LPG cylinder expiry date: রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের ‘এক্সপায়ারি ডেট’টা দেখে নিয়েছেন তো? না হলেই ঘটতে পারে বিস্ফোরণ
আপনি কি জানেন, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারেরও মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থাকে। তারপর সেটি ব্যবহার করলে কিন্তু ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ। বস্তুত, রান্নাঘরে আগুন লাগার এটাই সবথেকে বড় কারণ। কীভাবে জানবেন সিলিন্ডারের মেয়াদ ফুরিয়েছে কি না?
কলকাতা: বাড়ির রান্না বা বাণিজ্যিক প্রয়োজনে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধি নির্দিষ্ট সময়ে সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়ে যান। কখনও কি মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন যে, ওই এলপিজি সিলিন্ডারের গায়ে কিছু বিশেষ অক্ষর ও সংখ্যা লেখা আছে? আপনার পরিবারের নিরাপত্তার রহস্য কিন্তু লুকিয়ে থাকে কিন্তু ওই সংখ্যাগুলির মধ্যেই। কাজেই সেগুলিকে কখনই উপেক্ষা করা উচিত নয়। কী অর্থ ওই সংখ্যাগুলির? আসুন জেনে নেওয়া যাক –
যেমন ওষুধপত্র বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে, সেরকম রান্নাঘরে প্রতিদিন ব্যবহৃত গ্যাসের সিলিন্ডারেরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। মেয়াদ ফুরোনো ওষুধ বা অন্যান্য পণ্যের মতো, মেয়াদ শেষ হওয়া সিলিন্ডার ব্যবহার করাও অত্যন্ত বিপজ্জনক। দমকল বিভাগের আধিকারিকদের মতে, রান্নাঘরে আগুন লাগার অন্যতম বড় কারণ হল মেয়াদ উত্তীর্ণ এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবহার। এই কারণেই নিরাপত্তার খাতিরে এলপিজি সিলিন্ডারের গায়ে এক্সপায়ারি ডেট বা মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার শেষ তারিখ লেখা থাকে।
সমস্ত এলপিজি সিলিন্ডার তৈরি হয় এক বিশেষ ধরনের ইস্পাত এবং প্রতিরক্ষামূলক আবরণ দিয়ে। এলপিজি সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার অর্থ, সিলিন্ডারগুলি অত্যন্ত পুরনো হয়ে যায়। প্রতিরক্ষামূলক আবরণটি কমজোরি হয়ে পড়ে। সিলিন্ডারের মধ্যে চাপ দিয়ে গ্যাসকে তরল অবস্থায় রাখা হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডারগুলি গ্যাসের ওই চাপ সহ্য করতে পারে না। এরপর তাপ অর্থাৎ আগুনের কাছাকাছি এলে সেই চাপ আরও বেড়ে যায়, এবং পরিণতি ওই সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ।
এই কারণেই সময় সময় এলপিজি সিলিন্ডারগুলি পরীক্ষা করতে হয়। পরীক্ষা করে সিলিন্ডারগুলিতে নতুন রঙ করা হয় এবং সেগুলির গায়ে অক্ষর এবং সংখ্যা মিলিয়ে একটি কোড লিখে দেওয়া হয়। ওই কোডটিই হল সিলিন্ডারের এক্সপায়ারি ডেট বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ। এই ক্ষেত্রে ওই তারিখটি হল সংশ্লিষ্ট সিলিন্ডারটিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পরবর্তী তারিখ।
এবার জেনে নেওয়া যাক, ওই কোড দেখে কীভাবে বোঝা যাবে সিলিন্ডারটি ব্যবহারের যোগ্য, না মেয়াদ উত্তীর্ণ। এলপিজি সিলিন্ডারের গায়ে লেখা কোডে সাধাণত চারটি ইংরাজি অক্ষর দেখা যায়, A, B, C এবং D, তার সঙ্গে থাকে একটি দুই অঙ্কের সংখ্যা। এই চারটি অক্ষর বছরের চার ত্রৈমাসিককে বোঝায়। আর থাকে দুই অঙ্কের একটি সংখ্যা। সেটি বছরের প্রতিনিধিত্ব করে।
অর্থাৎ, সিলিন্ডারের গায়ে যদি লেখা থাকে A.22, তাহলে থাকলে বুঝতে হবে ২০২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে সিলিন্ডারটিকে। একই ভাবে যদি আপনার সিলিন্ডারে B.24 লেখা থাকে, তার অর্থ হল, সিলিন্ডারটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ হল ২০২৪ সালের জুন মাসের শেষ দিন। যদি লেখা থাকে C.26, তাহলে সেই সিলিন্ডারটি ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ।
এরপর থেকে বাড়িতে সিলিন্ডার এলে প্রথমেই দেখে নিন সেটির এক্সপায়ারি ডেট। যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে সেটি নিতে অস্বীকার করা উচিত। না হলে, ঘটে যাবে বড় বিপদ।