Human Egg Farm: জোর করে বার বার ইনজেকশন, ১০০ বন্দিনীকে নিয়ে চরম খেলা…কোনও ক্রমে পালাতে পেরে যা শোনাল ৩ মহিলা
Human Egg Farm: সেই মহিলাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, নানা ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ডিম্বাণু দান করার জন্য রাজি করানো হত। এমনকি এও বলা হত এর জন্য তাঁদের 'সারোগেসি মাদার' বা ওই রকম কোনও চুক্তিও করতে হবে না।

পশু নয়, এ যেন মানুষের খামার, বলা ভাল মহিলাদের খামার। দাস বানিয়ে রেখে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১০০ জন মহিলাকে। যা শুনলেও শিউরে উঠতে হয়। ব্যাঙ্কক পোস্টের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জর্জিয়ার সম্প্রতি পর্দা ফাঁস হয়েছে এক ‘হিউম্যান-এগ হারভেস্টিং র্যাকেট। অর্থাৎ মানব ডিম্বাণু নিয়ে চলত দেদার কালো বাজারি। থাইল্যান্ড ভিত্তিক এক এনজিও’র মাধ্যমে চিনা গ্যাংস্টারদের একটি দল এই র্যাকেট পরিচালনা করত। যা সামনে আসতেই চোখ কপালে উঠেছে গোটা বিশ্বের।
ব্যাঙ্কক পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি কোনও ভাবে ৩ জন মহিলা ওই দুর্বিষহ জায়গা থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
সেই মহিলাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, নানা ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ডিম্বাণু দান করার জন্য রাজি করানো হত। এমনকি এও বলা হত এর জন্য তাঁদের ‘সারোগেসি মাদার’ বা ওই রকম কোনও চুক্তিও করতে হবে না। কেবল নিজের ডিম্বাণু দান করলেই হবে। মোটা অঙ্কের টাকাও দেওয়া হবে বলে লোভ দেখানো হয়।
মুক্তি পাওয়া ৩ মহিলার মধ্যে একজন জানান, একটি বাড়িতে প্রায় ৬০-৭০ জন মহিলাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুসারে সেই সংখ্যাটা প্রায় ১০০ জন।
নির্যাতিতা মহিলাদের একজন জানান, বন্দি করে রাখা মহিলাদের নানা ধরনের ইনজেকশন দেওয়া হয়, এমনকি ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়। তারপর কোনও বিশেষ মেশিনের সাহায্যে তাঁদের শরীর থেকে ডিম্বাণু বার করে নেওয়া হয়। ওই মহিলা জানান, আমরা যে বিজ্ঞাপন দেখে এই কাজে রাজি হই, বিষয়টি মোটেই তেমন ছিল না। বিষয়টি জানতে পেরেই তাঁরা ভয় পেয়ে যায় এবং বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন।
ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, পাভেনা ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন অ্যান্ড উইমেন-এর প্রতিষ্ঠাতা, পাভেনা হংসাকুলার ৩ মহিলার মুক্তির জন্য বিশেষ চেষ্টা চালান। পররাষ্ট্র বিষয়ক পুলিশ ৩০ জানুয়ারি তিন মহিলাকে মুক্ত করতে ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করে।
হংসাকুলা জানান, মোটা অঙ্কের অর্তঝেত বিনিময়ে ওই তিন মহিলার স্বাধীনতা গ্যাংস্টারদের থেকে কিনে নেন তিনি। তথ্য বলছে গত বছরে প্রায় ২৫৭ জন মহিলা পাচারকারীদের কবলে পড়েন। যাদের মধ্যে ১৫২ জনকে উদ্ধার করা হয়। এই বিষয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি লাইভ করে সংস্থা।
সেই লাইভে হংসকুলা জানান, এই সব মহিলাদের কৃত্রিম গর্ভধারণের জন্য, শিশুর জন্ম দেওয়ার জন্য় অনান্য দেশে পাচার করে দেওয়া হয়। এক ঘন্টার সেই লাইভে নিজেদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে নিয়েছেন নির্যাতিতারাও।
তাঁরা জানান, ফেসবুকে একটি চাকরির অফার দেখতে পান। বিজ্ঞাপন অনুসারে ৪০০,০০০ থেকে ৬০০,০০০ ভাট আয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকা। যোগাযোগ করা হলে, মহিলাকে বলা হয়, জর্জিয়ার নিঃসন্তান দম্পতির জন্য সন্তান সুখ দিতে তাঁদের ‘সারোগেট মাদার’ হতে হবে। এরপরেই জর্জিয়া যাওয়ার জন্য সব খরচ, পাসপোর্ট আবেদনের খরচ বহন করে সেই গ্যাংস্টাররই।
জর্জিয়ায় পৌঁছতেই তাঁদের সঙ্গে যা ঘটে তা কোনও সিনেমার থেকে কম নয়। নির্যাতিতারা জানান, মহিলাদেরকে ব্যাটারিচালিত মুরগির মতো রাখা হত। অভিযোগ তাঁদের জোর করে, শরীরে হরমোন ঢুকিয়ে দেওয়া হত। পশুর মতো আচরণ করা হত।
জানা যায় শরীরে, হরমোন ইনজেক্ট করে ডিম্বাশয়কে উদ্দীপিত করা হত যাতে বেশি বেশি করে ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়। মাসে একবার, করে মহিলাদের অজ্ঞান করে তাঁদের শরীর থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হত। ওই মহিলারা জানান, আইভিএফ পদ্ধতির জন্য সম্ভবৎ সেই ডিম্বাণু বাইরে পাচার করা হত।
দ্য ওয়ার্ল্ড এগ অ্যান্ড স্পার্ম ব্যাঙ্কের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা ডায়ানা থমাস সানকে জানান বিশ্ব বাজারে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির মহিলাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে সংগ্রহ করা ডিম্বাণুতে ভরে গিয়েছে। গ্রাহকরা ভাবেন তাঁরা নৈতিকভাবে ডিম্বাণু কিনছেন, বাস্তবে তা নয়। তাঁরাও প্রতারিত হচ্ছেন। গরীব মানুষকে টাকার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়।





