
এই বছরই সাবালক হল আইপিএল। অর্থাৎ ১৮-তে পা দিয়েছিল। আর যেহেতু সংখ্যাটা ১৮ তাই আশা ছিল ১৮ নম্বর জার্সিধারীই হয়তো এই বছর কাপ নিয়ে যাবে ঘরে। আর হলও তাই। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান শেষে ২০২৫ সালেই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে পঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারিয়ে প্রথমবার ট্রফি জয়ের স্বাদ পেল বিরাট কোহলির দল। তবে, শুধু মাঠের সাফল্যই নয়, এই জয়ের ফলে আর্থিক দিকেও বিপুল সাফল্য পেয়েছে আরসিবি। হিসাব করা হচ্ছে এই সাফল্যের অঙ্কটা প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
রজত পাতিদারের নেতৃত্বে ও কিং কোহলির ব্যাট ও লিডারশিপের উপর নির্ভর করে এবারের আইপিএলে প্রথম থেকেই দারুণ পারফর্ম করেছে বেঙ্গালুরু। আর চ্যাম্পিয়ন হতেই তাদের হাতে ট্রফির পাশাপাশি আর্থিক পুরস্কার হিসাবে ২০ কোটি টাকা অর্থমূল্যের একটি চেকও তুলে দেয় ভারতীয় বোর্ড।
কোটি কোটি টাকার আর্থিক লাভ
এই জয় শুধুমাত্র মাঠের সাফল্য দিয়ে বিচার করলে হবে না। আরসিবির কাছে এই জয় একটা অর্থনৈতিক সাফল্যও বটে। এই বছরে তাদের মোট আয় ১০০ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মিডিয়া রাইটস শেয়ার: ব্রডকাস্ট ও ডিজিটাল রাইটস থেকে যা আয় হয় তা থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে একটা অংশ দেয় ভারতীয় বোর্ড। এ বছরে এই পরিমাণ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা।
স্পনসরশিপ: কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে তিন বছরের জন্য মোট ৭৫ কোটি টাকার চুক্তি করেছে বেঙ্গালুরু। যা আইপিএলের স্পনসরশিপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় চুক্তি। এ ছাড়াও পুমা, জিও, হ্যাপিলো প্রভৃতি বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করে আরসিবি স্পনসরশিপ থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছে।
টিকিট ও মার্চেন্ডাইজ বিক্রি: বেঙ্গালুরুর হোম ম্যাচের টিকিট বিক্রি এবং জার্সি-সহ নানা সামগ্রী বিক্রি থেকেও মোটা অঙ্কের আয় করেছে বিরাটের টিম।
বেড়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ড ভ্যালু
২০২৪ সালে আরসিবির ব্র্যান্ড ভ্যালু ছিল ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যা ২০২৩ সালের ব্র্যান্ড ভ্যালুর তুলনায় প্রায় ৬৯ শতাংশের বেশি লাফ। আর এবারে ট্রফি জয়ের পর সেই ব্র্যান্ড ভ্যালু চড়চড়িয়ে বাড়বে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আগামীতে কী?
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর এই জয় শুধুমাত্র অতীতের ব্যর্থতাকে মুছিয়ে দিয়েছে এমন নয়। এই জয় আগামীর পথকে আরও মসৃণ করে দিয়েছে তাদের জন্য। মাঠে সাফল্য, ব্র্যান্ডিং, অর্থনৈতিক সাফল্য ও দলকে ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস—সব মিলিয়ে আরসিবি এখন আইপিএলের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি।
আইপিএল জেতার পর গোটা রাজ্যে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে – “ই সালা কাপ নামদু”। আর তার সঙ্গে সঙ্গে এটাও স্পষ্ট যে বিরাটের দল শুধু চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এমন নয়। তারা হয়তো সত্যিই লিখে ফেলেছে নতুন এক ইতিহাস।