনওদিন এসে আছড়ে পড়তে পারে। ফলে, এখন থেকেই জার্মানি প্রস্তুতির পালা শুরু করে দিয়েছে। জার্মান প্রশাসন আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কার তৈরি করার কাজে হাত লাগিয়েছে। জার্মানির ফেডেরাল অফিস অব সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড ডিজাস্টার অ্যাসিসট্যান্স জানিয়েছে, তাদের দেশে এখন প্রায় ২ হাজার বাঙ্কার আছে। ৪ লাখ মানুষকে মাটির নীচে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। তবে, এই দিয়ে হবে না। জার্মানি তাই আরও বাঙ্কার তৈরি করছে। টানেল, মেট্রো স্টেশন, বড় বড় বহুতলের বেসমেন্টগুলোকেও বোমা-নিরোধক বাঙ্কারে পরিণত করার কাজ শুরু হয়েছে। সবমিলিয়ে ওই যে বললাম, ইউরোপে এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগের দিনগুলোর পরিস্থিতি। আর যার মানে আসলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা।